Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
detoxing

মোবাইলের দুনিয়ায় বুঁদ প্রিয় কেউ? এই সব উপায়ে সরান নেশা

সহজ ক’টা উপায় অবলম্বন করলে বাড়িতেও ডি টক্সিংয়ের প্রাথমিক ধাপগুলো শুরু করতেই পারেন।

মোবাইলের নেশা কেড়ে নিচ্ছে ব্যক্তিগত সময় ও অবসর। ছবি: আইস্টক।

মোবাইলের নেশা কেড়ে নিচ্ছে ব্যক্তিগত সময় ও অবসর। ছবি: আইস্টক।

সুজাতা মুখোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৯ ১৫:২৭
Share: Save:

অফিসের কাজ, আড্ডা, পড়াশোনা, রাস্তা চেনা, খবরের কাগজ পড়া, সবকিছুর সহায় তালুবন্দি ফোনটি৷ প্রয়োজনের হাত ধরে নেশার রাস্তাও তৈরি হয়ে গিয়েছে। তাই রাতে ঘুমের সময়ও খোলা থাকে হোয়াটস অ্যাপ, মেল৷ ঘুম কমে যায়৷ টান পড়ে ব্যক্তিগত সম্পর্কে৷ মানসিক চাপ বাড়ে৷ ঘুম ভাঙলে প্রথম হাত যায় মোবাইলে।

মোবাইলের এই নেশার কবলে পড়তে বয়স একেবারেই বাধা নয়। শিশু বা বাড়ির সবচেয়ে প্রৌঢ় সদস্য, সহজেই মোবাইলসর্বস্ব হয়ে উঠছেন। পড়াশোনা যেমন শিকেয় উঠছে, তেমনই আবার কমছে কাজের গতি। মোবাইলে বুঁদ দুনিয়ায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে মুখোমুখি আলাপ, আড্ডার অবসর। আবার এই অমোঘ নেশার দুনিয়ায় যাঁর টেকনোলজি ফোবিয়া আছে, তিনি এত কিছুর সঙ্গে মানিয়ে চলতে পারছেন না বলে তাঁর স্ট্রেস ও উদ্বেগ বাড়ছে৷ কাছের সম্পর্কে কখনও তার আঁচ এসে পড়ে৷ কখনও সেই চাপ এত বেশি হয়ে পড়ছে যে বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে ডি টক্সিংয়ের প্রয়োজন হয়৷

তবে ডি টক্সিং মাত্রই তা যে চিকিৎসকের ক্লিনিকে বা হাসপাতালে উপস্থিত থেকে করাতে হবে এমন নয়। বরং মনোবিদ অমিতাভ মুখোপাধ্যায়ের মতে, প্রথম প্রথম বাড়িতেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে শুরু করা যেতে পারে এই কাজ। খুব সহজ ক’টা উপায় অবলম্বন করলে বাড়িতেও ডি টক্সিংয়ের প্রাথমিক ধাপগুলো শুরু করতেই পারেন।

আরও পড়ুন: সেলুনে মাসাজ করাতে গিয়ে ঘাড় ফাটান? সাবধান, মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে

ডি টক্সিংয়ের উপায়

টেকনোলজির জন্য যদি স্ট্রেস বাড়ে, অশান্তি শুরু হয়, বুঝতে হবে আপনি ব্যাপারটা সামলাতে পারছেন না৷ তখন কাজের ও ব্যক্তিগত সময়কে আলাদা করে নিন৷ বন্ধু ও সহকর্মীদের জানান যে একটা সময়ের পর আর আপনাকে ফোনে, মেলে বা চ্যাটে ধরা যাবে না৷ সব যোগাযোগ ছিন্ন করতে অসুবিধে হলে আলাদা ফোন রাখুন, জরুরি দরকারে যেখানে যোগাযোগ করা যাবে৷ অবসর সময়ে মেল বা টেক্সট পুরোপুরি এড়ানো সম্ভব না হলে চেষ্টা করুন নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে চেক করতে৷

ই-বুকের পাশাপাশি বই পড়ার অভ্যাস বজায় রাখুন। ছবি: আইস্টক।

গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা সামনাসামনি করার চেষ্টা করুন৷ কম সময়ে, ভুল বোঝাবুঝি এড়িয়ে সমাধানে পৌঁছতে পারবেন৷ ব্যক্তিগত সম্পর্কের ক্ষেত্রেও টেক্সটিং বা মেলের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল সামনে বসে কথা বলা৷ এতে স্ট্রেস অনেক কম থাকে৷ তাই খুব দরকার না পড়লে টেক্সট বা হোয়াটসঅ্যাপ ছেড়ে ফোনে কথা বলুন বা সামনাসামনি দেখা করুন। ডিজিটাল স্ট্রেসের সবচেয়ে বড় কারণ টেকনোলজি ফোবিয়া৷ সবাই শিখে নিল আর আপনি পিছিয়ে রইলেন এই দুঃখ থেকে চাপের জন্ম৷ টেকনোলজি ফোবিয়া কাটাতে চাইলে প্রথমে বুঝে নিন, যে ব্যাপারগুলো কঠিন কিছু নয়৷ চাইলেই শিখতে পারবেন৷ কিন্তু কতটুকু চাইবেন বা আদৌ চাইবেন কি না সেটা আপনার ব্যাপার৷ কাজের বা আনন্দের জন্য যতটুকু দরকার, ততটুকু শেখাই যথেষ্ট৷ ট্রেন্ডি হওয়ার লোভে এর চেয়ে বেশি কিছু করলে স্ট্রেসই বাড়বে কেবল৷

আরও পড়ুন: হাড়ের অসুখ ঠেকাতে এখন থেকেই পাতে রাখুন এ সব খাবার​

বাঁচুন বাস্তব পৃথিবীতে

পরিবার ও নিজের জন্য রাখা সময়ে যেন টান না পড়ে৷ একঘণ্টা, দু’ ঘণ্টা, যতটুকু সময়ই রাখছেন তা যেন যথাসম্ভব কম্পিউটার বা মোবাইল ফ্রি থাকে৷ নেটে পড়াশোনা করার পাশাপাশি বই পড়াও বজায় রাখুন৷ বিছানায় যাওয়ার অন্তত দু’–এক ঘণ্টা আগে থেকে নেট, মোবাইল সব বন্ধ করে দিন৷ অনিদ্রার প্রকোপ কমবে৷ সপ্তাহে অন্তত এক বেলা টেকনোলজিকে যথাসম্ভব বর্জন করে যা করতে মন চায়, তাই করুন৷ কানে আইপডের তার না গুঁজে শুনুন পাখির ডাক৷

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy