হাত-পা ঝিনঝিন করছে, চলতে পারছেন না, এমন উপসর্গ নিয়ে রোগী আসেন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই। ছবি: শাটারস্টক।
কাজের ফাঁকে ক’টা দিন বেড়িয়ে আসার পরিকল্পনা অনেকেরই থাকে। ছুটিছাটা মিললেও বেড়াতে যাওয়ার ইচ্ছা আর গিয়ে উঠতে পারার মাঝে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায় ব্যথাবেদনা। টিকিট কাটা, হোটেল বুকিং সব সহজে মিটলেও হাঁটুর ব্যথা বা কোমরে ব্যথা অনেক সময়ই পছন্দের জায়গায় যেতে বাধা দেয়। কাটছাঁট করতে হয় প্রিয় জায়গায় বেড়ানোর পরিকল্পনাও।
তবে পেন ম্যানেজমেন্টের চিকিৎসকদের মতে কিন্তু ব্যথার সঙ্গে বেড়াতে যাওয়ার খুব একটা শত্রুতা নেই। পাহাড়ি সর্পিল পথ হোক বা সমুদ্রের তুমুল তুফান— ঠিকঠাক নিয়ম মানলে ব্যথা বাধা হবে না কোনও কিছুতে।
অবশ্য বেড়ানোর দিন পনেরো আগে থেকে সব সামলাতে শুরু করলে কিন্তু সমস্যা এড়ানো যাবে না। বরং বেড়ানোর পরিকল্পনা থাকলে তার সারা বছরই মেনে চলুন কিছু বিশেষ নিয়ম।
আরও পড়ুন: হঠাৎই মোটা হয়ে যাচ্ছেন? রাশ টানুন অসুখের সময় এই অভ্যাসের দিকে
হাঁটুর ব্যথা
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সৌম্য রায়ের মতে, সারা ক্ষণ শরীরের ভার বহন করতে করতে হাঁটুরাই সকলের আগে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। জটিল কোনও ক্রনিক কোনও অসুখ না থাকলে সাধারণ আরথ্রাইটিসের সমস্যা নিয়েও বেড়াতে যাওয়া যেতেই পারে। সে ক্ষেত্রে কোনও কোনও জটিল রাস্তা একটু এড়িয়ে চলতে হয় বা কখনও নি-ক্যাপ, বেল্টের মতো জিনিস দিয়েও সে সব সমস্যাকে অনেকটা কব্জা করে ফেলা যায়।
কোমরের পেশির জোর বাড়াতে ব্যায়াম করুন নিয়ম মেনে।
সাধারণ কোনও অসুখ ছাড়াও ভুল ভঙ্গিতে হাঁটা, ভুল জুতো পরা এ সব থেকেও সমস্যা তৈরি হতে পারে। অনেকেই শরীরচর্চায় ফাঁক রাখেন। সেখান থেকেও হাঁটুতে ব্যথা ঝাপট মারতে পারে।
কোমরে ব্যথা
লাম্বার কক্সিসের গঠনে সমস্যা, সায়াটিকার ব্যথা বা কোমরে অন্য কোনও ক্রনিক অসুখ থাকলে ব্যথা থাকবে এ খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু কিছু ব্যথা আমরাও ডেকে আনি। সারা ক্ষণ নরম গদির চেয়ারে বসা, মেরুদণ্ড সোজা না রেখে বেঁকেচুরে বসা, আধ শোয়া হয়ে ল্যাপটপে কাজ বা বই পড়া সবই কিন্তু কোমরের ব্যথা ডেকে আনে।
আরও পড়ুন: নীরব ঘাতক গ্লকোমা
কী করণীয়?
প্রথমেই অভ্যাসগত কারণে হাঁটুর ব্যথা রুখতে প্রতি দিন নিয়ম করে মিনিট দশেক কোয়াড্রিসেপস ব্যায়াম শুরু করুন। স্কোয়াট, পুশ আপ, হাই নি জগিং, ঘাম ঝরিয়ে দ্রুত গতিতে হাঁটা এ সবও হাঁটুকে মজবুত করে। পেশি সবল হলে ব্যথা অনেকটাই আয়ত্ত্বে চলে আসে। কোমরে ব্যথার জন্য কিছু হিপ এক্সারসাইজ, নিয়মিত ওঠবোস, ওজন কমানোর জন্য প্লাঙ্ক, ক্রাঞ্চ এগুলি অবশ্যই প্রয়োজন। যাঁদের ক্রনিক কোনও অসুখের জন্য হাঁটু বা কোমরে ব্যথা আছে তাঁরা অবশ্যই চিকিৎসকরে পরামর্শ মেনে ব্যায়াম করবেন ও ওষুধ খাবেন।
বেড়াতে যাওয়ার আগেও এত বার চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও ব্যথা রোখার সরঞ্জাম সঙ্গে রাখুন। চটি নয়, বেড়াতে গেলে নরম সোলের কিটো বা স্নিকার্সে ভরসা রাখুন। বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি ডক্টর’স শু-ও পরা যেতে পারে। তবে নিজের ইচ্ছে মতো নয়, সেই জুতোও কিনুন চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে। হোটেলে তাকার সময় যে জুতো পরবেন তাতে যেন গ্রিপ থাকে।
বেড়াতে যাওয়ার জুতো হিসেবে প্রথম পছন্দ হোক স্নিকার্স।
প্যারাসিটামল সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে। কোনও কারণে ব্যথা বাড়লে কাজে আসবে। ট্রেনে করে গেলে লোয়ার বার্থ বুকিং করবেন। দরকারে স্টেশন থেকে বেরনো বা প্রবেশের জন্য আগে থেকে হুইল চেয়ার বুকিং করে রাখুন। পাহাড়ে বেড়াতে যান, তবে ঝুঁকি নিয়ে ট্রেকিং করতে যাবেন না। বেশির ভাগ পথ গাড়িতে যান, একান্তই সে উপায় না থাকলে ডুলি, ঘোড়া এ সব নিতে পারেন। হেঁটে যেতে চাইলে নি ক্যাপ, বেল্ট ব্যবহার করে ধীরে ধীরে হাঁটুন। হাতে সাপোর্টও রাখতে পারেন। তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন নি ক্যাপ, বেল্ট স্ট্র্যাপ লাগানো হয় ও খুব টাইট না হয়। সমুদ্রে নামতে পারেন। তবে অশান্ত সমুদ্রে না নামাই ভাল, ঢেউ এর ধাক্কায় পড়ে গেলে বিপদ ঘটতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy