এই ডায়েটে চোখে পড়ার মতো ওজন কমবে কোনও অসুস্থতা ছাড়াই। ছবি: শাটারস্টক।
এক মাসে ৫–৭ কেজি ওজন কমাতে চান, তাও আবার ব্যায়াম না করে? তা হলে ‘হোল থার্টি ডায়েট’-এ ভরসা রাখুন। ওজন তো কমবেই, আর এই ওজন কমানোর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে গিয়ে পেটের গোলমালও হবে না। এনার্জি পাবেন, ঘুম হবে, ফিরে আসবে ত্বকের ঔজ্জ্বল্য৷
তবে হ্যাঁ, এই ডায়েট করলে কিন্তু অন্তত এক মাস দাঁড়ি টানতে হবে ভুলভাল খাওয়ার অভ্যাসে। সবাই নরম পানীয় বা অ্যালকোহলের বদভ্যাসে ডুব দিলেও, আপনাকে থেমে থাকতে হবে শুধুই লেবু–জলে। সবাই চিকেন–মাটন খেলেও আপনাকে স্যালাড ও ফ্যাট ছাড়া খাবারে৷ পুজোর পর বোড়ে যাওয়া ওজন দ্রুত ছেঁটে ফেলতে এক মাস ভরসা রাখুন হোল ফুড ডায়েটে। পুষ্টিবিদ সুমেধা সিংহ বাতলালেন এই ডায়েটের খুঁটিনাটি।
কী খাবেন, কী নয়
এই ডায়েটে এমন খাবার বাদ দিতে হয়, যাদের কোনও ক্ষতিকর প্রভাব শরীরে সামান্য থাকলেও থাকতে পারে৷ যেমন দুধ ও দুধে বানানো খাবার অনেককেই ক্লান্ত করে, গমে–বার্লিতে থাকা গ্লুটেনে পেটের গোলমাল হয় কার, চিজ কারও মাইগ্রেনের ট্রিগার ফ্যাক্টর, সয়াবিন নাক দিয়ে জল পড়ার কারণ ইত্যাদি৷ প্রথম এক মাস এই সব খাবার বাদ দিয়ে তার পর একটা যোগ করে কিছু দিন দেখা হয়, কোনও অসুবিধা হচ্ছে কি না৷ হলে বাদ দিয়ে অন্য আর একটা ঢুকিয়ে কিছু দিন দেখা হয়৷ অসুবিধা না হলে তার পাশাপাশি আর একটা এসে ঢোকে৷ এ ভাবে ধীরে ধীরে ছোট হয় বাতিলের তালিকা৷
আরও পড়ুন: হাঁটু-কোমরে ব্যথা নিয়েও চুটিয়ে বেড়ানো সম্ভব, যদি মেনে চলেন এ সব
বাতিল খাবার
চিজ, দুধ, ইয়োগার্ট, দুধের সর ও ক্রিম চাল, গম, ভুট্টা, কুইনোয়া, রাই, মিলেট, বাকহুইট, বুলগার বা কল বেরনো ছোলা–মুগ মদ তো নয়ই, যে সব খাবারে মদের ছিটেফোঁটা আছে, তাও চলবে না সব ধরনের বিনস, সয়াবিন, মটরশুঁটি, মুসুর ডাল, চিনেবাদাম চিনি, সুগার ফ্রি, ম্যাপ্ল সিরাপ, স্টেভিয়া প্রক্রিয়াজাত খাবার, বিশেষ করে যাতে এমএসজি, সালফাইটস ইত্যাদি আছে তাও চলবে না। বেকড খাবার, জাঙ্ক ফুড, এমনকি ফুলকপি দিয়ে পিৎজার ক্রাস্ট বা ডিম–কলা দিয়ে প্যানকেকও নয়৷
এই ডায়েটে এনার্জি পাবেন, ঘুম হবে, ফিরে আসবে ত্বকের ঔজ্জ্বল্য৷
আলু-সমেত সব রকম সবজি, যত ইচ্ছে ফল মাপ মতো, কারণ সুগার খুব বেশি বাড়ানো যাবে না প্রসেস না করা মাংস খাওয়া যায় মাঝেমধ্যে, তবে তাতে যেন চিনি বা সংরক্ষক না থাকে সব রকম সামুদ্রিক মাছ ও ডিম চিনেবাদাম ছাড়া অন্য সব রকম বাদাম ও বীজ অলিভ অয়েল, নারকেল তেল, ঘি চিনি ছাড়া কালো চা বা কফি, আমন্ডের দুধ মেশাতে পারেন ফল ও সব্জির রস, ডাবের জল, শশা–কমলা–লেবু বা বেরি ডোবানো জল৷
খিদে ও লোভ সামলানোর রাস্তা
পুষ্টিবিদদের মতে, তিন সপ্তাহের মধ্যে নতুন অভ্যাস অনেকটা তৈরি হয়ে যাবে, যদিও অভ্যাস পুরোপুরি বদলাতে ৬৬ দিনের মতো লাগে, তবু তিন সপ্তাহে শরীর–মন–এনার্জি ও ওজনের উপর এত ভাল প্রভাব পড়ে, অব্যর্থ ভাবে ওজন কমতে শুরু করে যে বাকি ক’টা দিন এই ডায়েট টানা যায়৷ ইচ্ছে হলে ৩০ দিন, ইচ্ছে হলে ৬৬ দিন৷ ওজন যে কমছে তা শরীরই জানিয়ে দেবে৷ তবে অপ্রস্তুত অবস্থায় হুট করে শুরু করবেন না৷ প্রস্তুতি নিয়ে তবে কাজে নামুন৷ এক-দু’ মাস পর থেকে পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে বাতিলের তালিকা ছোট করুন। বাতিলের তালিকা বড় করার সময় থেকে শুরু করুন ব্যায়াম। ফলে খাবার যোগ হলেও ওজন বাড়বে না।
আরও পড়ুন: হঠাৎই মোটা হয়ে যাচ্ছেন? রাশ টানুন অসুখের সময় এই অভ্যাসের দিকে
এই ডায়েট মানলে এক মাসেই তফাত বুঝবেন চেহারায়।
ডায়েটের প্রস্তুতি
ঘরে কোনও ভুলভাল খাবার রাখবেন না৷ কবে কী খাবেন, তার পরিকল্পনা করে রাখুন৷ অন্তত দিন তিনেকের। কোনও দিন রান্না করতে ভাল না লাগলে কী খাবেন, তাও ঠিক করে রাখুন৷ খাবার একটু বেশি করে বানান, যাতে রোজ রোজ ঝামেলা করতে না হয়৷ মদ একেবারেই বাদ৷ কাজেই পানীয় হিসাবে চিনি ছাড়া ব্ল্যাক কফি নিন৷ প্যাকেটের খাবার কেনার আগে তাতে কী মেশানো আছে ভাল করে পড়ে নিন৷ ধীরে ধীরে খান৷ মন দিয়ে৷ যাকে বলে মাইন্ডফুল ইটিং৷ এতে খাবারের স্বাদ যেমন পাবেন, কম খাবারে পেট ভরে যাবে৷
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy