প্রতীকী ছবি।
এই দেশের খাদ্যরসিকদের জন্য নিঃসন্দেহে সব থেকে প্রিয় পদের মধ্যে অন্যতম হল বিরিয়ানি। যে কোনও দিনকে উৎসবের দিন বানানোর জন্য বিরিয়ানির থেকে ভাল পদ খুব একটা কেউ খোঁজেন না। দেশ জুড়ে বিরিয়ানি বিভিন্ন ভাবে বানানো হয়। এক এক জায়গার এক এক রকম বৈশিষ্ট্য সেই রান্নার মধ্যে ছাপ ফেলে।
তেমনই পাঁচ ধরনের বিরিয়ানির কথা বলা রইল। দেশের এক-এক প্রান্তে এক-এক ভাবে রান্না করা হয় সকলের পছন্দের এই পদ।
মোগলাই বিরিয়ানি
মুগলদের সঙ্গে যেই ঐতিহ্য বা শিল্প বা ইতিহাস আমাদের দেশে এসেছিল, তার একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে রান্না। ভারতের খাওয়াদাওয়ার মানচিত্রে একটি সুবিশাল জায়গা জুড়ে থাকা এই মোগলাই রান্নার কোহিনূর হচ্ছে বিরিয়ানি। মুগলরা যদি এই দেশে না আসত, তা হলেও হয়তো বিরিয়ানি এই দেশে কোনও না কোনও ভাবে ঠিক পাওয়া যেত। কিন্তু এই পরম বন্ধুর মতো সম্পর্কটি তৈরি হত কি? বাদশাহি আমল থেকে যে পদের রমরমা, সেই পদ বানিয়ে সামনে এনে রাখলে আপনিও যে সম্রাট আকবরের থেকে নিজেকে কোনও অংশে কম মনে করবেন না, এ কথা বলাই বাহুল্য।
মতি বিরিয়ানি
শাহ জাহান তাঁর স্থাপত্যকর্ম নিয়ে যা করে গিয়েছেন, নবাব ওয়াজিদ আলি শাহ তা করেছেন বিরিয়ানি নিয়ে। সেই একই জাঁকজমক, সেই বিশালত্বের ছোঁয়া, সেই আড়ম্বর। নইলে কেউ বিরিয়ানির মধ্যেও মতির উত্স খোঁজে? রুপো বা সোনার মোড়কে ঢাকা মুক্তোর মতো দেখতে ডিমের টুকরো দিয়ে স্টাফ করা হয় মাংসকে। তার পর সেই স্টাফ করা মাংস দিয়ে তৈরি হয় এই বিরিয়ানি, যার রাজকীয় আমেজটাই এই পদকে অতুলনীয় করে তুলতে পারে।
কলকাতার বিরিয়ানি
কলকাতার সঙ্গে বিরিয়ানির প্রেমকাহিনী কারও অজানা নয়। ওয়াজিদ আলি শাহ কলকাতায় নির্বাসিত হয়ে আসার পর এই আশীর্বাদ শহরকে দিয়ে গিয়েছেন। বিরিয়ানির মধ্যে আলুর সংযোজন যে কোনও খাদ্য রসিকের কাছে ঐতিহাসিক ঘটনার থেকে কম নয়। কলকাতা শহরের সঙ্গে বিরিয়ানির এই প্রেমালাপকে ব্যক্ত করার জন্য কোনও বিশেষণই যথেষ্ট নয়। অন্য সব মশলা এক রেখে, শুধুমাত্র একটি আলুর সংযোজন এই কলকাতার বিরিয়ানিতে একটি আলাদা বৈশিষ্ট এনে দিয়েছে।
হায়দরাবাদি বিরিয়ানি
আর একটি যে শহরের সঙ্গে বিরিয়ানি খুব সহজেই প্রতিশব্দ হিসেবে বসে যেত পারে, সেটি হল হায়দরাবাদ। নিজামদের ছোঁয়া যে শহর এখনও সগৌরবে বিরাজমান, সেখানে খাওয়ার মধ্যেও সেই অদ্ভুত মখমলের মতো নবাবী আমেজটা থাকা অত্যন্ত স্বাভাবিক। দুধ ব্যবহার করে তৈরি করা এই ধরনের বিরিয়ানি তাই একটি অন্য জায়গা করে নিয়েছে খাদ্য রসিকদের মনে। মাংসের টুকরোগুলি প্রথমে দুধে রান্না করা হয়, তার পর যাবতীয় মশলা মিশিয়ে একটি পাত্রে দম দিয়ে এই বিরিয়ানি বানানো হয়।
মিন বিরিয়ানি
যে কোনও জায়গার নিজস্ব বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া বিরিয়ানির একটি সহজাত প্রতিভা। কেরলের একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় পদ হচ্ছে মিন বিরিয়ানি। কিন্তু এখানে চিকেন বা মটন নয়, মূলত মশলা মাখানো মাছের টুকরোই ব্যবহার করা হয়। উত্তর ভারতের বিরিয়ানির স্বাদের থেকে অনেকটা আলাদা হলেও, বিরিয়ানির নিজস্বতার স্খলন হয় না এখানে। বরং একটি অন্য ধরনের দক্ষিণী রাজকীয় আমেজের ছাপ এখানে সুস্পষ্ট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy