Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

কানে ব্যথার দাওয়াই

বিভিন্ন কারণেই কিন্তু কানে ব্যথা হতে পারে। ব্যথার কারণ জেনে নিয়ে তবেই চিকিৎসা শুরু করতে হবে। রইল কিছু পরামর্শ বিভিন্ন কারণেই কিন্তু কানে ব্যথা হতে পারে। ব্যথার কারণ জেনে নিয়ে তবেই চিকিৎসা শুরু করতে হবে। রইল কিছু পরামর্শ

শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৯ ০০:১২
Share: Save:

কানে ব্যথা, কান ভারী লাগা বা কানের সমস্যার পিছনে লুকিয়ে থাকতে পারে কানের ইনফেকশন। শুধু মাত্র শীতকালে ঠান্ডা লেগেই কিন্তু কানে ইনফেকশন হয় না। সারা বছরেই কানে ইনফেকশন হতে পারে। তবে কেন এই ইনফেকশন হয় এবং কী ভাবে তা রোধ করা সম্ভব, তা আগে জেনে রাখা ভাল।

কানের ইনফেকশন কেন হয়?

সাধারণত কানের বাইরের দিকে বা মিড্‌ল ইয়ারেই ইনফেকশন হয়ে থাকে। ইএনটি ডাক্তার অর্জুন দাশগুপ্ত বললেন, ‘‘ঠান্ডা লাগলে নাকের সর্দিটা কানের দিকে চলে গিয়ে ইনফেকশন বাধায়। বড় থেকে বাচ্চা সকলেরই কানের ইনফেকশন হতে পারে। এখন শরীর সুস্থ রাখতে অধিকাংশ লোকই সাঁতার কাটে। তার পরে কান পরিষ্কার করতে ইয়ার বাড ব্যবহার করে। ফলে খুব সহজেই কানে ব্যাকটিরিয়া প্রবেশ করে ও ইনফেকশন হতে পারে। এক্সটার্নাল ইয়ারে তখন ফাঙ্গাল ইনফেকশন হওয়াটা খুব স্বাভাবিক।’’ অনেকেরই স্বভাব থাকে কটন বাড দিয়ে সারাক্ষণ কান পরিষ্কার করার। সেটা আরও বিপজ্জনক। মনে রাখতে হবে, সেগুলো হল কটন বাড। ইয়ার বাড নয়। প্রত্যেকের কানেই একটা ওয়্যাক্সের স্তর থাকে, যা কানের অন্দরমহলকে বাইরের ধুলোবালি থেকে রক্ষা করে। কিন্তু ঘনঘন কটন বাড দিয়ে কান খোঁচালে সেই স্তর নষ্ট হয়ে যায়। আর তার সঙ্গে যাঁরা সাঁতার কাটেন, তাঁদের ইনফেকশন হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। কারণ সুইমিং পুলের জলে একাধিক মানুষ সাঁতার কাটেন। সেই জলে ইনফেকশনের ভয় থেকেই যায়।

এ ছাড়াও খুব ঠান্ডা লেগে আপার রেসপিরেটরি ট্র্যাকে ইনফেকশন হলে তা পৌঁছে যেতে পারে কানে। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

ব্যথা হলে কী করবেন?

বাচ্চাদের কানে ইনফেকশন খুব স্বাভাবিক। বাচ্চাদের কানে ব্যথা হলে তারা কানে হাতই দিতে দেয় না। সে ক্ষেত্রে কী করা যেতে পারে? বাচ্চার কানে বেশি হাত না দেওয়াই ভাল। টর্চ দিয়ে ভিতরে কী হয়েছে তা কান টেনে দেখার চেষ্টা করলে বাচ্চার আরও ব্যথা বাড়তে পারে। বরং অল্প অল্প করে সেঁক দেওয়া যেতে পারে। গরম তেল জাতীয় কোনও কিছু কানের ভিতরে দেবেন না। একই বাচ্চার বারবার ইনফেকশন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

যে বিষয়ে খেয়াল রাখবেন

• বাচ্চারা যাতে কানে কিছু দিয়ে খোঁচাখুচি না করে, সে দিকে খেয়াল রাখা জরুরি। বাচ্চার সামনে আপনাকেও সংযত থাকতে হবে
• অনেক সময়ে গরম জলের ভাপ নিলেও কানের ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়
• প্রত্যেকটি ইয়ারড্রপ ব্যবহারের একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা থাকে। কোনও মতেই পুরনো ইয়ারড্রপ ব্যবহার করবেন না
• কানে আঙুল দিয়ে খোঁচাবেন না। নখ বড় থাকলে তা থেকে ইনফেকশন হওয়ার আশঙ্কা থাকে

বড়দের ক্ষেত্রেও মোটামুটি একই বিধান। কানে ব্যথা হলে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে হালকা সেঁক নেওয়া যেতে পারে। কানে জল ঢুকে গেলে অনেকেই ফের কানে জল ঢুকিয়ে সেই কান পরিষ্কার করার চেষ্টা করেন। সেটা কিন্তু একেবারেই উচিত নয়। বরং তোয়ালে দিয়ে চেপে চেপে যতটা জল মুছে নেওয়া যায়, মুছে নিন। বাকিটা ঠিক সময় মতো বেরিয়ে যাবে।

কান পরিষ্কার রাখতে কী করতে হবে?

কান পরিষ্কার রাখার জন্য বাইরে থেকে কিছু করার প্রয়োজন নেই। ডা. অর্জুন দাশগুপ্তের মতে, ‘‘কানকে নিজের মতো থাকতে দিন। কান নিজেই নিজেকে পরিষ্কার রাখতে সক্ষম। কান পরিষ্কার করতে বারবার কটন বাড ব্যবহার করা, জল দেওয়ার স্বভাব থাকলেই বরং কানে ইনফেকশনের আশঙ্কা বাড়তে পারে।’’ তার চেয়ে বরং রোজ স্নানের পরে তোয়ালে দিয়ে কানের যতটা অংশ পারবেন, মুছে নিন। জোর করে কানের ভিতরে খোঁচাখুচি করবেন না।

সতর্ক থাকুন

• ছোট বাচ্চাকে কোলে শুইয়ে দুধ খাওয়ানোর সময়ে খেয়াল রাখবেন, তার কানে যেন দুধ চলে না যায়। অনেক সময়েই বাচ্চাদের কানে দুধ ঢুকে ইনফেকশন হওয়ার ভয় থাকে।

• সেফটিপিন বা কোনও কাঠি দিয়ে কখনওই কান খোঁচাবেন না।

• মোবাইলের সঙ্গে সকলেই প্রায় ইয়ারফোন ব্যবহার করে থাকেন। কারও সঙ্গে ইয়ারফোন শেয়ার না করাই ভাল। নিজের ইয়ারফোনও আলাদা বাক্সে ভরে ব্যাগে বা পকেটে ক্যারি করুন। ইয়ারফোন ব্যাগের মধ্যে ফেলে রেখে দিলে তাতে ধুলোবালি ও ব্যাকটিরিয়া বাসা বাঁধতে পারে। কানে গোঁজার সময়ে তা সহজেই কানের ভিতরে প্রবেশ করে। ফলে ইনফেকশন হতে বেশি সময় লাগে না।

• কান ভারী লাগলে বা কানে শুনতে অসুবিধে হলে তখনই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

• অনেক সময়ে কান কিংবা গলায় ব্যথা হলেও তার কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। তখন কানের গর্তের নীচের অংশে আঙুল দিয়ে ধরে মুখ হাঁ করার চেষ্টা করুন। এতে যদি কান আর গলার সংযোগস্থলে ব্যথা লাগে, বুঝতে হবে আর্থ্রাইটিস হয়েছে। টিএম (টেম্পোরো ম্যান্ডিবুলার) জয়েন্টে আর্থ্রাইটিস হলে এ রকম ব্যথা হতে পারে।

কান ধরে বেশি টানাটানি না করে বরং ওকে ওর মতোই থাকতে দিন। দেখবেন, সে নিজেও ভাল থাকবে, আপনিও সুস্থ থাকবেন।

মডেল: ডিম্পল আচার্য, ছবি: অমিত দাস, মেকআপ: সৈকত নন্দী, লোকেশন: লাহাবাড়ি, পোশাক: ওয়েস্টসাইড, ক্যামাক স্ট্রিট

অন্য বিষয়গুলি:

Health Ear Pain Health Tips
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy