অ্যাঙ্কিলোসিং স্পন্ডিলাইটিসও এক ধরনের বাত। ছবি: শাটারস্টক।
আজকাল যে কোনও বয়সেই হাঁটু বা গোড়ালির বাত থাবা বসাতে পারে শরীরে। এই ধরনের বাতকে চিকিৎসকদের পরিভাষায় ‘অস্টিও আর্থ্রাইটিস’ বলে। ব্যায়ামের সাহায্যে এই অসুখ থেকে ভাল থাকা যায়। আর্থ্রাইটিস শব্দের অর্থ ‘বন্ধনী ফুলে যাওয়া’। বন্ধনী ফুলে গিয়ে যখন বিছানায় শয্যাশায়ী করে তোলে, তখন চিকিৎসক রক্তের এইচএলএ-বি২৭ পরীক্ষার কথা বলেন। পরীক্ষার ফল পজিটিভ হলে ধরে নেওয়া হয়, রোগী অ্যাঙ্কিলোসিং স্পন্ডিলাইটিসেস শিকার। এও এক ধরনের বাত। তবে সারা জীবনের সঙ্গী। চিকিৎসকের পরিভাষায় ‘আর্থ্রাইটিক ডিজিজ’।
ব্যায়াম পরম বন্ধু
অ্যাঙ্কিলোসিং স্পন্ডিলাইটিস হলে কখনওই বিছানায় শুয়ে থাকবেন না। এই রোগে বন্ধনীর রেঞ্জ অফ মোশন কমে যায়। ঘাড়, বুক আর কোমরের অংশের মেরুদণ্ডের কশেরুকা জুড়ে গিয়ে মেরুদণ্ডের নমনীয়তা একদম কমে যায়। অনেকেই সামনে ঝুঁকতে পারেন না, ঘাড় ঘোরাতে পারেন না। আক্রান্ত হয় হিপ জয়েন্টও। চলতে অসুবিধা হয়। তাই সচল থাকাটা খুব প্রয়োজন।
অ্যাঙ্কিলোসিং স্পন্ডিলাইটিস মানেই জীবন শেষ নয়। কলকাতার নামী ফিটনেস বিশেষজ্ঞ রনদীপ মৈত্র এই রোগ নিয়ে বাংলার হয়ে প্রথম শ্রেনির ক্রিকেট খেলেছেন। ব্যায়াম এই রোগে ভাল থাকার সবচেয়ে বড় অস্ত্র। যেহেতু এই অসুখে মেরুদণ্ড ও তার সংলগ্ন বন্ধনীগুলোর সঞ্চালন ক্ষমতা কমে যায়। সুতরাং গতিশীলতা বাড়ানোর ব্যায়াম অতন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন: গর্ভাবস্থায় এ সব দিকে খেয়াল রাখুন, নইলে বিপদে পড়বে গর্ভস্থ শিশু
বন্ধনীকে পোক্ত করুন
টি-স্পাইন এক্সটেনশন:
একটা বেঞ্চ বা টুল নিন। দুই হাঁটু ভেঙে মাটিতে নিলডাউনের ভঙ্গিতে থেকে দুই কনুই ভেঙে টুলের উপর রাখুন।এ বার কনুইয়ে চাপ দিয়ে শরীর পিছনের দিকে নিন। বুকের অংশের মেরুদণ্ড এতে প্রসারিত হয়। ১০-২০ সেকেন্ড ধরে থাকুন। মোট ৩ বার রিপিট করুন ।
ওভার হেড স্কোয়াট:
একটা গ্রিলের সামনে এসে গ্রিল ধরে হাত উঁচুতে রেখে হাঁটু ভেঙে স্কোয়াটের ভঙ্গিতে যতটা গভীরে বসা সম্ভব, বসুন। দেখবেন বুকের অংশের মেরুদণ্ডতে টান লাগছে। বুকের মেরুদণ্ডের নমনীয়তার সঙ্গে ঘাড় আর কোমরের ব্যথার যোগ আছে। ১০-২০ সেকেন্ড ধরে থাকুন। মোট ৩ বার রিপিট করুন।
হিপ ফ্লেক্সর স্ট্রেচ:
কোনও কিছু ধরে বা সাপোর্ট নিয়ে লাউঞ্জ করার (এক পা ভাঁজ করে, অন্য পা পিছনে টেনে ছড়িয়ে) ভঙ্গী করুন। সামনের পা যতটা পারা যায় সামনে রাখুন। দেখবেন থাই আর পেটের নীচে টান পরছে। কোমরের অংশের গতিশীলতা বাড়ানোর জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ। ১০-২০ সেকেন্ড ধরে থাকুন। মোট ৩ বার রিপিট করুন ।
ঘাড় থেকে কোমরের জয়েন্ট আর মূল পেশীগুলোর জন্য ৬-৮ টা স্ট্রেচ রোজ করুন। মেরুদণ্ড প্রসারিত হয় এমন স্ট্রেচ বেশি করে করুন।
যোগাসনের বিভিন্ন মুদ্রা যেমন ধনুরাসান, ভুজঙ্গাসন, উষ্ট্রাসন— অর্থাৎ শরীরকে প্রসারিত করে এমন মুদ্রাগুলো দারুণ কার্যকরী ।
আরও পড়ুন: হার্ট অ্যাটাক ঠেকাতে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করুন, মেনে চলুন এ সব উপায়
জোর বাড়ানোর ক্ষত্রে ঠিক ব্যায়াম বাছুন
সমান গুরুত্বপূর্ণ জোর বাড়ানোর ব্যায়াম। ওজন নিয়ে জোর বাড়ানোর ব্যায়াম রোজ করে যেতে হবে। তবে বুঝতে হবে কোন ব্যায়ামটা করবেন আর কোনটা করবেন না। জোর বাড়ানোর ব্যায়ামের ক্ষেত্রে টানার ব্যায়াম অর্থাৎ পিঠের পেশী শক্তিশালী করার ব্যায়াম বাছুন। পিঠের পেশী শক্তিশালী হলে মেরুদণ্ড প্রসারিত অবস্থায় থাকার সম্ভাবনা বাড়বে। অ্যাঙ্কিলোসিং স্পন্ডিলাইটিস হলে সামনে ঝুঁকে পরার প্রবণতা দেখা দেয়। তাই টানার (পুলিং) ব্যায়ামের মাধ্যমে মেরুদণ্ড সোজা রাখার চেষ্টা চালানো হয়। ঠেলার ব্যায়াম যতটা সম্ভব কম করবেন। পুশ আপ বা চেস্ট প্রেস এড়িয়ে চলুন।
জোর বাড়ানোর ব্যায়াম
টিউব রো:
রবারের একটা টিউব কিনুন। গ্রিলে আটকে ওই দিকে মুখ করে দাড়িয়ে বুকের দিকে টানুন। যাদের কাছে ডাম্বল আছে একটা বেঞ্চে উপুড় হয়ে শুয়ে ডাম্বেলটা মাটির দিক থেকে বুকের দিকে টানুন। এতে পিঠের পেশীর জোর বাড়ে। ১০-১২ বার করে করুন। ৩-৪ তে সেট ।
উপুড় হয়ে কোবরা রেজ: সহজ পদ্ধতির ব্যায়াম এটি। উপুড় হয়ে মাটিতে শুয়ে হাতের সাহায্য না নিয়ে বুকটা মাটি থেকে উপরে তুলুন। ১২ বারে এক একটা সেট হয়। চারটি সেট অভ্যাস করুন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy