সান্তা বুড়ো ছাড়া বড়দিন ঘিরে আর কী কী ঐতিহ্য রয়েছে ইউরোপ জুড়ে। ছবি: শাটারস্টক।
শীত পড়লেই শুরু হয়ে যায় বড়দিনের মরসুম। বাতাসে উৎসবের মেজাজ। কলকাতা শহরেও এখন বড়দিন নিয়ে উন্মাদনা তুঙ্গে। শহরের অলিগলি থেকে শুরু করে ছোট-বড় রেস্তরাঁ কিংবা ক্যাফে, শপিং মল— সবই সেজে উঠেছে বড়দিনের জন্য।
কলকাতায় বড়দিন উদ্যাপন মানে রাত ১২টায় যিশুর জন্মদিনের কেক কাটা, সান্তা টুপি মাথায় পরে পার্ক স্ট্রিটের রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো, রেস্তরাঁয় খাওয়াদাওয়া আর হইচই।
ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কিন্তু এই বিশেষ দিন পালনের এক এক রকম নিয়ম আছে। চলুন জানা যাক, সান্তা বুড়ো ছাড়া বড়দিন ঘিরে আর কী কী ঐতিহ্য রয়েছে ইউরোপ জুড়ে।
১) স্পেনের ক্যাটালোনিয়ায় কাঠের টুকরোকে খাওয়ানো হয়: স্পেনের ক্যাটালোনিয়া অঞ্চলে বড়দিনের কয়েক দিন আগেই শিশুদের জন্য বাড়িতে ‘পুপিং লগ’ কিনে আনা হয়। এই ‘পুপিং লগ’ আদতে একটি পুতুলের মতো। শিশুরা মনে করে, এই পুতুল বড়দিনে তাদের অনেক অনেক উপহার দেবে। ৮ ডিসেম্বর পুতুলটি এনে বসার ঘরে টেবিলে রেখে দেয় শিশুরা। তার পর রোজ রাতের খাওয়া সেরে তাকে চকোলেট, কমলালেবুর খোসা, বাদাম পরিবেশন করা হয়। তার যেন ঠান্ডা না লাগে, সে জন্য তার উপর চাপিয়ে দেওয়া হয় কম্বলও। বড়দিনের সন্ধ্যায় তাকে ঘিরে গানবাজনা করা হয়। সে দিনই কম্বলের তলায় মেলে অনেক অনেক উপহার।
২) আইসল্যান্ডে রাক্ষসীর আগমন: এই দেশের বাসিন্দাদের মতে, বড়দিনে সান্তা বুড়ো নয়, রাক্ষসীর আগমন হয়। মনে করা হয়, পর্বতের চূড়ায় গ্রিলা নামে এক রাক্ষসীর বাস। বড়দিনের আগে দুষ্টু শিশুদের সে ব্যাগে ভরে নিয়ে যায় আর তাদেরই রান্না করে খায়। বড়দিনের ১৩ দিন আগে থেকে সেখানকার খুদেরা জানালায় জুতো দেয়। তাদের বিশ্বাস, ভাল শিশুদের রাক্ষসী উপহার দেবে। দুষ্টু শিশুরা উপহারের পরিবর্তে পায় পচা আলু।
৩) বুলগেরিয়ায়া বড়দিনের সন্ধ্যায় নিরামিষ ভোজন ও শূকরের বলি: বুলগেরিয়ার বাসিন্দারা ২৪ ডিসেম্বর রাতে নিরামিষ ভোজন করেন। ওই রাতে বিজোড় সংখ্যার পদ দিয়েই রাতের খাওয়া সারেন তাঁরা। সেই রাতে শূকর বলি দেওয়ারও রেওয়াজ আছে। বড়দিনের ৪০ দিন আগে থেকেই তাঁরা নিরামিষ খাবার খান। ২৫ তারিখ থেকে তাঁরা আবার আমিষ খেতে শুরু করেন। ২৪ তারিখ তাঁরা একটি আখরোট ভেঙে দেখেন, সারাটা বছর তাঁদের কেমন কাটবে।
রাশিয়ায় বড়দিনে ভাগ্য বলার চল: রাশিয়ায় জানুয়ারি মাসের ৬ তারিখ পালন করা হয় ক্রিস্টমাস। ৬ থেকে ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত চলে তাদের বড়দিনের ছুটি। রুশরা মনে করেন, ভবিষ্যতে কী হবে, এই সময়টা তা জানার জন্য আদর্শ। বিশেষ করে মেয়েরা এই সময়ে নানা উপায়ে তাঁদের ভবিষ্যৎ জানার চেষ্টা করেন। কেউ কাগজ পুড়িয়ে, কেউ আয়না দিয়ে, কেউ আবার মোমবাতি দিয়ে ভবিষ্যৎ জানতে যান। বাড়ি-বাড়ি চলে ভবিষ্যৎ জানার হিড়িক। কেউ কেউ আবার জ্যোতিষীর কাছে ছোটেন এই সময়ে।
জার্মানির ‘রাবিশ সিক্রেট স্যান্টা’: হালে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ‘সিক্রেট স্যান্টা’ ব্যপারটি বেশ জনপ্রিয়। চুপি চুপি একে অপরকে উপহার দেওয়ার নয়া কৌশল। কিন্তু জার্মানিতে তরুণ-তরুণীরা একে অপরকে নতুন নয়, বাড়িতে থাকা পুরনো জিনিস উপহার দেন। এই রীতির মাধ্যমে বাড়িতে থাকা অপ্রয়োজনীয় জিনিস বার করে দেওয়া হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy