Advertisement
E-Paper

ভুঁড়ি কমানোর সহজ উপায়

এদেশের ১৩ কোটি ৫০ লক্ষ মানুষের বড়সড় ভুঁড়ি অর্থাৎ অ্যাবডোমিনাল ওবেসিটি আছে। আর সামগ্রিক ভাবে বাড়তি ওজনের বোঝা বয়ে চলেছেন ১৫ কোটি ৩০ লক্ষ মানুষ। এই হিসেব অবশ্য ৪ বছর আগেকার, এখন সংখ্যাটা আরও বেড়েছে বলে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা।

যাঁদের ইতিমধ্যে ভুঁড়ি বেড়ে গেছে, তাঁরা এখনই পেটের মেদ কমানোর চেষ্টা শুরু করুন। ছবি: শাটারস্টক।

যাঁদের ইতিমধ্যে ভুঁড়ি বেড়ে গেছে, তাঁরা এখনই পেটের মেদ কমানোর চেষ্টা শুরু করুন। ছবি: শাটারস্টক।

সুমা বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২০ ১২:৫২
Share
Save

কোভিড ১৯ ভাইরাস বেশির ভাগ মানুষেরই সব হিসেব এলোমেলো করে দিয়েছে। মাসাধিককাল বাড়ি বন্দি থেকে একদিকে মানসিক টানাপড়েন, অন্য দিকে শারীরিক কসরত কমে যাওয়ায় ওজন বেড়ে যাচ্ছে। এর রেশ চলছে এখনও। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ভারতীয়দের মধ্যে অ্যাবডোমিনাল ওবেসিটি অর্থাৎ ভুঁড়ি হওয়ার প্রবণতা খুব বেশি। আর এই কারণেই এদেশে টাইপ টু ডায়বেটিস সহ মেটাবলিক সিনড্রোমের মতো লাইফস্টাইল ডিজিজের ঝুঁকি ক্রমশ বাড়ছে।

আঁতকে ওঠার মতো তথ্য জানা গেছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চের পত্রিকা ‘ইন্ডিয়ান জার্নাল অব মেডিক্যাল রিসার্চ’-এর এক গবেষণাপত্রে। এদেশের ১৩ কোটি ৫০ লক্ষ মানুষের বড়সড় ভুঁড়ি অর্থাৎ অ্যাবডোমিনাল ওবেসিটি আছে। আর সামগ্রিক ভাবে বাড়তি ওজনের বোঝা বয়ে চলেছেন ১৫ কোটি ৩০ লক্ষ মানুষ। এই হিসেব অবশ্য ৪ বছর আগেকার, এখন সংখ্যাটা আরও বেড়েছে বলে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা।

ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ইউরোপ আমেরিকায় কোভিড কালে প্রায় ১২% মানুষ স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি ওজন বাড়িয়ে ফেলেছেন। মেয়েদের মধ্যে মেদ বাড়ার প্রবণতা বেশি। ফিজিক্যাল মেডিসিনের চিকিৎসক মৌলীমাধব ঘটক জানালেন যে, ওজন বাড়লে তো বটেই ভুঁড়ি বাড়লে অসুখের লাইন পড়ে যায়। শুরুতেই পিছু নেয় মেটাবলিক সিনড্রোম, এই গ্রুপে আছে ডায়বেটিস, হাই ব্লাড প্রেশার, রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইড ও কোলেস্টেরলের মাত্রাধিক্য। এদের হাত ধরে আসে হার্টের অসুখ, হাঁটু ও কোমরের আর্থ্রাইটিস, ব্রেস্ট ক্যানসার, এন্ডোমেট্রিয়াম ক্যানসার সহ নানান ক্যানসার, ক্রনিক ত্বকের অসুখ একজিমা, ইনকনটিনেন্স এর মতো রোগ।

আরও পড়ুন: বিশ্ব জুড়ে ওবেসিটিতে ফি বছর প্রাণ যায় ২৮ লাখের!

পেটের বাড়তি মেদ শরীরে অক্সিজেন গ্রহণের পরিমাণ কমিয়ে দিতে পারে। ছবি: শাটারস্টক।

যাঁদের মধ্যপ্রদেশ স্ফীত, তাঁদের জন্যে আবার কোভিড ১৯-এর সংক্রমণ মারাত্মক হওয়ার ঝুঁকি থাকে বললেন মৌলীমাধব ঘটক। অথচ ভুঁড়ি আমরা নিজেরাই ডেকে আনি। বাড়তি কার্বোহাইড্রেট ও মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়া ও শারীরিক পরিশ্রম এবং এক্সারসাইজের অভাবে ভুঁড়ি বাড়ে, বললেন মৌলীমাধব। পেটের বাড়তি মেদ শরীরে অক্সিজেন গ্রহণের পরিমাণ কমিয়ে দিতে পারে। তাই কোনও অবস্থাতেই কোমরের মাপ বাড়তে দেবেন না। যাঁদের ইতিমধ্যে ভুঁড়ি বেড়ে গেছে, তাঁরা এখনই পেটের মেদ কমানোর চেষ্টা শুরু করুন। তবে একটা কথা মনে রাখবেন, ভুঁড়ি কমানোর আগে সামগ্রিক ভাবে শরীরের মেদ ঝরানোর চেষ্টা করতে হবে। এর জন্যে সকালে বা সন্ধেবেলা আধ ঘন্টা হাঁটা ও কিছু ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করা জরুরি। অনেক সময় বংশগত কারণে ও কিছু হরমোনের তারতম্যের জন্যেও মেটাবোলিজম কমে গিয়ে মেদ জমতে পারে। সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সমস্যার সমাধান করতে হবে।

আরও পড়ুন: সুস্থ থাকতে জল খাওয়া নিয়ে কী কী মানতেই হবে

ডায়েটিশিয়ান রেশমি রায়চৌধুরী জানালেন যে, ভুঁড়ি কমানোর প্রাথমিক শর্ত ক্যালোরি মেপে খাওয়া আর ঘাম ঝরিয়ে এক্সারসাইজ করা। শুরুতেই চিনি এবং চিনি দেওয়া সব মিষ্টি খাবার বন্ধ করে দিতে হবে। চা বা কফিতেও চিনি খাবেন না। অনেকে স্যুইটেনার ব্যবহার করেন, কিন্তু কৃত্রিম মিষ্টি শরীরের জন্যে মোটেই ভাল নয়। একই সঙ্গে কিছু এক্সারসাইজ করতেই হবে। একই মত মৌলীমাধবেরও, তাঁর মতে প্রত্যেক দিন ৪০ মিনিট করে সপ্তাহে অন্তত ৫ দিন এক্সারসাইজ না করলে ভুঁড়ি কমানো মুশকিল। রেশমি জানালেন যে, লেবু জাতীয় ভিটামিন সি যুক্ত ফল, শাক সবজি সহ লো ক্যালোরি খাবার পেটের মেদ কমাতে সাহায্য করে। প্যাকেটজাত ফলের রসের পরিবর্তে তাজা ফল খেতে হবে। ফাস্টফুড ও ভাজা খাবার একেবারেই বন্ধ রাখতে হবে। কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার, যেমন ভাত, রুটি, চাউমিন, ময়দার তৈরি কেক, পিৎজা না খাওয়াই ভাল। একসঙ্গে অনেকটা খাবার খেলে চলবে না। বাদাম, আমন্ড, কল বের করা ছোলা, গোটা মুগ খেতে হবে। লেবু দিয়ে চানা বানিয়ে খেলে তা একদিকে মুখরোচক, অন্য দিকে পুষ্টিকর।

প্রোটিন জাতীয় খাবার মেটাবলিজম বাড়িয়ে দেয়। তবে কষা মাংস বা মাছের কালিয়ার পরিবর্তে মাংসের স্ট্যু বা মাছের ঝোল কিংবা সেঁকা মাছ মাংস সবজি সহযোগে খেলে ভাল হয়। এর সঙ্গে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খাওয়া উচিৎ। তবে খাবারের পরিমাণ কমিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি নিয়মিত এক্সারসাইজ করলে তবেই ভুঁড়ি কমবে বলে জানালেন রেশমি। মর্নিং বা ইভিনিং ওয়াক করার সমস্যা হলে বাড়িতে প্লাঙ্ক, সাইড কিকিং সহ কোর এক্সারসাইজ ও কার্ডিও এক্সারসাইজ করা দরকার বলে পরামর্শ মৌলীমাধবের। ছোটবেলা থেকেই ওজন নিয়ন্ত্রণ ও এক্সারসাইজের ব্যাপারে গুরুত্ব দিতে শেখালে বাড়তি ওজনের বোঝা বইতে হবে না। রেশমি বললেন, অনেকে মেদ কমাতে গিয়ে খাওয়া ছেড়ে দেন, এটা অত্যন্ত অবৈজ্ঞানিক। খাবার কম খেলে বা না খেলে অপুষ্টির সমস্যা ও তার থেকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই পুষ্টিকর খাবার খেয়ে ও এক্সারসাইজ করে ভুঁড়ি কমান, সুস্থ থাকুন।

Belly Fat Cryptic Pregnancy Obesity

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।