দেবলীনা লকডাউনের সময়ে ফাঁকা রাস্তায় সাইকেল নিয়ে পাড়ি দিতেন কয়েক কিলোমিটার। ছবি- সংগৃহীত
টলিপাড়ায় শরীর সচেতন হিসাবে বেশ জনপ্রিয় দেবলীনা কুমার। অভিনেত্রীর ইনস্টাগ্রামের পাতাও তেমনটাই বলছে। সেখানে চোখ বোলালে খানিকটা আন্দাজ করা যায় যে, দেবলীনা ভালবেসেই শরীরচর্চা করেন। লকডাউনের সময়ে ফাঁকা রাস্তায় সাইকেল নিয়ে পাড়ি দিতেন কয়েক কিলোমিটার। এখনও বজায় রেখেছেন সে অভ্যাস। পুজোর কিছু দিন আগে থেকে নিজেকে বাহ্যিক ভাবে বদলে ফেলার এই যে চেষ্টা চলে, সেটা কী ভাবে দেখছেন ‘ফিটনেস ফ্রিক’ অভিনেত্রী? সারা বছর তিনি নিজেই বা কী কী নিয়ম মেনে চলেন? উত্তর জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল দেবলীনা কুমারের সঙ্গে।
পুজোর দু’-এক মাস আগে থেকে ওজন কমানোর একটা পর্ব চলে। পছন্দসই চেহারা পেতে অনেকেই কঠোর পরিশ্রম করেন। এমন অনেক কিছু মেনে চলেন, যেগুলি সারা বছর ধরে করলে বেশি সুফল মিলত। ডায়েট মেনে চলার পাশাপাশি, জিমেও যাতায়াত শুরু করেন অনেকে। তবে দেবলীনা সে পথে বিশ্বাসী নন। অভিনেত্রী বলেন, ‘‘শরীরচর্চার ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা খুব জরুরি। ইচ্ছা হল এক দিন কয়েক ঘণ্টা জিম করলাম। তার পর আর করলাম না। এই ধরনের শরীরচর্চায় আমি বিশ্বাসী নই। ব্যস্ততা থাকলে অল্প সময় করলাম। কিন্তু রোজ করা প্রয়োজন। ওয়েট ট্রেনিং এবং কার্ডিয়ো— এই দু’টি যদি এক দিন এক দিন করে করা যায়, তা হলে ভিতর থেকে শক্তিও পাওয়া যায়। আবার চেহারাও ছিপছিপে হয়। হার্ট এবং ফুসফুসও ভাল থাকে। আমি নিয়মিত এই রুটিন মেনে চলি। রোজ সকাল ৬.৩০ নাগাদ জিমে যাই। কলটাইম তাড়াতাড়ি থাকলে দেড় ঘণ্টার বেশি ওয়ার্কআউট করা হয় না। শ্যুটিং না থাকলে তখন একটু বেশি ক্ষণ জিম করে নিই। লকডাউনে প্রচুর সাইকেল চালাতাম। বাড়ি থেকে অনেকটা দূরে চলে যেতাম। পুজোর আগে বেশ বৃষ্টি হচ্ছে। তাই সপ্তাহে এক-দু’বার বেরোই সাইকেল নিয়ে।’’
দেবলীনা নৃত্যশিল্পীও। শরীরচর্চা হিসাবে নাচ কতটা ভাল বলে মনে করেন তিনি? দেবলীনার কথায়, ‘‘নাচ খুব ভাল কার্ডিয়োর কাজ করে। কিন্তু আমি এখন আর নিয়মিত নাচের শো বা রিহার্সাল করি না। নাচ শেখাই। শেখাতে গেলে যেটুকু পরিশ্রম হয় বা ঘাম ঝরে, তাতে বিশাল কিছু লাভ হয় না। যখন ক্ল্যাসিক্যাল করি, তখন সেটা দারুণ কাজ দেয়।’’
অভিনেত্রী হিসাবে পর্দায় আত্মপ্রকাশের আগে দেবলীনার ওজন ছিল প্রায় ৭০-৭৫ কেজি। পরিশ্রম করে নিজেকে এই জায়গায় এনেছেন তিনি। পথটি খুব সহজ ছিল না। কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে। সময় লেগেছে। কিন্তু হাল ছাড়েননি তিনি। ‘‘আমি ছোট থেকেই খুব মোটা ছিলাম। কলেজে পড়ার সময়েও বেশ ওজন ছিল। তার পর মনে হল অভিনয় করব। তার জন্য রোগা হওয়া জরুরি। সেই শুরু। জিম যাওয়া শুরু করলাম। খাওয়াদাওয়ায় পরিবর্তন আনলাম। শরীরচর্চায় বেশি করে জোর দিলাম। সামান্য ওজন কমতেই দেখলাম, পছন্দের পোশাকগুলি দারুণ মানাচ্ছে। উৎসাহ পেয়ে গেলাম। আরও পরিশ্রম করলাম। শরীরচর্চার যে কতটা উপকার, সেটা বুঝতে পারলাম। এখন এক দিন কোনও কারণে জিমে যেতে না পারলে মনে হয় কী একটা যেন করিনি।’’
ফিট থাকতে নিয়ম করে জিমে যাওয়া ছাড়াও রোজের খাবারে কী থাকছে, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। দেবলীনা কি কঠোর ডায়েট করেন? ‘‘আমি সব খাই। কেউ সেটা বিশ্বাস করেন না। আমি বিরিয়ানি খাই। মিষ্টি খেতে অসম্ভব ভালবাসি। মাঝেমাঝে চেষ্টা করেও নিজেকে আটকাতে পারি না। খেয়ে ফেলি। তার মানে এই নয় যে এক দিন মিষ্টি বা অন্য কিছু খেলাম বলে জিমে বেশি ক্ষণ থাকি। রোজের নিয়ম মেনে যতটুকু করার, ততটাই চেষ্টা করি। পুজো আসছে। এখন কোনও ডায়েট নয়। পুজোর পাঁচটি দিন নিজের পাড়ার পুজোতেই থাকব। জমিয়ে খিচুড়ি ভোগ আর বেগুনভাজা খাব। ওটাই আমার পুজোর ডায়েট,’’ সাফ জবাব দেবলীনার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy