বুধবার, ‘বিশ্ব লুপাস দিবস’ উপলক্ষে লুপাস রোগী ও তাঁদের পরিজনদের নিয়ে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রতীকী ছবি।
বছর পনেরো আগে এ রোগে গর্ভধারণে সফলতার হার ছিল মেরেকেটে ২০ শতাংশ। তবে ক্রমশ সচেতনতা বৃদ্ধি ও চিকিৎসায় উন্নতির কারণে এখন পরিসংখ্যান উল্টো কথা বলে। ‘সিস্টেমিক লুপাস এরিথেমেটোসাস’ বা ‘লুপাস’ রোগে আক্রান্ত মহিলার মা হওয়ার সাফল্যের হার বর্তমানে বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮০ শতাংশ।
বুধবার, ‘বিশ্ব লুপাস দিবস’ উপলক্ষে লুপাস রোগী ও তাঁদের পরিজনদের নিয়ে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। লুপাস রোগীদের নিয়ে কাজ করা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে এই রোগে আক্রান্তদের গর্ভধারণে সাফল্যের গল্প শোনাচ্ছিলেন এসএসকেএমের স্ত্রী-রোগ বিভাগের প্রধান চিকিৎসক সুভাষ বিশ্বাস। তাঁর কথায়, ‘‘ছাত্রাবস্থায় জেনেছিলাম, লুপাস রোগে আক্রান্তের গর্ভধারণ না করাই উচিত। কিন্তু এখন চিকিৎসা পদ্ধতির অনেক বদল ঘটেছে। তাই সাফল্যের হারও ক্রমশ বাড়ছে।’’
অনুষ্ঠানের মূল উদ্যোক্তা তথা ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের আহ্বায়ক, রিউম্যাটোলজিস্ট অলোকেন্দু ঘোষ জানান, লুপাস হল এক ধরনের বাত। ঠিক চিকিৎসা না হলে অনেক ক্ষেত্রে যা প্রাণঘাতী হতে পারে। তাঁর কথায়, ‘‘বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ০.০৩ শতাংশ লুপাস রোগে আক্রান্ত। মূলত মহিলাদের এই রোগ হয়। ধরা যাক, ১০ জন আক্রান্তের মধ্যে ৯ জনই মহিলা।’’ তিনি আরও জানান, ১৮-৪০ বছরের মহিলাদের সাধারণত এই রোগ হয়। তবে এর থেকে কমবয়সি মেয়েরাও লুপাসে আক্রান্ত হন। ঠিক চিকিৎসা চললে এই রোগেও স্বাভাবিক জীবনযাপন করা সম্ভব বলে জানান সিএমসি ভেলোরের রিউম্যাটোলজি বিভাগের প্রধান চিকিৎসক দেবাশিস দণ্ড।
তা যে সম্ভব, চিকিৎসাধীন রোগীরা নাচ-গান মঞ্চস্থ করার মাধ্যমে তার প্রমাণ দিলেন এ দিন। লুপাস রোগে কী করণীয়, তা নিয়ে ছিল আলোচনাচক্র। অলোকেন্দু ও সুভাষ বলেন, ‘‘গর্ভধারণের আগে দেখতে হয় কিডনি, মস্তিষ্ক ও রক্তের বিভিন্ন মাপকাঠি ঠিকঠাক আছে কি না।’’ চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, লুপাস হল সিস্টেমিক অটোইমিউন ডিজ়িজ় বা কানেক্টিভ টিসু ডিজ়িজ়, যাতে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা কোনও অজ্ঞাত কারণে নিজের শরীরেরই বিভিন্ন কোষ ও কলাকে ধ্বংসের চেষ্টা করে। তাতে আক্রান্ত অংশে প্রদাহ তৈরি হয়ে ফুলে ওঠে ও প্রচণ্ড ব্যথা হয়। লুপাসের কারণে হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস, লিভার, কিডনি, বিভিন্ন অস্থিসন্ধি-সহ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ একে একে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অলোকেন্দু জানান, এই রোগে মাঝেমধ্যে জ্বর ও গাঁটে ব্যথা, নাকের দু’পাশে লালচে গুটির মতো উপসর্গ দেখা যায়। তবে ঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু করলে দীর্ঘ দিন ঠিক থাকা যায়। যেমন লুপাস আক্রান্ত হয়ে ২৩ বছর বেঁচে ছিলেন মার্কিন তারকা মাইকেল জ্যাকসন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy