Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
coronavirus

করোনা-কাঁটার উৎস কোথায়? কী কী মানলে বিপদ অনেকটা কাটবে?

প্রথম থেকে সাবধান হলে আটকানো যাবে করোনার সংক্রমণ। ছবি: আইস্টক।

প্রথম থেকে সাবধান হলে আটকানো যাবে করোনার সংক্রমণ। ছবি: আইস্টক।

সুজাতা মুখোপাধ্যায় ও মনীষা মুখোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২০ ১৭:০৬
Share: Save:

পুরোপুরি বিনা মেঘ ছিল, এমন বলা না গেলেও বজ্রপাত যখন হল, আমরা যে তখন ঘোর অপ্রস্তুত, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

চিরপরিচিত জ্বর-সর্দি-হাঁচি-কাশি যে এমন ভয়াল পরিবেশ তৈরি করতে পারে, তা কে জানত! করোনা গ্রুপের কোভিড-১৯ যে এর জন্য দায়ী, তা বুঝতে বেশ সময় লেগে গেল। সেই অবসরেই ছড়াল অসুখ।

শেষ পর্যন্ত বাদুর!

জানা গেল, সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম বা ‘সার্স কোভ’, অর্থাৎ করোনাভাইরাস মানুষের মধ্যে এসেছে সিভেট ক্যাট নামে রাতচরা স্তন্যপায়ী প্রাণী থেকে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও আফ্রিকার জঙ্গলেই তার বসবাস বেশি। আবার ‘মিডল ইস্ট সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম’ বা ‘মার্স কোভ’ বা করোনাভাইরাস মানুষের দেহে এসেছে উট থেকে। পাখি বা জন্তু-জানোয়ারের মধ্যে আরও অনেক রকম করোনা থাকে। চিকেন-গরু-শূকরের মধ্যেও আছে। তবে তা থেকে মানুষের দেহে ছড়ানোর খবর এখনও পর্যন্ত নেই। রোগ ছড়াচ্ছে মানুষ থেকে মানুষেই।

আরও পড়ুন: করোনা ঠেকাতে নয়া পরামর্শ ‘হু’-র, কী সতর্কতার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

তবে আতঙ্কিত হতে নিষেধ করছেন চিকিৎসকেরা। তাঁরা জানিয়েছেন, করোনা পরিবার যতই বড় হোক না কেন, আমার-আপনার বিপদ কেবল সার্স কোভ, মার্স কোভ ও কোভিড ১৯-কে নিয়েই আপাতত। এই মুহূর্তকে ধরে ভাবলে, আপাতত কোভিড-১৯ নিয়েই আমাদের মূল ভাবনা।

করোনার দাপট

করোনা মানেই যে বিপদ, তা কিন্তু নয়। মূল ভাইরাসটি আদতে একটি সাধারণ জ্বর-হাঁচি-সর্দি-কাশির ভাইরাস, রাইনোভাইরাসের মতো। ইতিমধ্যেই হয়তো কম করে ১০-১৫ বার এর প্রকোপে সর্দি-কাশিতে ভুগেছি আমরা প্রায় সবাই। সুস্থ হয়ে গিয়েছি নিজের নিয়মেই। কিন্তু এ বার বিপদ হয়েছে অন্য কারণে। প্রাকৃতিক নিয়মেই সে নিজেকে ঘন ঘন পাল্টে ফেলছে। এমন ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে যে বিজ্ঞানীরা এখনও হালে পানি পাচ্ছেন না বিশেষ। কী ভাবে যে তার সংক্রমণ থামানো যায়, আটকানো যায় বা মারা যায় তা বুঝে উঠতে উঠতেই শুরু হয়ে গিয়েছে মরণমিছিল। দেশে-বিদেশে দলে দলে মানুষ এর কবলে পড়ছেন। যদিও তাঁদের মধ্যে ৯৭-৯৯ শতাংশ জনই সুস্থ হয়ে যাচ্ছেন, তবু পিছু ছাড়ছে না আতঙ্ক। ‘অতিমারি’ ঘোষণা হওয়ার পর যা আরও বেড়েছে।

আরও পড়ুন: করোনা-হানায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কী কী খাবেন, পাত থেকে বাদ কারা?

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

বাড়ারই কথা। ২০১৯-এর ডিসেম্বর থেকে শুরু করে ২০২০-র ১৭ মার্চের মধ্যে কোভিড ১৯-এ সারা পৃথিবীতে আক্রান্ত হয়েছেন ১,৮২,৮৬৪ জন মানুষ। মারা গিয়েছেন কম করে ৭২০০-রও বেশি মানুষ। আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছে রোজ। এর আগে সার্স কোভ বা মার্স কোভ এলেও তারা এতটা বাড়াবাড়ি কখনও করেনি।

অর্থাৎ, বিপদের নিরিখে করোনাভাইরাসের নবতম রূপ কোভিড-১৯ যে সবাইকে ছাড়িয়ে গিয়েছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সুমিত সেনগুপ্তের মতে, “করোনাকে হালকা ভাবে নেওয়ার কোনও অবকাশ নেই। বরং তাকে খুবই গুরুত্ব দিতে হবে। প্রতিরোধের যত রকম উপায় আছে, মেনে চলতে হবে সব। কারণ মারাত্মক ছোঁয়াচে এই অসুখটির চিকিৎসা এখনও চলছে মোটামুটি উপসর্গের উপর ভিত্তি করে। অতএব সতর্ক হয়ে চলাই এখন বুদ্ধিমানের কাজ।”

অসুখ থেকে বাঁচতে কী করব?

• বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) এই করোনাভাইরাস থেকে দূরে থাকতে বেশ কিছু পদক্ষেপের কথা জানিয়েছে। কী কী সে সব?

• প্রথম এবং প্রাথমিক শর্ত, বার বার হাত ধোওয়া। সাবান, হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে ঘন ঘন হাত ধুয়ে নিন। বাইরে থেকে বাড়ি ফিরে খুব ভাল করে কনুই অবধি হাত ধুয়ে নিন। আঙুলের ফাঁক, নখের কোনা, হাতের উপরিভাগ— সবটাই ভাল করে ধুয়ে নিন।

• বাইরে বেরতে হলে এড়িয়ে চলুন ট্রেন-বাসের রড, সিঁড়ির রেলিংয়ে হাত দেওয়ার মতো অভ্যাস।

• অসুস্থ না হলে বা অসুস্থ মানুষের দেখভাল না করলে মাস্ক পরবেন না।

• হাতের তালু ঢেকে হাঁচবেন বা কাশবেন না। বরং বাহু ঢেকে হাঁচুন বা কাশুন।

• ভিড়ভাট্টা এড়িয়ে চলুন। অনেক লোকের জনসমাগম হয় বা নিকট সংস্পর্শে আসতে হয় এ সব জায়গা এড়িয়ে চলুন। বাজারদোকান করুন, তবে চেষ্টা করুন সম্ভব হলে অনলাইনেই বেশির ভাগ কেনাকাটা সারতে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy