Covid-19 Risks: Transmission of coronavirus and risk factors in our day to day life dgtl
covid-19
করোনা সংক্রমণ কোন ক্ষেত্রে কতটা ছড়ায়? কোথায় ঝুঁকি বেশি? আনলকডাউনে বাইরে বেরনোর আগে দেখে নিন
কোন ক্ষেত্রে কেমন করে এই ভাইরাস ছড়ায়? বাঁচার উপায়ই বা কী?
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০২০ ১৮:০৭
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১২
যত দিন গড়াচ্ছে, করোনা নিয়ে গবেষণাও তত বিস্তৃত হয়েছে। বিজ্ঞানীরা সমীক্ষায় দেখেছেন, যত না জিনিসপত্রের মাধ্যমে এই ভাইরাসের সংক্রমণ হয়, তার চেয়ে অনেক বেশি ছড়ায় মানুষ থেকে মানুষে। আমেরিকার ‘সেন্টার্স ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’ (সিডিসি) কী ভাবে করোনা সংক্রমণ ছড়াতে পারে তা নিয়ে সমীক্ষাতেও এই একই দাবি করছে।
০২১২
শুধু তা-ই নয়, কোন কোন ক্ষেত্রে ভাইরাস ছড়ানোর হার কেমন, ঝুঁকি কোথায় কতটা কম বা বেশি এই নিয়েও নিজেদের মতামত প্রকাশ করেছে সিডিসি। তাদের মুখপাত্র ক্রিস্টেন নর্টলান্ডের মতে, ‘‘কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়ার ধরন বদল হয়নি। আজও তা মানুষে-মানুষে সংস্পর্শ থেকেই বেশি করে ছড়ায়। কিন্তু সেই সংস্পর্শেরও নানা প্রকারভেদ আছে। হাতে হাত লাগায় যেমন করে ছড়াবে, হাঁচি বা কাশি থেকে ছড়াবে তার অনেক গুণ বেশি।’’ কোন ক্ষেত্রে কেমন করে এই ভাইরাস ছড়ায়? বাঁচার উপায়ই বা কী?
০৩১২
সহজ হিসেবে একটি ফর্মুলার উপর ভিত্তি করেই সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়া-কমার অঙ্ক কষছেন বিজ্ঞানীরা। সফল সংক্রমণ= যে পরিমাণ ভাইরাসের সংস্পর্শে আছেন x সময়। অর্থাৎ, আপনি যে জায়গায় আছেন, সেখানে কতটা ভাইরাস আছে ও সেখানে কত ক্ষণ ধরে আছেন।
০৪১২
ভাইরাস বিশেষজ্ঞ ভিনসেন্ট মানস্টেরের মতে, ‘‘সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, এক জন সংক্রমিত ব্যক্তির সরাসরি সংস্পর্শে আসা অনেক বশি ঝুঁকির। বরং কোনও বাইরের বাক্স বা অনলাইনে আসা গিফট নেওয়া থেকে সংক্রমণ ততটা ছড়ায় না।’’ তাঁর মতে, কোনও আলমারি ও ড্রয়ার জাতীয় জিনিসে এই ভাইরাস প্রায় ২৪ ঘণ্টা বেঁচে থাকে। ধাতু ও প্লাস্টিকে বাঁচে প্রায় তিন দিন। কিন্তু আশ্রয় নেওয়ার মতো শরীর না পেলে এই ভাইরাস ততটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে না।
০৫১২
তাই এই অতিমারি রুখতে মানুষে মানুষে দূরত্ব রাখতেই হবে। হাত ধোয়া ও মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। বাইরে থেকে ফিরে ভাল ভাবে স্নান করতেও হবে বইকি। হাতে ভাইরাস লাগলে সেই হাত চোখে-মুখে-নাকে দিলে ভাইরাস শরীরে ঢুকবে। তাই চোখে-নাকে-মুখে হাত দেওয়া নিয়েও সচেতনতা বজায় রাখতে হবে। তবে আক্রান্ত ব্যক্তির সরাসরি হাঁচি-কাশির ড্রপলেট থেকে এই ভাইরাস সবচেয়ে বেশি ছড়ায়।
০৬১২
সিডিসি-র মতে, এক জন সুস্থ মানুষকে আক্রান্ত করার জন্য ১ হাজার ভাইরাল পার্টিকল প্রয়োজন। সংক্রামক ব্যক্তির শ্বাস থেকে প্রতি মিনিটে ২০ ভাইরাল পার্টিকল বেরয়। সুতরাং ৫০ মিনিট তাঁর শ্বাসের কাছাকাছি থাকলেই যে কেউ আক্রান্ত হতে পারেন কোভিড-১৯-এ। কিন্তু মাস্ক পরলে সে সম্ভাবনা কমে যায় প্রায় ৬০-৭০ শতাংশ। চার পাশে উপসর্গবিহীন রোগীর সংখ্যা বেশি বলে আরও বেশি করে মাস্ক ব্যবহারে জোর দিতে হবে।
০৭১২
কথা বললে যে অদৃশ্য ড্রপলেট বেরয়, তাতে প্রতি মিনিটে ২০০ ভাইরাল পার্টিকল বেরয়। ফলে আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে মাস্ক ছাড়া ৫ মিনিট কথা বললেই আপনি আক্রান্ত হতে পারেন কোভিডে। কিন্তু মাস্ক পরে যদি চার মিনিটও কথা বলেন তা হলে ঝুঁকি কমে যায় অনেকটাই।
০৮১২
আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশি থেকে প্রতি মিনিটে ২০ কোটি ভাইরাল পার্টিকল বেরয়। এই পার্টিকলগুলি প্রায় এক ঘণ্টা পর্যন্ত বাতাসে থাকে। তাই মাস্ক পরা এ কারণেও খুব দরকার।
০৯১২
সামাজিক দূরত্ব নিয়েও সংক্রমণের একটি অঙ্ক কষেছে সিডিসি। তাদের মতে, কোনও মানুষের সঙ্গে ৬ ফুট দূরত্ব নিয়ে ৪৫ মিনিট অবধিও থাকলে ঝুঁকি কম থাকে। মাস্ক পরে দু’জন কাছাকাছি দাঁড়িয়ে সর্বাধিক ৪ মিনিট পর্যন্ত কথা বললেও সংক্রামিত হওয়ার ভয় নেই। আলো-হাওয়া খেলে এমন জায়গায় দু’জনের মধ্যে ৬ ফুট দূরত্বে থাকলে তেমন কোনও শঙ্কার কারণ নেই।
১০১২
পাশ দিয়ে সাইকেল চালিয়ে বা হেঁটে বা জগিং করে কোনও আক্রান্ত ব্যক্তি গেলে, যদি তিনি হেঁচে বা কেশে না দেন, তা হলেও ভয়ের কোনও কারণ নেই। তবে মুখে মাস্ক পরার অভ্যাস সেখানেও দরকার।
১১১২
বদ্ধ জায়গা, দোকান-বাজার, রেস্তরাঁয় সংক্রামিত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। এই ঝুঁকি কমাতেও করোনা থেকে দূরে থাকার সব রকম নিয়ম মেনে চলতে হবে।
১২১২
স্কুল-কলেজ, কনফারেন্স, অফিসকাছারি, পাবলিক টয়লেট এ সব জায়গা থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকি প্রবলতর। বিয়েবাড়ি, পার্টি, কোনও অনুষ্ঠান, ঘরোয়া জমায়েত, সিনেমা হল— অর্থাৎ যে সব জায়গায় বেশ কিছু ক্ষণ ধরে অনেক লোকজন একসঙ্গে থাকবেন, সে সব জায়গায় করোনা সংক্রমণও বাড়তে পারে হু হু করে। এই সব জায়গা তাই আগামী কয়েক মাস যতটা সম্ভব এড়িয়ে যাওয়াই ভাল। একান্তই যেতে হলে ঘন ঘন হাত ধোয়া, মাস্ক পরা ও স্যানিটাইজার ব্যবহারের অভ্যাস জারি রাখতে হবে।