Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
nutrition

দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ কমিয়ে দেয় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, এ সব খাবারে টেনশন সরিয়ে সুস্থ থাকুন

উদ্বেগ কমাতে কিছু খাবারেরও ভূমিকা আছে৷কী কী রাখবেন পাতে?

দ্রুত গতির যুগে মনের উপর চাপ বাড়ছে। ছবি: শাটারস্টক

দ্রুত গতির যুগে মনের উপর চাপ বাড়ছে। ছবি: শাটারস্টক

সুজাতা মুখোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০২০ ১৪:১৫
Share: Save:

কোভিড কেড়ে নিয়েছে রাতের ঘুম। তার সঙ্গে চাকরির অনিশ্চয়তা, প্রিয়জনের জন্য উদ্বেগ, বেতন কেটে নেওয়ার পরিস্থিতি সব মিলিয়ে গৃহস্থের স্বাভাবিক জীবনযাপনে এক দীর্ঘকালীন জট পড়েছে। এই পরিস্থিতি কবে কাটবে তাও এখন বোঝা যাচ্ছে না। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই দুশ্চিন্তা বাড়বে। তবে চিন্তাভাবনাকে আবার এতটাও লাগামছাড়া করে দেওয়া যেবে না যাতে সে অন্য অসুখ ডেকে আনে।

বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ কমাতে যোগা, মেডিটেশন করতে বলছেন। বাড়াবাড়ি উদ্বেগ নিয়ে বাস করলে মাস ছয়েকের মধ্যে জেনারেলাইজড অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার বা ‘জিএডি’ হতে পারে। তখন তাকে সারাতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হবে, কিন্তু এ সব কথাতেও উদ্বেগ আর কমছে কই!

মনোচিকিৎসক শিলাদিত্য মুখোপাধ্যায়ের মতে, “উদ্বেগের বিপদ এটাই, মানুষ দিনে দিনে এত নেগেটিভ হয়ে যান যে বিশ্বাস করতে শুরু করেন, তাঁর যা হবে, সব খারাপই হবে। ‘ভাল’-র মধ্যেও ‘খারাপ’ খুঁজে বার করেন। গতের বাইরে কিছু এলে সামলাতে পারেন না। রিল্যাক্স করতে পারেন না। ভুল সিদ্ধান্ত নেন। খিটখিট করেন, খুঁতখুঁত করেন। পরের পর্যায়ে গ্রাস করে চরম অস্থিরতা, অমনোযোগ, দুঃখ, আতঙ্ক, অনিদ্রা। ফলে এক সময় আর মাথা কাজ করে না। এ ছাড়া এ সময় কিছু শারীরিক উপসর্গও হয়। যেমন, গা-বমি, মাথাব্যথা, হাত-পা কাঁপা, বুক ধড়ফড়, বুকে চাপ দেখা দিতে পারে।”

আরও পড়ুন: করোনা সংক্রমণ কোন ক্ষেত্রে কতটা ছড়ায়? কোথায় ঝুঁকি বেশি? আনলকডাউনে বাইরে বেরনোর আগে দেখে নিন

ডিসঅর্ডার পর্যায়ে পৌঁছে গেলে অনেক কিছু লাগে। সাইকোথেরাপি, বিশেষ করে কগনিটিভ বিহেভিয়ার থেরাপি, ওষুধ। জীবনযাপনে পরিবর্তন আনতে হয়। শিখতে হয় রিল্যাক্স করা ও পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার নিয়ম।

গোড়াতে সতর্ক হলে এত কিছু প্রয়োজন পড়ে না। সচেতন বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে কথা বলে ও যোগা-মেডিটেশন-ব্যায়াম ইত্যাদি করতে পারলে মন হালকা হয়। উদ্বেগ কমাতে কিছু খাবারেরও ভূমিকা আছে।

কী খাবার থাকবে পাতে?

• ভিটামিন ই-র অভাব হলে উদ্বেগ ও মন খারাপ বাড়তে পারে। সে অভাব মেটাতে নিয়মিত বাদাম খান। বিশেষ করে ব্রাজিল নাট ও আমন্ড। ব্রাজিল নাটে আছে সেলেনিয়াম নামের খনিজ। লাগাতার উদ্বেগে শরীরে যে প্রদাহ বাড়ে তা কমাতে পারে। তবে দিনে ৩-৪টের বেশি নয়।

• গবেষণায় দেখা গিয়েছে যাঁরা ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড কম খান, তাঁদের মুড ডিসঅর্ডার বেশি হয়। কাজেই সপ্তাহে অন্তত দু’বার তৈলাক্ত মাছ খান। খান সয়াবিন, আখরোট, তিষির বীজ, চিয়া বীজ। কড লিভার অয়েলও খেতে পারেন।

• ‘জার্নাল অব এফেকটিভ ডিসঅর্ডার’-এ প্রকাশিত প্রবন্ধে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন ভিটামিন ডি-এর অভাব হলে অবসাদের আশঙ্কা বাড়ে। কাজেই দিনে ২০-৩০ মিনিট গায়ে রোদ লাগানো জরুরি। তার পাশাপাশি খান তৈলাক্ত মাছ, ডিমের কুসুম, মাশরুম, কড লিভার অয়েল। প্রয়োজনে সাপ্লিমেন্ট খেতে হতে পারে।

আরও পড়ুন: টাক থাকলেই কি করোনার ভয় বেশি?

বিভিন্ন বীজে থাকে নানা পুষ্টিগুণ, মস্তিষ্ককে সতেজ রাখে।

• ট্রিপটোফানের উপস্থিতিতে শরীরে সেরেটোনিন নামে মন ভাল করার হরমোন বেশি বেরোয়। মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়িয়ে উদ্বেগ, অনিদ্রা কমাতে সে সিদ্ধহস্ত। কাজেই ডিম, চিকেন, চিজ, মাছ, চিনেবাদাম, কুমড়ো বীজ, তিল, দুধ, কলা ইত্যাদি খান মাত্রা রেখে। কুমড়োর বীজে পটাশিয়াম ও জিঙ্ক আছে। দুটোই মুড ডিসঅর্ডারের মহৌষধ। কলার পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম রিল্যাক্স করতে সহায়তা করে।

• দিনে ৪০ গ্রাম ডার্ক চকলেট খেলে ফ্ল্যাভনয়েড, ট্রিপটোফান, ম্যাগনেশিয়াম ইত্যাদির প্রভাবে মন ভাল থাকে। তবে তাতে কোকার পরিমাণ যেন ৭০ শতাংশের বেশি থাকে।

• হলুদের কারকিউমিন প্রদাহের প্রবণতা কমায়। তার হাত ধরে মনও শান্ত হয়। উপরি পাওনা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়া, যা এই মুহূর্তে খুবই দরকার।

• চ্যামোলিন চা মন হালকা করে। এর জীবাণুনাশক গুণ আছে। আছে প্রদাহ কম রাখার ক্ষমতা। কাজেই করোনা ঠেকাতেও এর ভূমিকা আছে। এর স্বাদ-গন্ধ ভাল না লাগলে গ্রীন টি-ও খেতে পারেন। কাজ একই হবে।

• ঘরোয়া টক দই বা দোকানের ইয়োগার্টে আছে উপকারি জীবাণু, ল্যাকটোব্যাসিলাস ও বাই ফিডোব্যাকটেরিয়া। এরা পেট যেমন ভাল রাখে, মস্তিষ্কের সুস্থতার মূলেও এদের হাত আছে। প্রদাহ কমায় বলে মনও ভাল থাকে।

অন্য বিষয়গুলি:

COVID-19 Foods coronavirus Tension
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy