Advertisement
E-Paper

কমবে খরচ, বাড়বে সঞ্চয়, মেনে চলুন এই সব বিষয়গুলি

উৎসবে-অনুষ্ঠানে উপহার দেওয়া-নেওয়ার বদলে যে মানুষরা খেতে পাচ্ছেন না বা যাঁদের মাথায় ছাদ নেই, তাঁদের জন্য কিছু করুন৷ 

মূলধন বাড়াতে সঞ্চয়ে জোর দিন। ফাইল ছবি।

মূলধন বাড়াতে সঞ্চয়ে জোর দিন। ফাইল ছবি।

সুজাতা মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১২:১৫
Share
Save

কোভিড পরবর্তী পৃথিবীতে টিকে থাকতে গেলে খরচ কমাতেই হবে।অন্তত আগামী কয়েক বছর।কারণ বহু সংস্থাই ইতিমধ্যে ছাঁটাইয়ের প্রক্রিয়া চালু করে দিয়েছে। অনেকে বেতন দিচ্ছেন ২০-৫০ শতাংশ কেটে।আগামী দিনে বেশ কিছু ছোট ব্যবসা যে মুখ থুবড়ে পড়বে, লালবাতি জ্বালবে বহু নামজাদা প্রতিষ্ঠান, তার ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়ে উঠছে।তার উপর কমছে সুদের হার।ফলে যাঁরা এর উপর নির্ভর করে সংসার চালান, তাঁদের বিরাট দুর্গতি।

মূল কথা, ঘোরতর আর্থিক মন্দার হাত এড়িয়ে কেউই আর বাঁচতে পারবেন না।কাজেই বিপদ বেড়ে যাওয়ার আগেই খরচের হাত কমান।

কীভাবে কমাবেন

• যতটুকু প্রয়োজন‌ ঠিক ততটুকু খরচ করুন।আপাতত সমস্যা নেই বলে শৌখিন জিনিস কিনে পয়সার অপচয় করবেন না, কাল কেমন দিন আসছে কে বলতে পারে!

• গত দু'মাসে ঘরোয়া খাবার খাওয়ার যে অভ্যাস গড়ে উঠেছে, তা বজায় রাখুন।তাতে স্বাস্থ্য যেমন ভাল থাকবে, খরচও কমবে।এমনিও এখন বাইরে খাওয়া ঠিক নয়।কে কী ভাবে বানাচ্ছে, কী ভাবে পরিবেশন করছে, তা তো জানা নেই।সেখান থেকেও ঘরে আসতে পারে কোভিড।

• বাড়ি থেকে টিফিন নিয়ে যান।অফিস ক্যান্টিনে খাওয়া নিরাপদ নাও হতে পারে।খরচের ব্যাপারও আছে।

• জামা-কাপড় যতটুকু না কিনলেই নয়, ততটুকুই কিনুন।প্রথমত পয়সা বাঁচবে।ট্রায়াল রুম থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকবে না। তা ছাড়া এমনিও আগামী বছর দুয়েক উৎসব-অনুষ্ঠানে লাগাম থাকবেই। কাজেই যা আছে, তাই দিয়ে কাজ চালিয়ে দিন।

• রূপচর্চার পিছনে বেশি খরচ করার দরকার নেই।মুখের অর্ধেক ঢাকা থাকবে মাস্কে, মাথা ঢাকা থাকবে টুপি বা ওড়নায়।পার্লারে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা নিয়ে ভয়ও আছে, যা থেকে কোভিডের আশঙ্কা আছে।কাজেই মা-ঠাকুমার ঘরোয়া রূপটানে ভরসা রেখে চলুন। বেসন আর দই মিশিয়ে মুখে মাখতে পারেন স্নান করতে যাওয়ার আগে রোজ। চুল কাটাতে হয়তো ২-৩ মাসে একবার যেতে হতে পারে পার্লারে।তার বেশি না যাওয়াই ভাল।

• কমিয়ে দিন উপহারের বাজেটে।উৎসবে-অনুষ্ঠানে উপহার দেওয়া-নেওয়ার বদলে যে মানুষরা খেতে পাচ্ছেন না বা যাঁদের মাথায় ছাদ নেই, তাঁদের জন্য কিছু করুন। এতে মনও ভাল থাকবে।

• বেড়াতে যাওয়ার প্ল্যান আপাতত মুলতবি রাখুন। পাশাপাশি ভবিষ্যতের জন্য কিছু টাকা জমানোর চেষ্টা করুন।

আরও পড়ুন: করোনা হয়নি, প্রবল জ্বরে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েছি, আর কী বললেন সেরে ওঠা রোগী

টাকা জমান

• রোজগারের ৫-১০ শতাংশ অন্তত জমান।শেয়ার মার্কেট এখন খুব নড়বড়ে। কাজেই খুব অভিজ্ঞ না হলে ওই রাস্তায় না যাওয়াই ভাল।রেকারিং ডিপোজিট মোটের উপর নিরাপদ।সেখানে টাকা রাখতে পারেন।টাকা সরাসরি মাইনে থেকে কেটে নেওয়ার ব্যবস্থা করুন।

• বিনিয়োগ করুন স্বাস্থ্যবিমায়।যত বেশি করা সম্ভব।থাকলে টপ-আপ করুন নিয়মিত, যাতে বর্ধিত চিকিৎসা-খরচের সঙ্গে তাল মেলাতে পারেন।

• মাইনে পাওয়ার পর বাড়ি ভাড়া, ইলেকট্রিক বিল, স্কুলের মাইনে ইত্যাদি মিটিয়ে দিন প্রথমেই।

• যে টাকা রইল, তার ১০ শতাংশ সেভিংস অ্যাকাউন্টে জমা রাখুন।বছরের শেষে প্রিমিয়াম দিতে বা কোনও দরকারে কাজে লাগবে।

• বাকি টাকা পাঁচ ভাগে ভাগ করুন।প্রতি সপ্তাহে পাঁচ ভাগের এক ভাগ আপনার খরচের বরাদ্দ।বাজেট এমন ভাবে করুন, যাতে খরচ কুলিয়ে যায়।

• সপ্তাহ শেষে বাজেটের সঙ্গে খরচের হিসেব মেলান।দেখুন কোথায় কম-বেশি হয়েছে।বেশি খরচ করে ফেললে ভেবে দেখুন‌ সেটা এড়ানো যেত কিনা।

• কম খরচ করলে উদ্বৃত্ত টাকায় একদিন একটু ভাল-মন্দ খান কি কোনও একটা শখ পূরণ করুন।

• এ ভাবে চললে মাসের শেষে কিছু টাকা বাঁচার কথা।সেই টাকা রেখে দিন আপৎকালীন খরচের জন্য।

এত মেপে চলতে পারবেন কিনা ভেবে দুশ্চিন্তা হতে পারে অনেকের।বিশেষ করে যাঁরা
কখনও এত হিসেব করে চলেননি।তাঁদের জন্য রইল কয়েকটি টিপস।

আরও পড়ুন:বর্ষার আবহে করোনা দোসর, জামাকাপড় যত্নে রাখতে এই সব মানতেই হবে

বিনিয়োগ করুন স্বাস্থ্যবিমায়।যত বেশি করা সম্ভব। ছবি: শাটারস্টক


বাজেট মেনে চলার টিপস

• সপ্তাহে একদিন বা দু'দিন বাজারে যান।জিনিস কিনুন হিসেব করে, ফর্দ মিলিয়ে।মন প্রস্তুত করে রাখুন যে, অহেতুক কিছু কিনবেন না।এর পর নিতান্ত প্রয়োজন না হলে আর বাজারমুখো হবেন না।করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচতেও কাজে দেবে এই পদ্ধতি।

• বিজ্ঞাপন দেখে বা সস্তায় পাচ্ছেন বলে কিছু কিনে ফেলবেন না।

• নিজেকে সামলাতে পারবেন না মনে হলে অনলাইনে শপিং সাইটে ঢোকা বন্ধ করে দিন।

• প্রয়োজনীয় জিনিস কিনুন বছরে একবার কি দু'বার, স্টক ক্লিয়ারেন্স সেল থেকে।

• উপহার দেওয়ার মতো জিনিসও এ সময় কিনে রাখতে পারেন।

• ইলেকট্রিক বিল, টেলিফোন বিল ও গ্যাসের বিল যাতে কম থাকে, সে চেষ্টা করুন।

• যে ঘরে থাকবেন না, সে ঘরের আলো, পাখা বন্ধ করে রাখুন।সারাদিন কম্পিউটার অন করে রাখবেন না।

• ওয়াশিং মেশিন চালান সপ্তাহে একদিন কি দু-দিন।

• মোবাইলে যে প্ল্যান নিলে সবচেয়ে খরচ কম হবে, সেই প্ল্যান নিন।

• গ্যাসের বিল কমাতে বেশির ভাগ রান্না করুন প্রেশার কুকারে।

• গ্যাস জ্বালিয়ে সবজি কাটতে বসবেন না।রান্নার সব সরঞ্জাম তৈরি করে তবে গ্যাস জ্বালান।

• ডেবিট, ক্রেডিট কার্ড রাখুন এমারজেন্সি দরকারের জন্য।

দরকার না হলে ট্যাক্সি বা ক্যাব চড়বেন না।সকালে-বিকেলে তেমন তাড়া না থাকলে আশপাশের কাজগুলি পায়ে হেঁটে সেরে ফেলুন, সাইকেল থাকলে আরও ভাল।

আরও পড়ুন:আক্রান্তের বীর্যেও এ বার মিলল করোনাভাইরাসের আরএনএ!​

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

Economy Savings Corona Bank খরচ সঞ্চয় Income Tax Money Money Saving Tips

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।