Advertisement
E-Paper

আদৌ কি দ্বিতীয় বার করোনা সংক্রমণ হতে পারে? কী বলছেন চিকিৎসকরা?

সংক্রমণের ফিরে আসার খবর স্বভাবতই চিন্তা বাড়াচ্ছে চিকিৎসকদের। কেন এমন হচ্ছে? আদৌ কি দ্বিতীয় বার সংক্রমণ হতে পারে?

দ্বিতীয় বার পজিটিভ রিপোর্ট আসায় বাড়ছে উদ্বেগ। ছবি: পিটিআই

দ্বিতীয় বার পজিটিভ রিপোর্ট আসায় বাড়ছে উদ্বেগ। ছবি: পিটিআই

রোশনি কুহু চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২০ ১২:১৬
Share
Save

মঙ্গলবার স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে নোভেল করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৩ হাজার ১৭৫ জন, দৈনিক সংক্রমণের নিরিখে যা এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ। সেই অনুযায়ী সোমবারে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ২ হাজার ৯৮৭ জন। তার ফলে এই মুহূর্তে রাজ্যে সুস্থতার হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৫.৫১ শতাংশ। এরই মাঝে মুর্শিদাবাদ, খড়গপুর-সহ রাজ্যের কিছু জায়গায় দ্বিতীয় বার করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর এসেছে। কেউ সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যাওয়ার পর ফের আরটিপিসিআরে রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। কারও ক্ষেত্রে ছিল কো মর্বিড ফ্যাক্টর। বাংলাদেশের ক্রিকেটার মাশরফি মোর্তাজার ক্ষেত্রেও দ্বিতীয় বার সংক্রমণের কথা বলা হয়েছিল।

সংক্রমণের ফিরে আসার খবর স্বভাবতই চিন্তা বাড়াচ্ছে চিকিৎসকদের। কেন এমন হচ্ছে? আদৌ কি দ্বিতীয় বার সংক্রমণ হতে পারে?

এই প্রসঙ্গে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, “দ্বিতীয় বার কারও কারও ক্ষেত্রে সংক্রমণ ফিরে আসছে। কারও কারও ক্ষেত্রে ভাইরাল লোড (রক্তে ভাইরাসের পরিমাণ) কম থাকে প্রথম বারের সংক্রমণে। তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও দুর্বল হচ্ছে। রোগ প্রতিরোধের স্থায়িত্বও কম হচ্ছে। এই কারণেই সংক্রমণ ফিরে আসছে বলে মনে করা হচ্ছে। অ্যান্টিবডির স্থায়িত্ব কম হওয়ায় ফের সংক্রমণের আশঙ্কাও থাকছে।”

আরও পড়ুন: করোনা আবহে ভিটামিন ডি-র অভাব হতে পারে বিপজ্জনক, কেন জানেন?​

করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেও সতর্ক থাকুন। ফাইল ছবি

সুরক্ষা কত দিন

সুবর্ণবাবু বলেন, “ধরুন কারও করোনা হল। সে ক্ষেত্রে গড়ে তিন মাস বা ৯০ দিনের মতো সুরক্ষা দিচ্ছে অ্যান্টিবডি। যার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এমনিতেই কম, তার ক্ষেত্রে এই ৯০ দিনও কার্যকর হচ্ছে না। তাই সংক্রমণ ফিরে আসার আশঙ্কা থাকছে।”

এই প্রসঙ্গে সংক্রামক ব্যাধির চিকিৎসক অমিতাভ নন্দী বলেন, “কারও কারও সংক্রমণ ফিরে এসেছে বলে শোনা যাচ্ছে। এই নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন। রোগ প্রতিরোধের বিষয়টি এ ক্ষেত্রে অত্যন্ত জরুরি। তাই সাবধানতা অবলম্বন করতেই হবে। করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেও পরবর্তীতে বাইরে বেরলে আগের মতোই মাস্ক ব্যবহার, বার বার সাবান দিয়ে হাত ধোওয়া, স্যানিটাইজার ব্যবহারের বিষয়গুলি মাথায় রাখতেই হবে।’’

আরও পড়ুন: করোনাকালে অটিস্টিকদের নিয়ে চিন্তা, হাতে হাত মিলিয়ে লড়াই করছে এই সব নেটওয়ার্ক​

প্রায় একই কথা বলছেন মেডিসিনের চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস। তাঁর মতে, “দ্বিতীয় বার সংক্রমণের বিষয়টি নিয়ে সঠিক ভাবে বলার সময় এখনও আসেনি। বেশির ভাগ মানুষই সবেমাত্র সেরে উঠেছেন। অল্প সংখ্যক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে পুনরায় সংক্রমণের বিষয়টি। তবে এ নিয়ে আরও অনেক গবেষণা প্রয়োজন। এ বিষয়ে বিশদে বলা সম্ভব নয় কারণ ভাইরাসের সম্পূর্ণ চরিত্রই এখনও স্পষ্ট নয়। সংক্রমণ যাঁদের ‌ক্ষেত্রে ফিরে আসছে, মনে করা হচ্ছে এ জন্য রোগ প্রতিরোধ শক্তিই দায়ী। তবে ভাইরাস কালচার করা গেলে সবথেকে ভাল হয়। ফলস পজিটিভ আসছে কি না, সতর্ক থাকতে হবে সেই বিষয়েও। সে ক্ষেত্রে আরও এক বার পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে। তবেই বিষয়টা সঠিক ভাবে বোঝা যাবে।”

অ্যান্টিবডির মাত্রা কমে গেলে ফের ভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে। ফাইল ছবি

কী কারণে সংক্রমণ ফিরে আসতে পারে

রোগ প্রতিরোধ শক্তি একটা বড় কারণ হলেও আরও দু’টি সম্ভাবনা রয়েছে দ্বিতীয় বার সংক্রমণের ক্ষেত্রে, এমনই মত মেডিসিনের চিকিৎসক কল্লোল সেনগুপ্তের। তিনি বলেন,

১. কোনও ক্ষেত্রে ভাইরাস তার চরিত্র পরিবর্তন করেছে কি না তা দেখতে হবে। অর্থাৎ স্ট্রেন নতুন কি না এ বিষয়ে ভাবার প্রয়োজন রয়েছে। অ্যান্টিবডি থাকা সত্ত্বেও সে ক্ষেত্রে অন্য অ্যান্টিজেনের প্রবেশ ঘটে এমনটা হতে পারে।

২. অ্যান্টিবডি ৩ মাস মতো নিরাপত্তা দিতে পারে এমনটা মনে করা হচ্ছে। তাই এটাও একটা বড় ফ্যাক্টর। অ্যান্টিবডির মাত্রা কমে গেলে ফের ভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে।

৩. এক জন করোনা আক্রান্ত হওয়ার পরে ৬০ দিন পর্যন্ত তাঁর শরীরের ভিতরে সংক্রমণের মৃত কোষ বা ডেড ভাইরাল পার্টিকল থেকে যেতে পারে। আরটিপিসিআরের মতো যন্ত্র এত বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন যে, সেই মৃত কোষও ধরা পড়ে যায় কিছু ক্ষেত্রে। সে ক্ষেত্রে রিপোর্ট পজিটিভ আসতেই পারে। কিন্তু সেই থেকে অন্য ব্যক্তির ক্ষেত্রে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা নেই বললেই চলে।

যদিও সম্পূর্ণ বিষয়টাই রোগীর স্বাস্থ্যের উপর নির্ভর বলে জানান কল্লোলবাবু। ‘ক্লিনিক্যাল কন্ডিশন’ অর্থাৎ রোগীর কো-মর্বিডিটি আছে কি না, রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা কেমন, সার্বিক স্বাস্থ্যের দিকটি সব থেকে জরুরি, তাই এই বিষয়টা মাথায় রাখতে হবে, জানান এই চিকিৎসক।

দ্বিতীয় বার করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এলে কী করতে হবে?

শারীরিক কোনওরকম সমস্যা না হলে বাড়িতেই আইসোলেশনে থাকতে হবে। মানতে হবে সমস্ত নিয়ম। চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে প্রতি মুহূর্তে।

আরও পড়ুন: বাইরে বেরলেও কমেনি ঝুঁকি, ‘নিউ নর্ম্যাল’-জীবনে কী করবেন, কী করবেন না​

দ্বিতীয় বার রিপোর্ট পজিটিভ মানেই কি করোনা সংক্রমণ?

এই প্রসঙ্গে সংক্রামক রোগের চিকিৎসক নীতিন গুপ্তের মত, “ভাইরাসের আরএনএ আছে কি না, তা দেখা হয় আরটিপিসিআরের মাধ্যমে। অনেক সময় দেখা যায়, আরএনএ ভাইরাস চলে যাওয়ার পরেও থাকতে পারে। কিছু রোগীর ক্ষেত্রে এই ভাইরাস ৩০ দিন পর্যন্ত থাকতে পারে।”

সে ক্ষেত্রে কী ধরে নিতে হবে?

কারও করোনা হয়েছে, জ্বর নেই, উপসর্গও নেই। তিনি সেরে গেলেন। পরে অন্য কারণে এমনি ঠান্ডা লেগে জ্বর বা কাশি হল, তখন ভিতরে থেকে যাওয়া ভাইরাসের পুরনো আরএনএ-র অস্তিত্ব মিলতে পারে পিসিআর টেস্টে। তার মানেই যে সংক্রমণ আছে, তা নয়। খুব কম উপসর্গ রয়েছে যাঁদের, তাঁদের বেশির ভাগের থেকেই ৭-৮ দিন পর সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে না। কারও ক্ষেত্রে করোনা সেরে গিয়ে ডেঙ্গি সংক্রমণ হল, সে ক্ষেত্রেও জ্বর আসতে পারে। তখন করোনা টেস্ট পজিটিভ আসা মানেও সংক্রমণ ঘটেছে এমন নয়। সেটা সংক্রমিত করতে পারে কি না, তা কালচার করে দেখে বলা সম্ভব বলেই জানান নীতিনবাবু।

আরও পড়ুন: চাই সুস্থ জীবন, কোন কোন বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে? কী বললেন চিকিৎসকেরা?​

মুম্বইয়ের ধারাভি বস্তিতে সংক্রমিতের সংখ্যা এপ্রিল মাসে বাড়তে শুরু করেছিল। কন্টেনমেন্ট স্ট্র্যাটেজির মাধ্যমে তা নিয়ন্ত্রণে আসে। সংক্রামক রোগের চিকিৎসক সায়ন্তন বন্দ্যোপাধ্যায় যুক্ত ছিলেন সেই কাজে। দ্বিতীয় বার সংক্রমণের বিষয়ে তিনি বলেন, “এটি নিয়ে এখনও সংশয় রয়েছে। চিন, দক্ষিণ কোরিয়া, ফ্রান্সে যে স্টাডি হয়েছে, সেখানে দ্বিতীয় দফায় কোভিড পজিটিভ হয়েছে। এটা হতে পারে ভাইরাস শরীরেই ছিল, নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছিল, রোগীও সুস্থ হয়ে গিয়েছিলেন, কিছু দিন পরে তা সক্রিয় হয়েছে। আরেকটা কারণ হতে পারে, ফের সংক্রমণ। সংক্রমণ ফের হয়েছে কি না, তা জানতে ভাইরাস কালচার করে জেনেটিক সিকোয়েন্সিং করা প্রয়োজন প্রতিটি নমুনার। এই মুহূর্তে শুধু ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজিতে হয় এটি। তবে রোজ ৫ থেকে ৭ লক্ষ নমুনায় তা পরীক্ষা করা সম্ভব নয়। আর এই অসুখটার বয়স মাত্র কয়েক মাস, তাই এটা নিয়ে নিশ্চিত ভাবে এখনই বলা সম্ভব নয়।”

করোনা চিকেন পক্স ভাইরাসের মতো নয় যে এক বার রোগ হলে আর হবে না। ফাইল ছবি

ফ্রান্স, চিন, দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রামাণ্য কেস স্টাডি রয়েছে, তাতে দেখা গিয়েছে কোভিড সেরে গিয়ে ১০-৪৫ দিনের মধ্যে (গড়ে) জ্বর ও কাশির উপসর্গ, ফের পজিটিভ এসেছে আরটিপিসিআরে। কিন্তু এটা নিষ্ক্রিয় হয়ে ভাইরাস সক্রিয় হয়ে উঠল (রি-অ্যাক্টিভেশন), নাকি ফের সংক্রমণ, তা নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন। যদি চার থেকে পাঁচ মাসের বিরতি নিয়ে কারও সংক্রমণ হয়, তা হলে বলা যেতে পারে ফের সংক্রমণ। কিন্তু যে কেসগুলি এ রাজ্যে শোনা গিয়েছে, বেশির ভাগই প্রথম বার সেরে যাওয়ার দু’মাসের মধ্যেই ঘটেছে, জানালেন সায়ন্তনবাবু।

দ্বিতীয় বার সংক্রমণের সঙ্গে কি কো-মর্বিডিটির যোগ রয়েছে?

রোগের ভয়াবহতার সঙ্গে থাকলেও ফের সংক্রমণের ক্ষেত্রে সে ভাবে এর যোগ নেই বলা যেতে পারে, কারণ স্টাডিতে দেখা গিয়েছে, ১৯ বছর বয়সি যুবক থেকে ৯১ বছর বয়সি বৃদ্ধাও রয়েছেন, এমনটাই জানালেন সায়ন্তনবাবু।

তাঁর কথায়, “করোনা ভাইরাস চিকেন পক্স ভাইরাসের মতো নয় যে এক বার হলে আর কখনও হবে না। তাই ফের সংক্রমণ হতেই পারে। এই ভাইরাসের অ্যান্টিবডি ২ থেকে ৩ বছর পর্যন্ত থাকে শরীরে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি দিন থাকে না। অনেক সময় স্টেরয়েড ইত্যাদির কারণে অ্যান্টিবডি কমে যেতে পারে। তিন মাস পরেই যদি অ্যান্টিবডি কমে যায়, তা হলে তো এপ্রিল-মে মাসে যাঁরা সংক্রমিত হয়েছিলেন, অনেকের মধ্যেই তো পুনরায় সংক্রমণ হওয়ার কথা অগস্টে। কিন্তু সেটা তো হয়নি। কিন্তু এতটা ভয়ানক পরিস্থিতি নাও হতে পারে যে প্রতি তিন মাস অন্তর কেউ করোনা আক্রান্ত হতে থাকবেন। হাত পরিষ্কার রাখা, মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নিয়মগুলি মানতে হবে, কারণ এর কোনও বিকল্প নেই।”

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

করোনা কোভিড-১৯ Corona Coronavirus COVID-19 Immunity

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।