Advertisement
E-Paper

‘কোভিড-মুখোশ’-এর হাত ধরে ভ্যাকসিনে সাফল্য?

ভাইরাসের যে সব প্রোটিনের ‘ভিরুলেন্স ফ্যাক্টর’, অর্থাৎ শরীরে ক্ষতির ক্ষমতা রয়েছে, তা দিয়ে ভ্যাকসিন বানানো হয় না। বরং সেই প্রোটিনগুলিকে বেছে নেওয়া হয়, যেগুলি ক্ষতিকর নয়।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

দেবাশিস ঘড়াই

শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৫:৩৬
Share
Save

কোভিডের ‘মুখোশ’ শিম্পাঞ্জির অ্যাডেনোভাইরাসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করিয়ে দেখা হচ্ছে ফলাফল। দেখা হচ্ছে, ওই ‘মুখোশ’-এর বিরুদ্ধে শরীর কী ভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে। কারণ, এই তত্ত্বের উপরেই করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনের সাফল্য বা ব্যর্থতা নির্ভর করছে, জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

কোভিডের ‘মুখোশ’ কী? বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, করোনাভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনই হল সেই মুখোশ। এই স্পাইক প্রোটিন করোনার অংশ হলেও ক্ষতিকর নয়। শুধুমাত্র ‘অ্যাটাচমেন্ট প্রোটিন’। এখন ভ্যাকসিন তৈরির প্রক্রিয়ায় এই প্রোটিনকে বেছে নেওয়ার কারণ, এর মাধ্যমে শরীরে কোনও ক্ষতি হবে না। কোভিড গবেষণার সঙ্গে যুক্ত এক বিজ্ঞানী জানাচ্ছেন, যখনই কোনও নতুন ভাইরাস আবিষ্কার হয় (এ ক্ষেত্রে যেমন সার্স কোভ-২), তার জেনেটিক সিকোয়েন্স বার করে ফেলা হয়। অর্থাৎ, সেই ভাইরাসের প্রোটিনগুলি কী কী কাজ করছে তা বোঝার চেষ্টা করা হয়। যাতে ভ্যাকসিন তৈরির সময়ে সেই প্রোটিন কাজে লাগানো যায়।

তবে একটি বিষয় লক্ষ রাখতে হয়। ভাইরাসের যে সব প্রোটিনের ‘ভিরুলেন্স ফ্যাক্টর’, অর্থাৎ শরীরে ক্ষতির ক্ষমতা রয়েছে, তা দিয়ে ভ্যাকসিন বানানো হয় না। বরং সেই প্রোটিনগুলিকে বেছে নেওয়া হয়, যেগুলি ক্ষতিকর নয়। যেমন, করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে তার স্পাইক প্রোটিন ‘ভিরুলেন্ট প্রোটিন’ নয়। ওই বিজ্ঞানীর কথায়, ‘‘এমন কৌশল করে এটা বেছে নেওয়া হয়েছে যে এর বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি হলে কোভিড ১৯ ভাইরাস কোষে আটকাতেই পারবে না। কিন্তু অ্যান্টিবডি তৈরি না হলেও কোনও ক্ষতি হবে না। কারণ, এটা ক্ষতিকর প্রোটিন নয়, শুধুই অ্যাটাচমেন্ট প্রোটিন।’’

আরও পড়ুন: ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষ না করে বাজারে কোভিড টিকা নয়, জানাল তিন মার্কিন ওষুধ কোম্পানি

আরও পড়ুন: কোভিডের উপসর্গে জ্বরের দোসর হাত-পা ব্যথা? কী খেয়াল রাখতেই হবে?

এই অ্যাটাচমেন্ট প্রোটিন শরীরে কী ভাবে প্রবেশ করানো হবে? ঘটনাপ্রবাহ বলছে, ২০১৪ সালে ইবোলা সংক্রমণের পরে প্রথম বার আন্তর্জাতিক গবেষক মহল বুঝতে পেরেছিল, ক্রমবর্ধমান প্যাথোজেনের আগ্রাসন রুখতে একটি রেডিমেড প্ল্যাটফর্মের প্রয়োজন। যার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট প্যাথোজেনের বিরুদ্ধে দ্রুত অ্যান্টিবডি তৈরি করা যাবে। এবং যে প্ল্যাটফর্মকে রোগ বিশেষে ‘পার্সোনালাইজ়’ করা যাবে। অর্থাৎ এ, বি, সি, যে ভাইরাস বা ব্যাক্টিরিয়াই আসুক না কেন, তার জিন ওই প্ল্যাটফর্মে ঢুকিয়ে দ্রুত অ্যান্টিবডি তৈরি করতেই সংশ্লিষ্ট প্ল্যাটফর্মের ধারণার সূত্রপাত।

অক্সফোর্ডের স্যাডক্স হল সেই রকমই এক প্ল্যাটফর্ম, জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। যেখানে শিম্পাঞ্জির অ্যাডেনোভাইরাসকে পঙ্গু করে (যাতে সে ক্ষতি না করতে পারে, কিন্তু সংক্রমিত করতে পারে) তার মধ্যে কোভিড ১৯-এর স্পাইক প্রোটিনকে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। শিম্পাঞ্জির অ্যাডেনোভাইরাস শরীরে প্রবেশ করলে সেটার বৃদ্ধি হবে এবং তা থেকে স্পাইক প্রোটিন বার হবে, যার বিরুদ্ধে শরীর অ্যান্টিবডি তৈরি করবে। দিল্লির ‘অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস’-এর (এমস) এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘অর্থাৎ মুখ (ভিরুলেন্ট প্রোটিন নয়) নয়, বরং কোভিডের মুখোশ (অ্যাটাচমেন্ট প্রোটিন) ঢোকানো হচ্ছে এই ভ্যাকসিনের মাধ্যমে। উদ্দেশ্য হল, শরীরের প্রতিরোধ শক্তি যাতে ওই ভাইরাসকে চিনতে পারে, বুঝতে পারে যে কোভিড কেমন দেখতে হয়। এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে অ্যান্টিবডি তৈরি করতে পারে।’’ এমস-এর সংক্রামক রোগ চিকিৎসক সায়ন্তন বন্দ্যোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, এর পরে যখন প্রকৃত ভাইরাস শরীরে ঢুকবে, তখন তার বিরুদ্ধে শরীর আপনা থেকেই অ্যান্টিবডি তৈরি করতে পারবে এবং সংশ্লিষ্ট ভাইরাসকে ‘নিউট্রালাইজ়’ করতে পারবে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘অক্সফোর্ড যে প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করছে, সেই স্যাডক্সের সুরক্ষা (সেফটি) ও ইমিউনোজেনেসিটি ইতিমধ্যেই প্রমাণিত। ফলে সেটা এক দিক থেকে সুবিধাজনক। এ বার সেই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে কত দ্রুত অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে, তার উপরেই করোনা ভ্যাকসিন গবেষণার সাফল্য অনেকটাই নির্ভর করছে।’’

Coronavirus Coronavirus Vaccine

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।