হৃদয় মুদ্রা। অলঙ্করণ: শৌভিক দেবনাথ।
হৃদয় মুদ্রা
হৃদয় মানে যে হৃৎপিণ্ড, এ কথা আমরা সবাই জানি। যে কোনও মুদ্রার আসল উদ্দেশ্য ধ্যান বা মেডিটেশন করে শরীরের অন্তর্নিহিত শক্তিকে ধরে রাখা। আমাদের হাতের আঙুল দিয়ে কিছু শক্তি বাইরে বেরিয়ে যায়। হৃদয়মুদ্রার সাহায্যে সেই শক্তিকে পুনরায় শরীরের মধ্যে ফিরিয়ে আনা হয়। এই মুদ্রার ভঙ্গিমা সরাসরি হৃৎপিণ্ডে শক্তি ফিরিয়ে দিতে সাহায্য করে।
কী ভাবে করব
• ম্যাটের ওপর পা মুড়ে সোজা হয়ে বসুন। মেরুদণ্ড যেন টানটান থাকে। হাঁটুর অসুবিধে থাকলে চেয়ারে পা ঝুলিয়ে সোজা হয়ে বসুন। চোখ বন্ধ করে ধীরে ধীরে শ্বাস প্রশ্বাস নিন।
• এ বার চোখ খুলে জ্ঞানমুদ্রা বা চিনমুদ্রার ভঙ্গীতে তর্জনি বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠের গোড়ায় ঠেকান। মধ্যমা আর অনামিকার আগা বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠের আগায় ছুঁইয়ে রাখুন। কনিষ্ঠা সোজা থাকবে।
• এই ভাবে দুই হাত রাখুন দুই হাঁটুর ওপরে। করতল থাকবে ওপরের দিকে মুখ করে।
• চোখ বন্ধ করে ধীরে শ্বাসপ্রশ্বাস নিন, মন শান্ত রাখুন।
• শরীর স্থির রাখতে হবে ও গভীর শ্বাস প্রশ্বাসের দিকে খেয়াল রাখুন। এই অবস্থানে যত ক্ষণ সম্ভব বসে থাকার চেষ্টা করুন।কিছু ক্ষণ এই ভাবে থাকার পর নিজেই অনুভব করবেন হৃৎপিণ্ড অনেকটা শক্তি সঞ্চয় করে তরতাজা হয়ে উঠেছে।
মনে রাখবেন
দিনের যে কোনও সময় হৃদয়মুদ্রা অভ্যাস করতে পারেন। ভরপেট খাওয়ার ১০ মিনিট পরেও এই মুদ্রা অভ্যাস করা যায়।
কেন করব
হৃদয়মুদ্রা অভ্যাস করলে হাতের আঙুল থেকে শরীরে সঞ্চিত শক্তি হৃৎপিণ্ডে প্রবাহিত হয়। তাই তরতাজা লাগে। একই সঙ্গে জীবনী শক্তি উজ্জীবিত হয়। মধ্যমা, অনামিকা ও বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ একত্রে এক অদৃশ্য শক্তির প্রবাহ সৃষ্টি করে, যা সরাসরি হৃৎপিণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত। এই শক্তির যোগের বিজ্ঞান সম্মত নাম নাদি। আর এই কারণেই হৃদয়মুদ্রা অভ্যাস করলে হৃৎপিণ্ড সুস্থ থাকে, সমস্যা চলে যায়। বিশেষ করে ইসকিমিক হার্টের সমস্যা থাকলে এই আসনটি অত্যন্ত উপযোগী। যে কোনও জটিল শারীরিক সমস্যাতেও এই মুদ্রা অভ্যাস করলে কোনও সমস্যা হয় না। বরং শারীরিক কষ্ট কিছুটা কমে। অনেকের মতে হৃৎপিণ্ড ও মস্তিষ্ক থেকে আমাদের আবেগ নিয়ন্ত্রিত হয়। হৃদয় মুদ্রা নিয়মিত অভ্যাস করলে ভালবাসা, দুঃখ, সাহস, ঘৃণা, রাগ এ সব আবেগ অনেক নিয়ন্ত্রণে থাকে। তাই হৃদয়মুদ্রা নিয়ম করে অভ্যাস করে সুস্থ থাকুন, মন ভাল রাখুন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy