চিন মুদ্রা। অলঙ্করণ: শৌভিক দেবনাথ।
চিনমুদ্রা
জ্ঞানমুদ্রার মতোই আর একটি মুদ্রা এই চিনমুদ্রা। এটি আদতে স্নায়বিক শক্তি আটকে রাখার এক বিশেষ কৌশল। ‘চিন’ শব্দের ‘চিত্ত’ বা ‘চেতনা’। চিনমুদ্রার সাহায্যে বিশেষ শারীরিক ভঙ্গিমায় অন্তর্নিতিহ চেতনা বাড়ানো হয়।
কী ভাবে করব
• ম্যাটের উপর মেরুদণ্ড সোজা করে পা মুড়ে বসুন। হাঁটু বা কোমরে ব্যথা থাকলে বা মাটিতে বসতে অসুবিধা থাকলে চেয়ারে পা ঝুলিয়েও বসতে পারেন।
• দু’হাতের আঙুল ঢিলে করে রাখুন। এ বার তর্জনী ভাঁজ করে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠের গোড়ায় নিয়ে আসুন।
• বাকি তিন আঙুল আলগা ভাবে খোলা থাকবে।
• দুই হাঁটুর ওপর দুই হাত চিনমুদ্রা ভঙ্গিতে রাখুন।
• দুই হাতের বাকি তিনটে করে আঙুল সুবিধা অনুযায়ী অল্প ফাঁক করে, স্বছন্দ বোধ করেন এমন অবস্থায় রাখুন।
• দুই হাত টানটান করে না রেখে আলতো করে হাঁটুর উপর রাখুন, করতল থাকবে উপরের দিকে।
• এই অবস্থানে কনুই ও হাত টানটান না রেখে আরামদায়ক ভাবে থাকে সে দিকে খেয়াল রাখুন। এই অবস্থানে স্বাভাবিক শ্বাসপ্রশ্বাস নিন ও চোখ বন্ধ করে ২–৩ মিনিট বসে থাকুন।
• কাজের ফাঁকে সময় পেলে ২-৩মিনিট চিনমুদ্রা অভ্যাস করলে ক্লান্তি ও চাপ কমবে।
চিনমুদ্রা অভ্যাস করার সময় তর্জনী রাখতে পারেন বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠের ডগায়। এই পদ্ধতিটিও সঠিক।
কেন করব?
মেডিটেশন এবং প্রাণায়ামের একটি বিশেষ ভঙ্গিমা চিনমুদ্রা। তর্জনী ও বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠকে লক করে ধ্যান এবং এই জাতীয় আসন অভ্যাস করলে মন আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে। এই মুদ্রা অভ্যাস করলে একাগ্রতা বাড়ে। অনিদ্রার সমস্যা দূর হয়।
তর্জনী যখন বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠের আগা বা গোড়ায় ছুঁইয়ে রাখা হয়, তখন হাতের আঙুলের স্নায়ুর শক্তি বাইরে বেরিয়ে না গিয়ে আবার শরীরের মধ্যেই প্রবাহিত হয়। হাত খোলা থাকায় সব সময় এই শক্তি পরিবেশে বিলীন হয়ে যায়। কিন্তু চিনমুদ্রা অভ্যাসের সময় শরীরের অন্তর্নিহিত শক্তি আবার শরীরের মধ্যেই ফিরে এসে মস্তিষ্ককে উজ্জীবিত করে। চিনমুদ্রার সাহায্যেও প্রাণ অর্থাৎ শরীরের অন্তর্নিহিত শক্তি শরীরে প্রবাহিত হয়। আধ্যাত্মিক শক্তির বোধ জাগে। শরীর ও মন দুইই শান্ত ও সমাহিত থাকে। নিয়মিত অভ্যাস করলে শরীর ও মনের যাবতীয় টেনশন ও উদ্বেগের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। হাঁটুতে বিশেষ ভঙ্গিতে হাত রেখে চিনমুদ্রা অভ্যাস করলে শরীর ও মন হালকা থাকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy