সার্জিক্যাল মাস্ক। ছবি- এএফপি।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে এখন রাস্তাঘাটে, বাসে, ট্রেনে সকলকেই সাধারণ সার্জিক্যাল মাস্ক পরে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেটা একেবারেই অর্থহীন। সকলের মাস্ক পরে ঘোরাঘুরির কোনও দরকার নেই।এমনকি, ‘এন-৯৫’ জাতীয় মাস্ক বেশি ক্ষণ পরে থাকলে হিতে বিপরীতও হতে পারে।
মাস্ক পরার ব্যাপারে চিকিৎসকরা কী বলছেন, এ বার জেনে নেওয়া যাক।
চিকিৎসকদের বক্তব্য, প্রায় সকলকেই এখন রাস্তাঘাটে, বাসে, ট্রেনে যে সার্জিক্যাল মাস্ক পরে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যাচ্ছে, তার কাপড় আর নাক, মুখের মধ্যে যে জায়গাটুকু থাকে তার মধ্যে দিয়ে অনায়াসে ঢুকে পড়তে পারে যক্ষা ও করোনার মতো যে কোনও ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ভাইরাসই। তাই এই মাস্ক তাঁদের কোনও রক্ষাকবচ নয়।
চিকিৎসকরা এও বলছেন, এমনকি, ‘এন-৯৫’ জাতীয় মাস্ক পরে সব সময় ঘুরে বেড়ানোর চেষ্টা করলে বরং হিতে বিপরীত হতে পারে। কারণ, মিনিট দশ-পনেরোর বেশি এই জাতীয় মাস্ক পরে থাকলে শ্বাসকষ্টজনিত নানা ধরনের রোগ হতে পারে।
চিকিৎসক সব্যসাচী সেনগুপ্ত ও সুমিত সেনগুপ্ত জানাচ্ছেন, সর্দি, কাশিতে যাঁরা খুব ভোগেন, তাঁদেরই সব সময় এই মাস্ক পরে ঘোরাঘুরি করা উচিত। কারণ, হাঁচি, কাশির সময় নাক ও মুখ থেকে বেরনো ড্রপলেটসেই যক্ষা, করোনা-সহ নানা ধরনের ভাইরাস ও জীবাণু থাকতে পারে। আর যক্ষা ও করোনা মূলত এই ড্রপলেটসের মাধ্যমেই ছড়ায়। তাই যাঁরা প্রায়ই সর্দি, কাশিতে ভোগেন, তাঁরা সব সময় মাস্ক পরে থাকলে তাঁদের থেকে সংক্রমণের আশঙ্কা কমে যাবে। চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, করোনা আক্রান্ত ও সন্দেহভাজন ও তাঁদের যাঁরা দেখভাল করেন, তাঁদেরই সব সময় মাস্ক পরে থাকা উচিত। সেটা সাধারণ সার্জিকাল মাস্ক হলেও চলবে।
সুমিত বলছেন, ‘‘সাধারণ সার্জিক্যাল মাস্ক পরে শুধু করোনা কেন, কোনও ভাইরাস বা জীবাণুর আক্রমণই ঠেকানো সম্ভব নয়। কারণ, ওই মাস্ক পরলেও ভাইরাস বা জীবাণুরা আমাদের শরীরে ঢুকে পড়ার পর্যাপ্ত জায়গা পেয়ে যায়। মাস্ক তো আর নাক, মুখের মতো পুরোপুরি চেপে বসে না। তার মধ্যে দিয়ে তো আমরা শ্বাস নিই। ফলে, বাতাস আসা-যাওয়ার রাস্তা আছে। মাস্কের কাপড় আর নাক, মুখের মধ্যে সেই জায়গাটা দিয়েই ভাইরাস বা জীবাণুরা অনায়াসে ঢুকে পড়তে পারে।’’
সব্যসাচী এও জানাচ্ছেন, সাধারণ মানুষ যদি বাসে, ট্রেনে, রাস্তাঘাটে ‘এন-৯৫’ জাতীয় মাস্ক পরে ঘোরাঘুরি করেন, তাতে বরং হিতে বিপরীত হতে পারে। কারণ, টেনে ব্যান্ড বেঁধে এবং নাকের ব্রিজ চেপে যদি সঠিক পদ্ধতিতে ‘এন-৯৫’ জাতীয় মাস্ক পরা হয়, তা হলে এই মাস্ক পরে বেশি ক্ষণ থাকা অসম্ভব। তাতে দম আটকে আসে। ফলে, এই মাস্ক সকলের সব সময় পরে থাকা সম্ভব নয়। তা ছাড়া, এই মাস্ক পরলেও সংক্রমণ পুরোপুরি রোখা অসম্ভব।
আরও পড়ুন- করোনা সতর্কতা: হাঁচি-কাশির সময় তালু নয়, মুখ ঢাকুন বাহু দিয়ে
আরও পড়ুন- করোনা, বার্ড ফ্লু না কি সোয়াইন ফ্লু? বুঝবেন কী করে
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy