ছবি- শাটারস্টকের সৌজন্যে।
জ্বর, সর্দি, কাশি হলেই কি তা হলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছে বলে আপনি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়বেন? নিজেকে গৃহবন্দি করে ফেলবেন? ছুটে যাবেন করোনাভাইরাস সংক্রমণ হয়েছে কি না সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষানিরীক্ষা করাতে?
চিকিৎসকেরা বলছেন, না। তার কোনও দরকার নেই। তাতে অযথা মানুষকে ভীতসন্ত্রস্ত করে তোলা হবে। কারণ, মরসুম বদলালে অনেকেরই জ্বর, সর্দি, কাশি হয়। যাঁরা ‘ক্রনিক পেশেন্ট’, তাঁদের তো আকছারই হয় জ্বর, সর্দি, কাশি।
কিন্তু এখন যা পরিস্থিতি, তাতে ডাক্তারদের পরামর্শ, জ্বর, সর্দি, কাশি হলেই চলে যান ডাক্তারের চেম্বারে। দেরি করবেন না। বা অবহেলা করে বাড়িতেই চেনাজানা ওষুধ খেয়ে তা কমানোর চেষ্টা করবেন না। তা হলে বরং হিতে বিপরীত হতে পারে।
চেম্বারে গেলে চিকিৎসকেরা আপনাকে কী কী প্রশ্ন করতে পারেন?
কলকাতার এক জন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অরিন্দম বিশ্বাস বলছেন:
জ্বর হলেই জানতে চাওয়া হবে তা কত দিন হয়েছে? জ্বর দিনে ক’বার আসছে? সেটা কী ভাবে কতটা ওঠানামা করছে? জ্বর কি কাঁপুনি দিয়ে আসছে?
প্রথম সাক্ষাতেই আপনার কাছ থেকে এই সব কিছু জেনে নেওয়া হবে। যদি দেখা যায় জ্বরটা কাঁপুনি দিয়ে আসছে, তা হলে ম্যালেরিয়ার সম্ভাবনা খুঁজে দেখতে শুরু করবেন চিকিৎসকেরা। যদি দেখা যায় জ্বরটা ছেড়ে বা কমে গিয়ে দিনদু’য়েক পর তা আবার প্রবল ভাবে ফিরে আসছে, তা হলে ডেঙ্গির সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখবেন ডাক্তাররা।
আরও পড়ুন: কলকাতায় দ্বিতীয় করোনা আক্রান্তের হদিশ, লন্ডনফেরত তরুণের শরীরে কোভিড-১৯
আরও পড়ুন: করোনায় চতুর্থ মৃত্যু দেশে, প্রায় তালাবন্ধ পঞ্জাব
এর পর ডাক্তার আরও তিনটি প্রশ্ন করতে পারেন
জ্বরের সঙ্গে কি কাশি হচ্ছে খুব? সেই কাশিটা কি শুকনো কাশি? নাকি সেই কফের সঙ্গে ঘন কফও উঠে আসছে?
শুকনো কাশি হলে করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনার কথা ভাববেন ডাক্তাররা। তবে নিশ্চিত হতে তাঁদের আরও কয়েকটি ধাপ এগতে হবে।
আর যদি শুকনো কাশি না হয়, কাশির সঙ্গে আপনার খুব ঘন কফ উঠে আসে, তখন ডাক্তার আপনার কাছে জানতে চাইবেন:
সেই কফের রংটা কী? সেটা সাদা নাকি হলুদ অথবা লাল?
অরিন্দম বলছেন, ‘‘কারও কফ যদি সাদা হয়, তা হলেই ডাক্তার বুঝে যাবেন, তিনি ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের শিকার হয়েছেন। তখন সেই সংক্রমণ থেকে বের করে আনতে তাঁকে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হবে।’’
কফের রং যদি হলুদ বা লাল হয়?
অরিন্দমের বক্তব্য, সেই সময় থেকেই ডাক্তারদের পরবর্তী ধাপগুলির কথা ভাবতে হবে। কফের রং হলুদ হলেই সেটা চিন্তার কারণ হয়ে উঠবে। আর রং লাল হলে তো কথাই নেই।
সে ক্ষেত্রে ডাক্তার কী কী জানতে চাইবেন?
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, তখন ডাক্তাররা রোগীর কাছে জানতে চাইবেন:
বিদেশ থেকে আসা কারও সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়েছে কি না? হলে কত দিন আগে হয়েছে? তিনি কোন দেশ থেকে কোন রুট ধরে কলকাতায় এসেছেন? বিদেশ থেকে ফেরা কত জনের সঙ্গে তিনি গত দু’-এক সপ্তাহের মধ্যে দেখা করেছেন? তাঁদের কতটা ঘনিষ্ঠ হয়েছেন?
এই ভাবে রোগীর কাছ থেকে তাঁর গত কয়েক দিনের জীবনযাপনের ‘হিস্ট্রিটা জেনে নেবেন ডাক্তাররা।
তার পর ডাক্তাররা রোগীকে কী পরামর্শ দিতে পারেন?
বলতে পারেন বুকের এক্স-রে করাতে। বিদেশিদের সঙ্গে সাক্ষাতের ‘হিস্ট্রি’ পেলে আর বুকের এক্স-রে রিপোর্টে সন্দেহজনক কিছু পেলেই ডাক্তাররা আপনাকে বলবেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছে কি না সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে প্রয়োজনীয় রক্তপরীক্ষা করান। গলা ও নাকের মধ্যে থাকা থুতু পরীক্ষাও করাতে বলবেন তখন চিকিৎসকেরা।
তাই চিকিৎসকদের পরামর্শ, জ্বর, সর্দি, কাশি হলেই অযথা আতঙ্কিত হয়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণের পরীক্ষার জন্য ছুটোছুটি করে লাভ নেই। বরং দেরি না করে ডাক্তারের কাছে যান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy