কোভিড-১৯ তথা করোনাভাইরাস কিছুটা দমিয়ে রাখতে পারে যক্ষ্মার টিকা অর্থাৎ বিসিজি টিকা। ‘নিউ ইয়র্ক ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি’-র বায়ো মেডিক্যাল সায়েন্সের গবেষকদের দাবি এমনটাই।
এই গবেষণার নেতৃত্বে রয়েছেন সহকারী অধ্যাপক গঞ্জালু ওটাজু। তাঁর দাবি, যাঁদের যক্ষ্মার টিকা নেওয়া রয়েছে, তাঁদের কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে শ্বাসনালী ও ফুসফুস তুলনামূলক ভাবে কম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অন্য দিকে যে সব দেশে বিসিজির টিকা দেওয়া হয় না সেখানে রোগ মারাত্মক আকার নেয় এবং মৃত্যুহারও তুলনামূলক ভাবে অনেক বেশি।
ইতালি, আমেরিকা, ইংল্যান্ড এবং নেদারল্যান্ডসে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এবং মৃত্যুর পরিসংখ্যান উল্লেখযোগ্য হারে বেশি। অন্য দিকে ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, কম্বোডিয়া, তাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম ও জাপানে জানুয়ারি মাসে রোগের প্রকোপ শুরু হলেও এখনও খুব বেশি প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি। বিজ্ঞানীদের দাবি, বিসিজি টিকা দেওয়া থাকলে শ্বাসনালী ও ফুসফুস কিছুটা বাড়তি সুরক্ষা পায়।
আরও পড়ুন: করোনা চিকিৎসায় এ বার ‘ব্লাড ট্রান্সফিউশন’, এটি কেমন পদ্ধতি? কতটা লাভ হবে?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র ডিরেক্টর জেনারেল মেডিক্যাল জার্নাল পাব মেডকে জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত করোনাভাইরাসের গতিপ্রকৃতি দেখে অনুমান করা হচ্ছে বিসিজি টিকা অর্থাৎ যক্ষ্মার র টিকা যক্ষ্মার জীবানু ছাড়াও অন্যান্য শ্বাসনালীর সংক্রমণকে কিছুটা প্রতিরোধ করতে পারে। যদিও এই কোভিড-১৯ ঘন ঘন চরিত্র বদল করতে পারে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে যে সব দেশে বিসিজি টিকা দেওয়া বাধ্যতামূলক, সে সব দেশে এর আক্রমণের হার কম। তাই অনেক দেশে খড়কুটো আঁকড়ে ধরার মতো বয়স্ক মানুষদের বিসিজি টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সম্প্রতি ‘জন হপকিন্স ব্লুমবার্গ স্কুল অব পাবলিক হেলথ এক্সপার্ট কমিটি’-র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে তাঁরা গবেষণা করে জানার চেষ্টা করছেন যে বিসিজি টিকা নেওয়া হলে ইনেট ইমিউনিটি অর্থাৎ শরীরের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা আদৌ বাড়ে কি না। ইতিমধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় ৪হাজার স্বাস্থ্যকর্মীকে বিসিজির টিকা দেওয়া হয়েছে।
তা হলে বিসিজি নেওযা দেশ হিসেবে সত্যিই কি আমাদের দেশে সার্স করোনাভাইরাস সেভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারবে না? ‘ইন্ডিয়ান অ্যাকাডেমি অব পেডিয়াট্রিক্সে’-এর সদস্য শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ পল্লব চট্টোপাধ্যায় জানালেন, ‘‘এই ভাইরাসের চরিত্র সম্পর্কে এখনও অনেক কিছু জানা যায়নি। যে গবেষণা চলছে তা সত্যি প্রমাণিত হলে কিছুটা দুশ্চিন্তামুক্ত হওয়া যাবে। এখনও পর্যন্ত এই ভাইরাসের সংক্রমণ বয়স্কদের ক্ষেত্রে মারাত্মক। বিশেষ করে যাঁরা আগে থেকেই অন্য কোনও রোগে ভুগছেন তাঁদের বেলায় এই ভাইরাসের সংক্রমণ হলে বিপদ বাড়ে।
আরও পড়ুন: স্যানিটাইজার না সাবান? এই মুহূর্তে কোনটা বেশি প্রয়োজনীয়
তবে বেশিরভাগ শিশুর ক্ষেত্রেই অসুখটি তুলনামূলক ভাবে কম বিপজ্জনক। কিন্তু যে সব অঞ্চলে দূষণ বেশি ও যে সব শিশুর অ্যালার্জিজনিত হাঁপানি, জন্মগত হার্টের ত্রুটি বা অন্যান্য সমস্যা আছে তাদের সংক্রমণ গুরুতর হতে পারে। বিসিজি দেওয়া আছে বলে প্রতিরোধের উপর গুরুত্ব না দিলে, বিপদে পড়ার ঝুঁকি ষোলো আনা। তাই এই সময় শিশুদের বাড়ি থেকে কোনও কারনেই বাইরে নিয়ে যাবেন না। সামান্য অসুখবিসুখের জন্য টেলিফোনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। একই সঙ্গে সাবন দিয়ে হাত ধোওয়া, মুখে-নাকে হাত না দেওয়ার মতো অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy