E-Paper

মানসিক বিকাশে নজর থাকুক সুষম খাবারে

পরিমাণে বেশি নয়, গুণমান বেশি এমন খাবার বেছে নিন অটিজ়মে আক্রান্ত শিশুদের জন্য।

An image of Vegetables

—প্রতীকী চিত্র।

অরিতা ধারা ভট্ট

শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৭:৫৯
Share
Save

অটিজ়ম কেন হয়, তার উত্তর এখনও অজানা। তবে পরিস্থিতিকে গ্রহণ করতে পারলেই বেশ কয়েকটা ধাপ এগিয়ে যাওয়া যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য অনুযায়ী, প্রতি একশো জন শিশুর মধ্যে এক জন ‘অটিস্টিক স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডারের’ শিকার। এই শিশুদের মানসিক বিকাশ আর পাঁচ জনের মতো নয়। তাই অভিভাবকদের অবর্তমানেও যাতে তারা সুস্থ, স্বাভাবিক জীবন কাটাতে পারে, তার জন্য তাদের স্বাবলম্বী করে তোলা জরুরি। বুদ্ধির বিকাশের সঙ্গে গোড়া থেকেই শিশুটির খাদ্যাভ্যাসে জোর দেওয়া জরুরি। যাতে সব বাধা পেরিয়ে যেতে মস্তিষ্ককে সঙ্গত করতে পারে তার শরীর।

সন্তান কী খাবে, কেন খাবে

পুষ্টিবিদ সুবর্ণা রায়চৌধুরীর কথায়, “দু’বছর বয়স থেকেই সুষম খাবার দেওয়া জরুরি। কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রেখে ভিটামিন, প্রোটিন, মিনারেল খাবারে বেশি থাকা ভাল। বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের নড়াচড়া কমে যায়, তাই স্থূলতা দূরে রাখতেও খাবারে নজর দেওয়া জরুরি।” সুবর্ণার মতে, অটিস্টিক শিশুদের খাবারের দিকে ঝোঁক বেশি থাকে অনেক সময়। পরিমাণ না বুঝে বেশি খাওয়ার প্রবণতা থাকে। সে ক্ষেত্রে ভাতের পরিমাণ কমিয়ে ওটস, রুটি দেওয়া যেতে পারে। রোজ নানা আনাজপাতি ও ফল খুবই জরুরি। “আম, কাঁঠাল, আতার মতো ফলের পরিবর্তে মুসাম্বি, আঙুর, আপেল, কিউয়ি দিতে হবে। চোখের সমস্যা এড়াতে কুমড়ো, গাজর খেতে হবে। এ ছাড়া ছোটদের সাধারণত যা দেওয়া হয় না, যেমন কফি বা গ্রিন টি— সেটাও দেওয়া যেতে পারে। ডার্ক চকলেট, মাছ, আনাজপাতি, পিনাট বাটার, ডাল, বাদাম খেলে জ়িঙ্ক থেকে ওমেগা থ্রি, ভিটামিন এ সবই পাবে শরীর।”

পুষ্টিবিদ কোয়েল পালচৌধুরীও বললেন, ‘‘অটিজ়মে বড় হওয়ার গতিটা একটু আলাদা হয়। কিন্তু রোগের কারণ কোনও ভাবেই অপুষ্টি নয়।’’ তাঁর মতে, সাধারণত ‘গ্লুটেন ফ্রি, ডেয়ারি ফ্রি’ খাবার দেওয়া হয় অটিস্টিক বাচ্চাদের। তবে প্রত্যেকের ক্ষেত্রে ডায়েটটা আলাদা আলাদা। যেমন কারও জন্য দুধ ঠিক, আবার কারও ক্ষেত্রে দুধ বাদ দিয়ে দই বা চিজ় দেওয়া যায়। প্রোটিন রোজ দেওয়া জরুরি। তিনি জানান, ওমেগা থ্রি, ফ্যাটি অ্যাসিড মস্তিকের বিকাশে সাহায্য করে। ওমেগা থ্রি সামুদ্রিক মাছে পাওয়া যায় সাধারণত। তবে মাগুর মাছ, সরষের তেলেও পাওয়া যায়। সেটা খেয়াল রেখে সন্তানকে খাবার দিতে হবে অভিভাবকদের।বাচ্চা অনেক সময় বোঝাতে পারে না সব কথা। দুধজাতীয় খাবার হজম হচ্ছে কি না, সেটা বাবা-মাকেই বুঝে দিতে হবে। খাবার পছন্দ হচ্ছে না বলে রাগ বা জেদ নয়, আসলে খাবারেই অসুবিধে হচ্ছে কি না, এটা বুঝতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা খাবারে একঘেয়েমি এলে মুশকিল। রোজকার রান্না, প্রয়োজনীয় খাবারই ঘুরিয়েফিরিয়ে পছন্দসই ভাবে পরিবেশন করতে হবে।

পুষ্টিবিদদের মতে, বিশেষজ্ঞের মত নিয়ে ডায়েট চার্ট তৈরি করে সন্তানের রোজ কতটা খাবার প্রয়োজন জেনে খাওয়াতে হবে। চিনি ছাড়া দুধ খাওয়ানোর অভ্যেস করতে পারলে ভাল। বাইরের খাবারে নিয়ন্ত্রণ জরুরি। সুবর্ণার কথায়, “তিন-চার বছরের বাচ্চাকে সকালে কফি আর বিস্কিট দেওয়া যায়। ডাইজেস্টিভ বা ওটস বিস্কিট হলে ভাল। প্রাতরাশে সুজি, ওটস, ডালিয়া ঘুরিয়েফিরেয়ে দিন। তার পরে ফল। ফলের রস না দিয়ে গোটা ফল খাওয়ানোই ভাল। দুপুরে ভাত, তরকারি, মাছ। চিবিয়ে খাওয়ার মতো ফাইবার জাতীয় খাবার দিন। বিকেলে আবার দুধ, ওটস বা দুধ-খই। রাতে কম করে ভাত বা রুটি, সঙ্গে প্রোটিন।”

আসলে সকলের সঙ্গে সমান ভাবে দাঁড়িয়ে জীবনের লড়াইটা লড়ার মতো শক্তি জোগানোই সুষম খাদ্যের উদ্দেশ্য। যে বাচ্চাদের জগৎ একটু আলাদা, নিজেদের খেয়ালে ভরা, তাদের মানসিক বিকাশের জন্য একশো শতাংশ সুস্থ থাকা জরুরি বইকি!

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Autism Nutrition Foods

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

ক্যানসেল করতে পারবেন আপনার সুবিধামতো

Best Value
প্রতি বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
প্রতি মাসে

৪২৯

১৬৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।