Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

খুদেদের অনলাইন গেমেও এখন মাস্কের রমরমা

লকডাউনের জেরে ঘরবন্দি খুদেদের অবস্থাই দেখাচ্ছে ‘মাই হর্স স্টোরিজ গেম’।

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০২০ ০৪:২৬
Share: Save:

কোভিড-১৯ পর্বে সংক্রমণ এড়াতে মাস্ককে আপন করে নিতে বাধ্য হয়েছেন সকলে। এখন সেই মাস্ক ছেয়েছে অনলাইন গেমেও। ছোটদের জন্য তৈরি ওই সব গেমে এখন যোগ হয়েছে নতুন নিয়ম— মাস্ক। কোথাও গেম শুরু করার আগে নিজের পছন্দের চরিত্রের মুখে বাঁধতে হচ্ছে মাস্ক। কোথাও আবার খেলার প্রধান কুশীলবেরা সকলেই হাজির হচ্ছে মাস্ক পরে।

লকডাউনের জেরে ঘরবন্দি খুদেদের অবস্থাই দেখাচ্ছে ‘মাই হর্স স্টোরিজ গেম’। সেখানে একটি ফার্মে পছন্দের ঘোড়ায় চড়া শিখতে সাজতে হয় কাউবয়। তার পরে সেই ঘোড়া নিয়েই বাধাবিপত্তি পেরিয়ে বিজয়ী হওয়ার লক্ষ্যে এগোনো যায়। কিন্তু কিছু দিন হল এই গেমে যোগ হয়েছে নতুন নিয়ম— খেলতে গেলে প্রথমেই নিজের চরিত্রের মুখ ঢাকতে হবে মাস্কে।

করোনার যুগে এ ভাবেই খুদেদের প্রিয় গেমে ক্রমশ জায়গা করে নিয়েছে মাস্ক। গেমে তাদের পছন্দের নায়ক-নায়িকা এমনকি সুপারহিরোদের মুখও এখন ঢাকা। গেম খেলতে গেলেই সামনে আসছে নতুন ‘অপশন’— মাস্ক। পছন্দের মাস্ক চরিত্রের মুখে লাগিয়ে নিলে তবেই এগোনো পরবর্তী ধাপে। হিপহপ, জ্যাজ় বা ব্যালে নাচের জন্য ‘ডান্স স্কুল স্টোরিজ’, ‘আইস স্কেটিং’ বা ‘প্রিটি ব্যালেরিনা’র মতো গেমের চরিত্রেরাও আজ মুখ ঢেকেছে মাস্কে।

লকডাউনের সময়ে কোনও বায়নাক্কা ছাড়াই মোবাইল-ল্যাপটপ সবই চলে আসছে ছোটদের হাতে। স্কুলে মোবাইল নিষিদ্ধ হলেও এখন অনলাইনে ক্লাস করতে ভরসা সেই মোবাইল-ল্যাপটপই। বিকেলে বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে যাওয়ার বদলেও এখন ছোটদের সময় কাটছে সেই মোবাইলের সঙ্গে। তাদের ঘরে আটকে রাখতে কিছু সময়ের জন্য হাতে তুলে দিতেই হচ্ছে মোবাইল। আর তাই এখন ছোটদের প্রিয় অনলাইন গেমের দুনিয়াতেও মাস্কের রাজত্ব।

‘হিপহপ ব্যাটেল গার্লস ভার্সেস বয়জ ডান্স ক্ল্যাশ’-গেমে নাচের লড়াইয়ে নামতে গেলেও চরিত্রদের মুখে বেঁধে দিতে হচ্ছে মাস্ক। আবার ডিজ়াইনিং শিখে সটান ফ্যাশন র‌্যাম্পে নামার জন্য ‘সুপার স্টাইলিস্ট’-গেমেও মডেলদের মুখ থাকছে মাস্কের আড়ালেই। ‘চিয়ারলিডার ডান্স অব চ্যাম্পিয়নশিপে’ নামতে গেলে আবার শারীরচর্চার জন্য যেতে হয় জিমে। সেখানেও দেখা যাচ্ছে, জিম থেকে ডান্স ফ্লোর— মাস্ক পরলে তবেই মিলছে ছাড়পত্র।

মোবাইল গেম তৈরির একটি সংস্থা জানাচ্ছে, অনলাইনে গেমকে আরও প্রাণবন্ত করার জন্য নিয়মিত তা ‘আপডেট’ করা হয়ে থাকে। এ বার তাই ছোটদের সংক্রমণ নিয়ে ওয়াকিবহাল করতে এবং মাস্কের কার্যকারিতা শেখাতেই এই নতুন নিয়ম যোগ করা হয়েছে। এই ভাবনার সঙ্গে একমত পোষণ করে ‘ইন্ডিয়ান সাইকায়াট্রিক সোসাইটি’র সহ-সভাপতি গৌতম সাহা বলছেন, ‘‘শিশুমনে স্টোরি বা গেম-এর বড় প্রভাব পড়ে। তাই জনপ্রিয়তার জন্য সংস্থাগুলি যেমন গেমকে প্রাণবন্ত করছে, তেমনই এর মাধ্যমে ছোটরাও মাস্কের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বুঝতে শিখছে।’’

মাস্কের প্রয়োজনীয়তা অবশ্য এ ভাবে বুঝতে শিখেছে অনেকেই। মোবাইলে ‘জিমনাস্টিক সুপারস্টার’ খেলা যে দরিয়া, সায়নেরা গেমের মধ্যে দেশের হয়ে প্রতিযোগিতায় নেমে কসরত দেখাচ্ছে, তারাই আবার বড়দের হাতে ধরিয়ে দিচ্ছে মাস্ক।

তবে গেমের মাধ্যমে শিক্ষালাভ করার সুযোগ থাকলেও পড়াশোনা বাদে দিনে এক-দেড় ঘণ্টার বেশি ছোটদের হাতে মোবাইল না দেওয়ার কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছেন গৌতমবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘তা না-হলে লকডাউন উঠে গেলেও ছোটদের মোবাইলের প্রতি এই আসক্তি থেকে যেতে পারে।’’

আরও পড়ুন: করোনা ঠেকাতে দাঁত ও মুখের এই সব যত্নও নিতে হবে

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy