নিজস্বী ডেকে আনতে পারে বড় বিপদ। ছবি: সংগৃহীত
ঘরবন্দি হয়ে সময় কাটানো দায়। তাই মানুষ মেতেছেন নিজস্বী তোলায় এবং তা নেটমাধ্যমে আপলোড করায়। এটা এক রকম নেশার পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। কিন্তু জেনে রাখা ভাল যে, রোদ্দুরের অতিবেগুনি রশ্মির মতোই মোবাইলের নীল আলো ত্বককে অকালে বুড়িয়ে দিতে পারে। গবেষণায় জানা গিয়েছে মুঠো ফোনের সামনের দিকের ক্যামেরায় যে নীল আলো অর্থাৎ হাই এনার্জি ভিজিবিল লাইট (HEV) থাকে, তা আমাদের ত্বক সহ শরীরের উপর নানান ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।
জার্নাল অফ আমেরিকান অ্যাকাদেমি অফ ডার্মাটোলজিতে প্রকাশিত গবেষনণা পত্রে জানা গিয়েছে, ব্লু ব্যান্ডের হাই এনার্জি ভিজিবিল লাইট ত্বক ও চোখের ক্ষতি করে। মোবাইল ফোনের নীল আলো আদতে রিক্যাটিভ অক্সিজেন স্পেসিস বা ROS। এটি ত্বকের কোষে থাকা ডিএনএ অকেজো করে দিতে পারে। এর ফলে কম বয়সে ত্বক বুড়িয়ে যেতে শুরু করে।
এই বিষয়ে ত্বকের চিকিৎসক সন্দীপন ধর বললেন, ‘‘ ডিএনএ ক্ষতিগ্রস্ত হলে ক্যানসার হবার সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারে। তা ছাড়াও মোবাইলের ক্যামেরা থেকে এই আলো নিসৃত হয়ে মুখ ও গলার ত্বকের ক্ষতি করেই চলেছে। নিজস্বী তোলা হয় ছয় ইঞ্চি বা এক ফুট দূর থেকে। ফোন ত্বকের অনেক কাছাকাছি থাকায় ত্বক বুড়িয়ে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।’’
দিনের মধ্যে অজস্র বার সেলফি তুললে মনেরও ক্ষতি হয়, জানালেন মনোবিদ মৌমিতা চট্টোপাধ্যায়। তাঁর মতে, সারাদিন ধরে নিজস্বী তোলা পারসোনালিটি ডিসর্ডারের লক্ষণ। ‘‘প্রত্যেক মানুষেরই নিজের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটানো প্রয়োজন। আত্মসমীক্ষা করলে তবেই জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারসাম্য বজায় রাখা যায়। নিজস্বী তুলতে গিয়ে অনেকের কাজকর্ম, খাওয়া, ঘুম এমনকি নিজের রোজকার কাজকর্ম পর্যন্ত এলোমেলো হয়ে যায়। তাই নিজস্বী তোলা নিয়ে মোহ তৈরি হলে কোনও মনোবিদের সাহায্য নিতে হবে। এক বছরেরও বেশি সময় স্কুল কলেজ বন্ধ থাকায় ছোট ছেলে মেয়েদের মধ্যে এই সমস্যা বাড়ছে। তাই বাড়ির বড়দেরই এ বিষয়ে সতর্ক হতে হবে,’’ বললেন মৌমিতা।
এই মোহ কাটিয়ে না উঠতে পারলে রোজকার জীবন ও সম্পর্ক ওলোটপালট করে দিতে পারে। তার মানে অবশ্য এই নয় যে, নিজস্বী তোলা ভয়ানক অপরাধ বা গর্হিত কাজ। রয়ে বসে নিজস্বী তুললে কোনও সমস্যা নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy