Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Cafe Mezzuna

বিদেশি খাবারে দেশের ছোঁয়া, স্বাস্থ্য সচেতন নতুন প্রজন্মকে পথ দেখাচ্ছে ক্যাফে মেজ়ুনা

কৃতি ছাত্র-ছাত্রীরা পড়াশোনা করতে বিদেশে যান। কিন্তু সেখানকার এত সুযোগ সুবিধা ছেড়ে দেশের জন্য কাজ করার খিদে নিয়ে ফিরে আসেন কি? নতুন প্রজন্মকে বার্তা দিতে চাইছে ক্যাফে মেজ়ুনা?

অঞ্জন-স্যাবির যুগলবন্দি।

অঞ্জন-স্যাবির যুগলবন্দি। ছবি- নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২২ ২১:০২
Share: Save:

৭ বছর আগে কলকাতার বুকে পথচলা শুরু করে ক্যাফে মেজ়ুনা। মেডিটেরিয়ান, মরোক্কান, স্প্যানিস এবং ইটালিয় ক্যুইজ়িনের অন্যতম পীঠস্থান এই ক্যাফে, তার খলনলচে বদলে নতুন করে আসতে চলেছে। সঙ্গে কলকাতার নতুন প্রজন্মকে উপহার দিতে চলেছে বেস্ট শেফ ‘প্রেসিডেন্ট অফ ইন্ডিয়া অ্যাওয়ার্ড’ প্রাপ্ত স্যাবি ওরফে সব্যসাচী গড়াইয়ের পছন্দ করা সব খাবার।

তবে এখানে নতুনত্ব হল, বিদেশী খাবার কিন্তু দেশজ উপকরণ। ‘ভোকাল ফর লোকাল’ শব্দবন্ধটি শুনতে ভাল লাগলেও, কাজে প্রয়োগ করা হয় না। সেই থেকেই এই ভাবনা, জানালেন ক্যাফে মেজ়ুনার কর্ণধার অঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। সঙ্গে পেয়েছেন দেশ-বিদেশের বিখ্যাত সব পদের আঁতুড়ঘর দেখে, শিখে আসা সেফ স্যাবিকে। “বাঙালির ছেলে, খেতে এবং খাওয়াতে ভালবাসি। কাজের সূত্রে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে যেখানে কলকাতার বিরিয়ানি স্বাদ পৌঁছতে পারে না, সেখানকার মানুষের ইমোশন আমি বুঝি। তাই সেখানেও আমি রেস্তরাঁ খুলেছি। শুধু তাই নয়, ব্রিটিশরা যেমন আমাদের মেরে, আমাদের দেশে রাজত্ব করেছিল, আমার উদ্দেশ্য ছিল বাঙালি খাবার খাইয়ে বিদেশীদের মন জয় করা” বললেন অঞ্জন।

খাবারের প্রতি নেশা নয়, রীতিমতো পাগলামি না থাকলে যে তাঁর সঙ্গে কাজ করা যায় না, তা যাঁরা অঞ্জনের সঙ্গে কাজ করেছেন তাঁরা জানেন। আদতে আসানসোলের ছেলে সেফ স্যাবি বিভিন্ন দেশের, বিভিন্ন ক্যুইজ়িন চেখে, সেখানে রান্না করে শিখেছেন ঠিকই কিন্তু তাঁর মন পড়েছিল দেশে। রান্না নিয়ে দেশে অন্য রকম কিছু করার ইচ্ছে থেকেই অঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর হাত মেলানো।

সেফ স্যাবি।

সেফ স্যাবি। ছবি- নিজস্ব চিত্র

“ইটালির খাবার মানেই সাধারণ মানুষের কাছে চিজ় ভর্তি পাস্তা এবং পিৎজ়া। অথচ দীর্ঘ দিন আমি সে দেশে থেকে দেখেছি, শিখেছি সেখানকার খাবার একেবারেই এখানকার মতো নয়। আমি খুব স্বল্প মশলা ব্যবহার করে সেখানকার আসল ফ্লেভার তুলে আনতে চেষ্টা করছি। শুধু তাই নয়, বিগত ১০বছর ধরে আমার রান্নাঘরে কোনও পরিশোধিত জিনিস থাকে না। আমি বিদেশি খাবারেও গুড় ব্যবহার করি। ইটালির খাবার অলিভ অয়েল ছাড়া হয় না, কিন্তু আমার রান্নার জন্য সেই অলিভ অয়েল আসে রাজস্থান থেকে, সাধারণ ফিশফ্রাই-এ পাউরুটি বা বিস্কুটের গুঁড়ো ব্যবহার না করে আমি মিলেট ব্যবহার করি। পিৎজ়ার রুটিতে ময়দার বদলে আমি পানিফলের আটা ব্যবহার করি।” বললেন সেফ স্যাবি।

বিদেশিদের বাঙালি খাবার খাওয়ানোর মতোই ভূমধ্য-সাগরীয় অঞ্চলের আশেপাশের শ্রেষ্ঠ খাবারগুলি যাতে কলকাতায় বসেই পাওয়া যায়, সেই লক্ষ্য নিয়েই এগোচ্ছে ক্যাফে মেজ়ুনা। বর্তমানে কলকাতার ‘এলগিন রোড’ এবং ‘সাউথ সিটি মল’-এ ক্যাফে মেজ়ুনার দুটি শাখা রয়েছে। সেই তালিকায় খুব সম্প্রতি যোগ হতে চলেছে সল্টলেকের নামও। সেফ স্যাবির সঙ্গে অঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের পথচলা শুরু হলেও সাধারণ মানুষের হাতে বড়দিনের আগে সেই সব স্বাস্থ্যকর অথচ লোভনীয় খাবার পৌঁছয় কিনা এখন তারই অপেক্ষা।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE