দৈনিক ২৫ গ্রাম ডার্ক চকোলেট (চিনি ছাড়া) খেলে ৮ সপ্তাহ পর রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আসে।
শুধু ছোটদেরই প্রিয় তা নয়, মনে মনে চকোলেট প্রেমে মজে রয়েছেন অনেক বড়রাও। চা বা কফির মত ডার্ক চকোলেটকেও জীবনের অঙ্গ করে নিতে পারেন অনায়াসে। চকোলেট মানেই দাঁতের ক্ষতি এরকমটা নয়। এক গাদা চিনি মেশানো চকোলেট নয়, ঘন কালচে রঙা ডার্ক চকোলেট শরীরের জন্যে যথেষ্ট উপকারি।
নানা খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে সমৃদ্ধ ডার্ক চকোলেট রক্তচাপ কমিয়ে হার্ট ভাল রাখার পাশাপাশি মন ভাল রাখে, অবসাদ কমাতে সাহায্য করে। সবই গবেষণায় প্রমাণিত।
খ্রিস্টের জন্মের প্রায় দু হাজার বছর আগে থেকে চকোলেট প্রেমে মজেছে মানুষ। অ্যাজটেক সভ্যতায় চকোলেটের উল্লেখ আছে। সেই সময়ের কিছু গুহাচিত্র ও পাথরের মূর্তিতে খোদাই করা আছে চকোলেট তৈরি ও খাওয়ার নানা গল্প। সে কালে আমেরিকাবাসীর ধারণা ছিল যে জ্ঞানের দেবতার দান হল কোকো ফল। এর থেকে পাওয়া চকোলেটকে স্বর্গীয় খাবার বলে মনে করা হত।
আরও পড়ুন: নিউ নর্মালে গড়ে উঠেছে নতুন অভ্যাস, কোনটায় কী কী উপকার
অ্যাজটেক সভ্যতায় কোকো বীজ মুদ্রা হিসেবে ব্যবহার করা হত। তবে সেই সময় চকোলেট নয় বীজ থেকে তৈরি পানীয়ই ধনী মানুষদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় থাকত। আমেরিকা থেকে ইউরোপ, ব্রিটেন, এশিয়া-সহ সমস্ত পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ল চকোলেট।
বিশ্বের যাবতীয় কোকোর প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ উৎপাদন হয় পশ্চিম আফ্রিকায়। ওয়ার্ল্ড কোকো ফাউন্ডেশনের সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, বিশ্বের প্রায় ৫ কোটি মানুষ কোকোজাতীয় খাবারে আসক্ত। চা , কফি বা মদ্যপানের মতই চকোলেটের নেশায় মজে আছেন তাঁরা। পুষ্টিবিদরা সপ্তাহে অন্তত তিনদিন ডার্ক চকোলেট খেতে পরামর্শ দেন, জানালেন ইন্দ্রাণী ঘোষ। অবসাদ প্রতিরোধে চকোলেটের কোনও জুড়ি নেই। ভিটামিন বি-১২, রাইভোফ্ল্যাভিন, ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাস, জিঙ্ক, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন ইত্যাদি পুষ্টিগুণে ভরপুর ডার্ক চকোলেট মন ভালো রাখার সঙ্গে সঙ্গে হার্ট ভাল রাখে, ক্যানসার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। শুধু ছোটরাই নয়, বড়দের জন্যেও চকোলেট উপকারি। তবে মাত্রাতিরিক্ত খেলে ওজন বাড়বে সে কথা ভুললে চলবে না। যাঁদের অ্যালার্জি আছে, তাঁরা কিন্তু চকোলেটের থেকে শতহস্ত দূরে থাকবেন।
ইন্দ্রাণী জানালেন, চকোলেটে আছে ফ্ল্যাভানলস ও পলিফেনলস যা শরীরের অক্সিডেশন ড্যামেজ কমিয়ে শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে শরীরে নানা সমস্যা দেখা যেতে পারে। যেমন ডায়াবিটিস, হার্টের অসুখ, পার্কিনসনস ডিজিজ, অ্যালজাইমারস ডিজিজ, চোখের সমস্যা মায় ক্যানসার পর্যন্ত। ডার্ক চকোলেট অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে। তাই এ সব রোগকে অনেকাংশে ঠেকিয়ে রাখা যায়।
আরও পড়ুন:করোনার হানা কমেনি, সুস্থ থাকতে এখন কী কী মানতেই হবে
২০১৫ সালের এক স্টাডি বলছে, দৈনিক ২৫ গ্রাম চিনি ছাড়া ডার্ক চকোলেট খেলে ৮ সপ্তাহ পর রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আসে। ডার্ক চকোলেটে থাকা পলিফেনল ও থিওব্রোমিন নামক যৌগ রক্তের লো-ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন অর্থাৎ এলডিএল নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি এইচডিএল অর্থাৎ ভাল কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে হার্ট ভাল রাখতে সাহায্য করে বলে জানালেন ইন্দ্রাণী। এই স্বাদু খাবারটির আর এক গুণ শরীরের ইনফ্ল্যামেশন বা প্রদাহকে নিয়ন্ত্রণে রাখা। এর ফলে আর্থ্রাইটিস, টাইপ টু ডায়াবিটিস ও কিছু ক্যানসারের ঝুঁকি কমে। ইন্দ্রাণী জানালেন এক সমীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে যে ডার্ক চকোলেটে থাকা ফ্ল্যাভ্যোনলস নিউরোডিজেনারেটিভ পদ্ধতির গতি কমিয়ে দিয়ে অ্যালজাইমার্স ও পার্কিনসন্স অসুখ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। ছোটদের সঙ্গে সঙ্গে বড়রাও চিনি ছাড়া এক টুকরো ডার্ক চকোলেট চেখে দেখতেই পারেন সপ্তাহে দিনতিনেক। ভাল থাকতে মাস্ক পরুন আর সাধারণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি চকোলেট খান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy