ঝলমলে সোনালি থেকে গাঢ় নীল, আবার তামাটে রং থেকে রুপোলি কারুকাজ। নতুন ধরনের সাজে মেতেছেন বলিউডের রূপসীরা। সুহানা খান, জাহ্নবী কপূরের মতো নতুন প্রজন্ম থেকে সোনাক্ষী সিন্হা, করিশ্মা কপূর, সোনম কপূরের মতো অভিজ্ঞ অভিনেত্রীরা, সকলের রূপটানেই বদল চোখে পড়ছে হঠাৎ। যেখানে রঙের খেলা অনেক বেশি। গ্লিটারের প্রয়োগও বেড়েছে। মেকআপে নমনীয়তার বদলে ফুটে উঠছে দৃঢ়তা। এই নতুন ধরনের রূপটানকে বলা হচ্ছে 'মেটালিক মেকআপ'।
এমনকি ছবিতেও আজকাল এই ধরনের মেকআপে সাজানো হচ্ছে শিল্পীদের। 'স্টার স্ট্রেক', 'ব্লেড রানার', 'ইউফোরিয়া'র মতো ছবিগুলি দেখলে স্পষ্ট চোখে পড়বে রূপটানের এই বদল।
মেকআপও হবে, আবার কেউ টেরও পাবে না। এমন ম্যাট মেকআপই সাজের দুনিয়ায় রাজত্ব করেছে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে মেটালিক মেকআপের ধারা শুরু হয়েছে। নতুন, আবার নতুন নয়। এই মেকআপের আগের সংস্করণ দেখেছে নব্বইয়ের দশক। যাঁরা সেই সময়ে বড় হয়েছেন, তাঁরা জানেন, কোনও অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগে চোখে, ঠোঁটে, গালে হালকা গ্লিটার মেখে নিলেই মনে হত, সাজ সম্পূর্ণ হল। সেই গ্লিটার মেকআপের নতুন ধারাই মেটালিক মেকআপ। যেখানে আর মেকআপ লুকিয়ে রাখতে হবে না। সগর্বে তার অস্তিত্ব জানান দেবে মেকআপ।
আরও পড়ুন:
সম্প্রতি বলিউডের একাধিক অভিনেত্রীকে এই মেকআপে সেজে উঠতে দেখা গিয়েছে। কিয়ারা আডবাণী, ভূমি পেডনেকার, শর্বরী ওয়াঘ, করিশ্মা কপূর, বনিতা সন্ধুর মতো আরও অনেকে মেট্যালিক মেকআপ করে ছবি তুলেছেন। সঙ্গে মানানসই পোশাক বেছে নিয়েছেন, যেগুলির সঙ্গে মেটালিক মেকআপের ছন্দ মিলে যায়।
ভারতীয়দের ত্বকের যে কোনও রঙের সঙ্গে মেটালিক মেকআপ মানিয়ে যায়। কেবল সেই মতো শেড খুঁজে বার করা দরকার। এই মেকআপে ভোর থেকে রাত পর্যন্ত উজ্জ্বল থাকে চেহারা। চোখ, ঠোঁট, গাল এবং নখে এই মেকআপ ব্যবহার করা হয়। 'মেটাল' শব্দের অর্থ ধাতু। আর এই মেকআপ বিভিন্ন ধাতব রঙে পাওয়া যায়। সেই থেকেই এই মেকআপের নামকরণ হয়েছে মেটালিক মেকআপ। রূপা, সোনা, তামা, এবং ব্রোঞ্জের রঙের মেকআপ পাওয়া যায়। নিজের ত্বকের রঙের সঙ্গে যেটা মানাবে, সেরকমই বেছে নেওয়া যেতে পারে। নিজেকে মেটালিক রূপ দিতে হলে, কেবল মেকআপ নয়, সেই রকম রঙের পোশাক এবং গয়নাও বেছে নেওয়া দরকার। কিয়ারা, ভূমি, শর্বরী, করিশ্মা, বনিতার ছবিতে সম্পূর্ণ সাজের ঝলক পাওয়া গিয়েছে।

বলিউডের একাধিক অভিনেত্রীকে এই মেকআপে সেজে উঠতে দেখা গিয়েছে। ছবি: সংগৃহীত।
কী ভাবে মেটালিক মেকআপে সাজাবেন নিজেকে?
বেস মেকআপ- প্রথমে মুখ পরিষ্কার করে নিয়ে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। এর পর প্রাইমার ব্যবহার করলে মেকআপটি দীর্ঘস্থায়ী হবে।
ফাউন্ডেশন এবং কনসিলর- ত্বকের রং যাতে সব জায়গায় এক রকম থাকে, তার জন্য ফাউন্ডেশন এবং কনসিলর ব্যবহার করুন।
মেটালিক আইশ্যাডো: আইশ্যাডোর প্যালেট থেকে পছন্দের শেড বেছে নিতে হবে। সোনালি, রুপোলি, রোস্টেড সোনালি বা ব্রোঞ্জের রং। চোখের পাতায় এবং নীচে ভাল করে মিশিয়ে নিতে হবে। এর পর আইলাইনার এবং মাসকারা দিয়ে চোখকে আরও গাঢ় করতে পারেন।
মেটালিক হাইলাইটার: সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হাইলাইটার। গালে, নাকে এবং চিবুকের নীচে হাইলাইট করলে ত্বকে বাড়তি ঔজ্জ্বল্য আসবে।
মেটালিক লিপস্টিক: ঠোঁটে মেটালিক রূপ দিতে সোনালি, রুপোলি, রোজ গোল্ড শেডগুলি ব্যবহার করা যেতে পারে। এর পর মেটালিক লিপগ্লস বা লিপলাইনার দিয়ে ঠোঁটের আয়তন বাড়াতে হবে।
সবশেষে মেকআপ সেট করতে ফিনিশিং স্প্রে ব্যবহার করা যেতে পারে। যার ফলে অনেক ক্ষণ পর্যন্ত চকচক করবে মুখ।