Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Sabyasachi Mukherji

Sabyasachi Mukherjee: কাঁকিনাড়া থেকে বিশ্বখ্যাত পোশাকশিল্পী, কেমন ছিল সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়ের যাত্রাপথ

বাবা-মা মেনে নিতে পারেননি ছেলে সব্যসাচী পোশাকশিল্পী হবেন। তাই নিজের বই বিক্রি করেই চালান লেখাপড়া।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৭:০৪
Share: Save:
০১ ১৯
এ যেন এক রূপকথার গল্প! বেড়ে ওঠা গঙ্গার গা ঘেঁষে। কাঁকিনাড়ায়। বাড়ি ছিল এক চটকলের চত্বরে। চিড়ধরা চশমা পরে স্কুলে যাওয়া সেই ছেলেটির পৃথিবীজুড়ে এখন মস্ত বড় নামডাক। ফ্যাশন দুনিয়ায় খুব কম বয়সেই আলোড়ন তুলেছেন। তিনি আর কেউ নন, পোশাকশিল্পী সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়।

এ যেন এক রূপকথার গল্প! বেড়ে ওঠা গঙ্গার গা ঘেঁষে। কাঁকিনাড়ায়। বাড়ি ছিল এক চটকলের চত্বরে। চিড়ধরা চশমা পরে স্কুলে যাওয়া সেই ছেলেটির পৃথিবীজুড়ে এখন মস্ত বড় নামডাক। ফ্যাশন দুনিয়ায় খুব কম বয়সেই আলোড়ন তুলেছেন। তিনি আর কেউ নন, পোশাকশিল্পী সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়।

০২ ১৯
বিশ্বজুড়ে নামডাক। তবু দেশজ নকশার প্রতি ভালবাসা অমলিন। এর প্রমাণ মেলে তাঁর তৈরি পোশাকেই। যেখানে অবলীলায় খাদির সঙ্গে বেনারসি, নেটের সঙ্গে ভেলভেট মিশিয়ে গড়ে তোলেন এক ঋদ্ধ ক্যানভ্যাস। শাড়ি, লেহঙ্গা, পাশ্চাত্য পোশাক, সবেতেই তাঁর অবাধ-অনায়াস গতি।

বিশ্বজুড়ে নামডাক। তবু দেশজ নকশার প্রতি ভালবাসা অমলিন। এর প্রমাণ মেলে তাঁর তৈরি পোশাকেই। যেখানে অবলীলায় খাদির সঙ্গে বেনারসি, নেটের সঙ্গে ভেলভেট মিশিয়ে গড়ে তোলেন এক ঋদ্ধ ক্যানভ্যাস। শাড়ি, লেহঙ্গা, পাশ্চাত্য পোশাক, সবেতেই তাঁর অবাধ-অনায়াস গতি।

০৩ ১৯
১৯৭৪ সালে জন্ম। বুধবার পা রাখলেন ৪৮-এ।কিন্তু ছোটবেলায় প্রকৃতির মাঝে কাটানো মন যে আজও সজীব ও সতেজ, তা বুঝিয়ে দেবে সব্যসাচীর নকশা। তাঁর তৈরি বেশির ভাগ পোশাকের প্রেরণাই প্রকৃতি। মাটি, পাতা, ফুলের প্রাকৃতিক রঙের ব্যবহারেই তৈরি করেন পোশাক।

১৯৭৪ সালে জন্ম। বুধবার পা রাখলেন ৪৮-এ।কিন্তু ছোটবেলায় প্রকৃতির মাঝে কাটানো মন যে আজও সজীব ও সতেজ, তা বুঝিয়ে দেবে সব্যসাচীর নকশা। তাঁর তৈরি বেশির ভাগ পোশাকের প্রেরণাই প্রকৃতি। মাটি, পাতা, ফুলের প্রাকৃতিক রঙের ব্যবহারেই তৈরি করেন পোশাক।

০৪ ১৯
পড়াশোনা শুরু চন্দননগরের শ্রী অরবিন্দ বিদ্যামন্দিরে। বাংলা সাহিত্য ছিল প্রিয় বিষয়। কোনও বিষয়ের উপর রচনা লিখতে দিলেও তাঁর কলম চলত ঝড়ের বেগে। স্কুল শেষ হলে কাঁকিনাড়া ছেড়ে কলকাতায় চলে আসা।

পড়াশোনা শুরু চন্দননগরের শ্রী অরবিন্দ বিদ্যামন্দিরে। বাংলা সাহিত্য ছিল প্রিয় বিষয়। কোনও বিষয়ের উপর রচনা লিখতে দিলেও তাঁর কলম চলত ঝড়ের বেগে। স্কুল শেষ হলে কাঁকিনাড়া ছেড়ে কলকাতায় চলে আসা।

০৫ ১৯
কলকাতার‘সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ’ থেকে পাশ করে ‘ন্যাশনাল স্কুল অব ফ্যাশন টেকনোলজি’-তে ভর্তি হওয়া। ছেলের পোশাকশিল্পী হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে বাবা-মা প্রথমে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন। তবে সব্যসাচী থামেননি।

কলকাতার‘সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ’ থেকে পাশ করে ‘ন্যাশনাল স্কুল অব ফ্যাশন টেকনোলজি’-তে ভর্তি হওয়া। ছেলের পোশাকশিল্পী হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে বাবা-মা প্রথমে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন। তবে সব্যসাচী থামেননি।

০৬ ১৯
সব্যসাচী যে পোশাক শিল্পী হবেন, তা যেন ছিল পূর্ব নির্ধারিত। শোনা যায়, ছেলেবেলাতেই বাবার পায়জামা দিয়ে জামার হাতা বানিয়ে ‘কিং লিয়র’ নাটকের পোশাক অবলীলায় বানিয়ে ফেলেছিলেন।

সব্যসাচী যে পোশাক শিল্পী হবেন, তা যেন ছিল পূর্ব নির্ধারিত। শোনা যায়, ছেলেবেলাতেই বাবার পায়জামা দিয়ে জামার হাতা বানিয়ে ‘কিং লিয়র’ নাটকের পোশাক অবলীলায় বানিয়ে ফেলেছিলেন।

০৭ ১৯
বাবা-মা চাননি সব্যসাচী পোশাক শিল্পী হন। তাই এ বিষয় নিয়ে পড়াশোনার জন্য বাড়ি থেকে অর্থ সাহায্য পাওয়াও দুষ্কর ছিল। নিজের যাবতীয় বই বিক্রি করে ‘ন্যাশনাল স্কুল অব ফ্যাশন টেকনোলজি’-তে ভর্তি হন তিনি।

বাবা-মা চাননি সব্যসাচী পোশাক শিল্পী হন। তাই এ বিষয় নিয়ে পড়াশোনার জন্য বাড়ি থেকে অর্থ সাহায্য পাওয়াও দুষ্কর ছিল। নিজের যাবতীয় বই বিক্রি করে ‘ন্যাশনাল স্কুল অব ফ্যাশন টেকনোলজি’-তে ভর্তি হন তিনি।

০৮ ১৯
১৯৯১ সালে সেখান থেকে পাশ করে পরপর দুটি প্রদর্শনী। তার পর সোজা মুম্বই। সে বছরই তিন জন কারিগর নিয়ে তৈরি করেন নিজের পোশাক ব্র্যান্ড ‘সব্যসাচী’।

১৯৯১ সালে সেখান থেকে পাশ করে পরপর দুটি প্রদর্শনী। তার পর সোজা মুম্বই। সে বছরই তিন জন কারিগর নিয়ে তৈরি করেন নিজের পোশাক ব্র্যান্ড ‘সব্যসাচী’।

০৯ ১৯
বন্ধু সেলিনা জেটলি যাবেন দেশের সর্বোচ্চ সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায়। তাঁর জন্য আলাদা পোশাক বানাতে হবে। এ নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করতে করতেই বিভিন্ন রঙের খাদির কাপড় জুড়ে জুড়ে তৈরি করে ফেললেন একটি স্কার্ট। সঙ্গে হল্টার নেক জামা আর মাথায় পাগড়ি। সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার সেই মঞ্চে সেলিনার পোশাক নিয়ে সেদিন হইচই পড়ে গিয়েছিল।

বন্ধু সেলিনা জেটলি যাবেন দেশের সর্বোচ্চ সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায়। তাঁর জন্য আলাদা পোশাক বানাতে হবে। এ নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করতে করতেই বিভিন্ন রঙের খাদির কাপড় জুড়ে জুড়ে তৈরি করে ফেললেন একটি স্কার্ট। সঙ্গে হল্টার নেক জামা আর মাথায় পাগড়ি। সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার সেই মঞ্চে সেলিনার পোশাক নিয়ে সেদিন হইচই পড়ে গিয়েছিল।

১০ ১৯

এর পর ধীরে ধীরে শুরু হল তাঁর সাফল্যের উড়ান। বিশেষ প্রশিক্ষণের জন্য পাড়ি দেন লন্ডনে।

১১ ১৯
আর ফিরে তাকাতে হয়নি ‘পেপসি’-কে। বন্ধুমহলে এই নামেই পরিচিত সব্যসাচী। সিঙ্গাপুর, দিল্লি, মুম্বইয়ের ‘ফ্যাশন উইক’ তো আছেই, এক মাত্র ভারতীয় হিসাবে আমন্ত্রিত হন ফ্যাশনের মক্কা মিলানেও। আমন্ত্রিত হয়েছেন লন্ডন, নিউ ইয়র্কের বহু অভিজাত ফ্যাশন শোয়ে।

আর ফিরে তাকাতে হয়নি ‘পেপসি’-কে। বন্ধুমহলে এই নামেই পরিচিত সব্যসাচী। সিঙ্গাপুর, দিল্লি, মুম্বইয়ের ‘ফ্যাশন উইক’ তো আছেই, এক মাত্র ভারতীয় হিসাবে আমন্ত্রিত হন ফ্যাশনের মক্কা মিলানেও। আমন্ত্রিত হয়েছেন লন্ডন, নিউ ইয়র্কের বহু অভিজাত ফ্যাশন শোয়ে।

১২ ১৯

২০০৫ সালে সঞ্জয় লীলা ভন্সলীর হাত ধরে ‘ব্ল্যাক’ ছবিতে প্রথম পোশাক পরিকল্পনার দায়িত্ব পালন। সে সময়ে যেখানেই হাত দিচ্ছেন, সেখানেই যেন সোনা ফলছে। প্রথম ছবিতেই শ্রেষ্ঠ পোশাক পরিকল্পক হিসাবে জাতীয় পুরষ্কার প্রাপ্তি।

১৩ ১৯

এর পর একে একে ‘বাবুল’, ‘লাগা চুনরি মে দাগ’, ‘রাবণ’, ‘গুজারিশ’, ‘পা’, ‘নো ওয়ান কিলড জেসিকা’, ‘ ইংলিশ ভিংলিশ’-এর মতো বিভিন্ন ধারার ছবিতে পোশাক পরিকল্পনার দায়িত্ব সামলেছেন সব্যসাচী।

১৪ ১৯

নিজেদের বিয়ের মতো বিশেষ দিনে এখন বলি নায়িকারা ভরসা করেন সব্যসাচীকেই। বিদ্যা বালন, অনুষ্কা শর্মা, দীপিকা পাড়ুকোন, প্রিয়ঙ্কা চোপড়া, পত্রলেখা রাও, ক্যাটরিনা কইফ— সকলেরই বিয়ের সাজ তৈরি হয়েছে সব্যসাচীর হাতে।

১৫ ১৯

কলকাতা, নয়া দিল্লি, মুম্বই এবং হায়দরাবাদ— ভারতের চারটি জায়গায় রয়েছে তাঁর বিপণি। দেশের বাইরে ক্যালিফোর্নিয়া, অ্যাটলান্টা, লন্ডন এবং দুবাইয়েও রয়েছে সব্যসাচীর নিজস্ব বিপণি। সেখানে শুধু প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য নয়, ছোটদের জন্যও পোশাক রাখা হয়।

১৬ ১৯

সাফল্যের শীর্ষে থাকলে বির্তকের আঁচ এসেই থাকে। নিজের তৈরি করা মঙ্গলসূত্রের অভিনব বিজ্ঞাপন দিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি। সে বিজ্ঞাপনে যে মডেলদের গলায় মঙ্গলসূত্র দেখা গিয়েছিল, তাঁদের পোশাক নিয়েই মূলত বিতর্কের শুরু।

১৭ ১৯

সব্যসাচী খাদ্যরসিকও। ফুরসত পেলে এখনও কলকাতা শহরের বিভিন্ন জায়গার খাবার চেখে দেখেন। বেশ কয়েকটি সাক্ষাৎকারে সব্যসাচী এমনও জানিয়েছেন যে, পোশাক শিল্পী না হলে খাওয়াদাওয়া নিয়ে লেখালেখিকেই পেশা হিসাবে বেছে নিতেন।

১৮ ১৯

তবে সে সব আপাতত হওয়ার নয়। দুনিয়ার ব্যস্ততম পোশাক শিল্পীদের মধ্যে প্রথম সারিতে তিনি। ২০২১ সালে আদিত্য বিড়লা গোষ্ঠীর সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছেন। ৩৯৮ কোটি টাকা দিয়ে সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়ের ব্র্যান্ডে নিজেদের অংশীদারিত্ব গড়ে সেই গোষ্ঠী। হাত মিলিয়েছেন বিশ্বখ্যাত ফ্যাশন সংস্থা ‘এইচ অ্যান্ড এম’-এর সঙ্গেও।

১৯ ১৯

২০২১ সালেই ভারতের প্রথম পোশাক শিল্পী হিসাবে নিজের কাজ দেখানোর সুযোগ পান নিউ ইয়র্কের ১২২ বছরের পুরনো ঐতিহাসিক ফ্যাশন বিপণি ‘বার্গডর্ফ গুডম্যান’-এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy