বচ্ছরকার সাজ যেমনই হোক, পয়লা বৈশাখে বাঙালিয়ানা নিয়ে বাঙালি একটু বেশি সচেতন। বাংলার বর্ষবরণ মানেই নতুন পোশাক, কব্জি ডুবিয়ে বাঙালি খাবার খাওয়া, হালখাতা করতে দোকানে গিয়ে মিষ্টির বাক্স আর ক্যালেন্ডার আনা। সেই বৈশাখী উদ্যাপন কি সাজগোজ ছাড়া হয়? দিনেই বেরোনো হোক বা রাতে— তপ্ত দিনে কী ভাবে সাজাবেন নিজেকে? সহজ কৌশল শেখালেন রূপচর্চা শিল্পী কেয়া শেঠ।
গ্রীষ্ম নিয়ে রবীন্দ্রনাথের গানেই আছে ‘দারুণ অগ্নিবাণে রে’। বৈশাখের আবির্ভাব সেই তপ্ত দিনের সূচনাবাহী। ফলে সেজেগুজে যে বৈশাখী-উদ্যাপনে বেরোবেন, রোদের তাপে ঘেমে-নেয়ে রাস্তাতেই অর্ধেক মেকআপ গলে উঠে গেলে সাজটাই মাটি হয়ে যেতে পারে। তাই রূপটান এমন হতে হবে, যা প্রখর রোদেও চট করে ঘাঁটবে না।
আর ঠিক সে কারণে, রূপটানের গোড়াতেই মুখে বরফ ঘষে নেওয়া জরুরি, বলছেন কেয়া শেঠ। তবে শুধু বরফ নয়, ১০০ মিলিলিটার জলে মিশিয়ে নিতে হবে ১০ মিলিলিটার শসা অথবা তরমুজের রস। মিশ্রণটি বরফের মতোই জমাতে হবে। সেটি মুখে ঘষে নিলেই ত্বক ঠান্ডা হবে। মুখের সূক্ষ্ম রন্ধ্র বন্ধ হয়ে যাবে। বাইরে বেরোনোর সঙ্গে সঙ্গেই দরদরিয়ে ঘাম হবে না।
আরও পড়ুন:
দ্বিতীয় ধাপে প্রয়োজন সানস্ক্রিন। উষ্ণ এবং আর্দ্র আবহাওয়ায় ঘাম হয় বেশি। ফলে ম্যাট ফিনিশ বা জেল বেস্ড সানস্ক্রিনই হবে উপযুক্ত।
পরের ধাপে মাখতে হবে প্রাইমার। একে বলা হয় 'প্রি-বেস'। মুখের ছোটখাটো খুঁত ঢেকে ত্বককে মসৃণ এবং সুন্দর করে তুলতে এই ধাপটি কিন্তু জরুরি। তা ছাড়া প্রি-বেস মেকআপ দীর্ঘস্থায়ী করতেও সাহায্য করে। রূপচর্চা শিল্পী বলছেন, ‘‘এই সময় যে হেতু যথেষ্ট গরম এবং আর্দ্রতার জন্য ঘামের সমস্যাও থাকে, তাই তরল ফাউন্ডেশন এড়িয়ে চলাই ভাল। বিশেষত, দিনভর রোদে বা বাইরে কোথাও ঘোরাঘুরির পরিকল্পনা থাকলে এর পর মাখতে হবে প্যান স্টিক। তার পর দিতে হবে প্যান কেকের পরত। এতে ঘেমে গেলেও, মুখে ফাউন্ডেশন ছোপের মতো ফুটে উঠবে না। তবে সব শেষে ট্রান্সলুসেন্ট পাউডার ব্যবহার জরুরি। এতে গরমেও সাজ চট করে ঘেঁটে যাবে না।’’ মাঝেমধ্যে মুখে এই পাউডার হালকা করে বুলিয়ে নেওয়ার পরামর্শই দিচ্ছেন রূপচর্চা শিল্পী।
মেকআপের অন্যতম অঙ্গ লিপস্টিক। দিনের বেলার সাজে গাঢ় রং নয়, বরং ন্যুড, পিচ, হালকা খয়েরির মতো লিপস্টিকের রংকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন রূপচর্চা শিল্পী। সান্ধ্য বা নৈশ অনুষ্ঠানে লিপস্টিকের রং কিঞ্চিৎ গাঢ় হলে ক্ষতি নেই। তবে লিপস্টিক সেমি ম্যাট হলেই ভাল। হাতের কাছে সেমি ম্যাট লিপস্টিক না থাকলে, ম্যাট লিপস্টিক লাগিয়ে লিপ গ্লস লাগিয়ে নেওয়া যেতে পারে।
সবশেষে মেকআপ শেষ করতে হবে ঘেঁটে যাবে না, এমন কাজল-আইলাইনার দিয়ে। ব্লাশের সঠিক ছোঁয়া সাজকে করে তুলবে সম্পূর্ণ।
বৈশাখী দিনে পোশাকেও থাকুক আরামের ছোঁয়া, জানালেন কেয়া। দিনের অনুষ্ঠানে সাদা, হলুদের নানা শেড, প্যাস্টেল রঙের সুতি, লিনেনের শাড়ি, পোশাক হবে মানানসই। রোদের তাপ থেকে ত্বক বাঁচাতে লম্বা হাতা বা থ্রি কোয়ার্টার হাতার ব্লাউজ বা পোশাকই ভাল। তবে রাতের অনুষ্ঠানে উজ্জ্বল রং পরা যেতেই পারে।
- পয়লা বৈশাখ মানেই বাঙালির বাঙালিত্বের উদ্যাপন। সাদা-লাল শাড়ির ফ্যাশন, বাঙালি খাওয়া-দাওয়া, হালখাতা— এই সবই জাগিয়ে তোলে বাঙালির স্মৃতিমেদুরতাকে।
- বছর ঘুরে আবার আসছে বাংলার নববর্ষ। ১৪৩২ আরও অনেক নতুন কিছু নিয়ে আসবে। নববর্ষকে কী ভাবে স্বাগত জানাবে বাঙালি? তারই হাল হদিস।
-
মননে সাহিত্য-শিল্পের বাঙালিয়ানা, বল্লভপুরের রূপকথা শুনবে ক্যাম্পাস শহর
-
কেউ শাড়ি, কেউ সালোয়ার, সাবেক ও সাম্প্রতিকের যুগলবন্দি নববর্ষে, কেমন সাজলেন টলিসুন্দরীরা
-
কাঁধে এক কাঁদি কলা, চুলে হলুদ-বেগনি ফুল, সমুদ্রতটে আঁচল উড়িয়ে নতুন বছরকে স্বাগত স্বস্তিকার
-
বিশেষ দিনে ভিড় করে স্মৃতিমেদুরতা, বর্তমান প্রজন্মও অতীতে চোখ রাখে, নববর্ষে মনে করালেন সোহম
-
দিনের শেষে মেকআপ তুলে ফেলাও জরুরি, ফেসওয়াশ ফুরিয়ে গেলে কী করবেন?