প্রতীকী ছবি।
শীতে উজ্জ্বল ও গাঢ় রঙের পোশাক পরতে ইচ্ছে করলেও অনেকের সেই ইচ্ছে আর পূরণ হবার জো নেই। খুশকির ঝরে পোশাকের সৌন্দর্য নষ্ট করে দেয়। খুশকি বা ড্যানড্রাফ কিন্তু আদপে ত্বকেরই সমস্যা। ডাক্তারি মতে এর নাম পিট্রিয়াসিস ক্যাপিটিস।
বিশ্বের প্রায় ৫০ শতাংশ বয়ঃসন্ধি ও পূর্ণ বয়সি মানুষ খুশকি নিয়ে বিব্রত। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অল্পবিস্তর খুশকি হলে মাথা পরিষ্কার রাখলে তা আপনিই সেরে যায়। কিন্তু যখন খুশকির সমস্যা দীর্ঘস্থায়ি হয়ে দাঁড়ায় তখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি বলে পরামর্শ দিলেন ত্বক বিশেষজ্ঞ সন্দীপন ধর। সপ্তাহে তিন দিন শ্যাম্পু (এক দিন কিটোকোনাজল) করে মাথা পরিষ্কার করার পরেও যদি খুশকি না সারে, বারবার হয় এবং খুব বাড়াবাড়ি ধরনের খুশকি টানা দু-তিন মাস না সারে, তা হলে অবশ্যই ত্বক বিশেষজ্ঞর পরামর্শ নিতে হবে।
শীতের সময় খুশকির প্রবণতা বেড়ে যায়। শুষ্ক বাতাসে খুশকি বাড়ে এই ধারণার বশবর্তী হয়ে অনেকেই মাথায় গরম তেল ম্যাসাজ করেন। এর ফলে খুশকির সমস্যা আরও বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। সন্দীপন ধর জানালেন যে, আমাদের ত্বকের নীচে সিবেসাস গ্ল্যান্ড নামে এক ধরনের গ্রন্থী থাকে। এর থেকে সেবাম নামে এক তৈলাক্ত পদার্থ বেরিয়ে আমাদের চুল ও ত্বককে নরম ও মসৃণ রাখতে সাহায্য করে। শীতের সময়ে শুষ্ক আবহাওয়ায় কারও কারও সিবাম নিঃসরণ বেড়ে গিয়ে খুশকির সমস্যা বাড়িয়ে দেয়। এর উপর তেল মাখলে সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।
বয়ঃসন্ধির ছেলেমেয়েদের মধ্যে খুশকির সমস্যা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। এই বয়সে শরীরে নানা পরিবর্তন আসে, তার জন্যে বিভিন্ন রকম হরমোন সক্রিয় হয়ে ওঠে। আর এই কারনেই খুশকি আর ব্রণ কমবয়সিদের মধ্যেই বেশি দেখা যায়।
খুশকি কি কঠিন অসুখের ইঙ্গিত? কী করে বুঝবেন
খুশকি মোটেও কঠিন অসুখ নয়। তবে অনেক সময় জটিল ত্বকের অসুখের উপসর্গ হিসেবে মাথা থেকে ত্বকের খোসা উঠে যায়। সেবোরিক ডার্মাটাইটিস, সোরিয়াসিস, একজিমা বা কন্ট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস হলেও মাথা থেকে খুশকির মতো শুকনো ছাল ওঠে। এক জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বুঝতে পারেন অসুখটা সত্যিই খুশকি না অন্য সমস্যা। সঠিক চিকিৎসার সাহায্যে সব সমস্যাই নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কিন্তু সমস্যা ফেলে রাখলে বা ভেষজ ভেবে নানা রকম সামগ্রী ব্যবহার করলে খুশকির সমস্যা ক্রনিক হয়ে চুল ঝরা বেড়ে যায়।
কী ভাবে সামলাবেন
সন্দীপন আশ্বস্ত করলেন যে খুশকি ছোঁয়াচে নয়। তবে মাথায় কোনও ইনফেকশন হলে তা একজন থেকে অন্যজনে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই আলাদা চিরুনি ব্যবহার করা উচিত। বাজার চলতি খুশকি নাশক শ্যাম্পুতে খুব একটা কাজ হয় না। কিটোকোনাজল নামে খুশকি নাশক শ্যাম্পু পাওয়া যায়। সপ্তাহে এক বার এই শ্যাম্পু করতে হবে। অন্য দিন সাধারণ শ্যাম্পু। সপ্তাহে কম পক্ষে তিন দিন শ্যাম্পু করা দরকার। মাথা পরিষ্কার থাকলে খুসকির সমস্যা থাকবে না। শ্যাম্পু করার আগে মাথার তালুতে তেল মেখে নেওয়া যেতে পারে। যদি মাথার তালু খুব শুকিয়ে যায় অল্প সাধারণ নারকেল তেল লাগানো যেতে পারে, কোনও সুগন্ধি বা রঙিন তেল মাখা ঠিক নয়। বাড়াবাড়ি রকমের খুশকি হলে আইসো-ট্রেটিনয়েন গ্রুপের কিছু ওষুধ খেতে হতে পারে, চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খুশকির চিকিৎসা করা উচিত। পরিচ্ছন্ন থেকে খুশকি প্রতিরোধ করুন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy