ঘামে ভেজা চুলের খেয়াল রাখা জরুরি। ছবি: সংগৃহীত।
গরমে মাথার ঘাম পায়ে শুধু পায়ে পড়ে না। চুলের আনাচে-কানাচেও জমতে থাকে। শ্যাম্পু করা চুল খুলে হোক কিংবা বেঁধে— গরমে দিনের বেলা বাইরে বেরোলেই ঘেমেনেয়ে চপচপে হয়ে যাচ্ছে শরীর। ঘাম বসে চুলের হাল বেহাল হয়ে পড়ছে।
ঘামের কারণে চুলের গোড়া দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে চুল ঝরতে থাকে। সেই সঙ্গে নানা সংক্রমণের ভয়ও এড়িয়ে যাওয়া যায় না। তাই বলে কি ঘামের ভয়ে চুল ছেড়ে গ্রীষ্মের দুপুরে বেরোতে পারবেন না? নিশ্চয় পারবেন।
চুল ঘামে ভিজলেও যাতে কোনও সমস্যা না হয়, তার উপায়গুলি জেনে নিতে হবে। সমাধানের পথে হাঁটার আগে সমস্যার গভীরে ডুব দেওয়া জরুরি। তা হলে সমস্যা যত কঠিনই হোক, গোড়া থেকে সমাধান করা যায়। মাথায় স্কার্ফ জড়িয়ে ছাতার আড়ালে থেকেও রাস্তায় বেরোলেই মাথার ত্বক ঘেমে যাচ্ছে। ঘামের পরিমাণ কারও বেশি হচ্ছে, কারও কম। তবে কমবেশি সকলেই এই সমস্যায় জর্জরিত।
রোদের তাপ আর অত্যধিক গরম থেকেই কি এমন হচ্ছে? চর্মরোগ চিকিৎসক সন্দীপন ধরের কথায়, ‘‘মাথায় ঘাম জমার অন্যতম কারণ হচ্ছে অত্যধিক আর্দ্রতা। উষ্ণতার পারদে কলকাতার চেয়েও এগিয়ে থাকে অন্যান্য রাজ্য। কিন্তু সেখানে আর্দ্রতার পরিমাণ এত বেশি নয়। অতিরিক্ত আর্দ্রতা এই ধরনের সমস্যার জন্ম দিচ্ছে।’’
একই মত অন্য এক চর্মরোগ চিকিৎসক অভীক শীলেরও। তাঁর কথায়, ‘‘আর্দ্রতার কারণে ঘাম বেশি হচ্ছে। শরীরের পাশাপাশি মাথার ত্বকও ঘেমে যাচ্ছে। সেখান থেকেই নানা ধরনের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে। এতে ক্ষতি হয় চুলের। অনেকেই মাথায় ঘাম জমার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখেন না। আবার অনেকে বুঝতে পারেন না কী ভাবে নিষ্কৃতি পাবেন এর থেকে। কিন্তু যে কোনও উপায়েই হোক মাথার ত্বকে ঘাম জমতে দেওয়া যাবে না।’’
মাথায় ঘাম জমে কী কী সমস্যা হতে পারে?
মাথায় ঘাম জমার সমস্যা একেবারেই হালকা ভাবে নিলে চলবে না। মাথায় ঘাম বসে নানা ধরনের সংক্রমণজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। ফুসকুড়ি, র্যাশের ঝুঁকি তো থাকেই। সেই সঙ্গে মাথার ত্বকের ঘর্মগ্রন্থিগুলিও ঘামে বুজে যায়। ফলে সংক্রমণ ছ়়ড়িয়ে পড়ে মাথায়।
কোন পথে হাঁটলে নিষ্কৃতি মিলবে সমস্যা থেকে?
১. যতটা সম্ভব কম রোদে বেরোনোই শ্রেয়। বিশেষ করে দিনের যে সময়ে চড়া রোদ ওঠে, তখন বাইরে না যাওয়াই ভাল।
২. প্রয়োজনে বাইরে না বেরিয়ে উপায় নেই। সে ক্ষেত্রে মাথায় ভাল করে স্কার্ফ জড়িয়ে নিতে হবে। সঙ্গে ছাতা রাখা জরুরি।
৩. বাড়ি ফিরে স্নান করে নিতে হবে। সারা দিনে অন্তত ৪ বার স্নান করা যেতে পারে। তাতে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
৪. এই গরমে প্রতি দিন শ্যাম্পু করলেও অসুবিধা নেই। তেমনটাই জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরাও। তবে সে ক্ষেত্রে মৃদু ক্ষারযুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে।
৫. গরমে স্ট্রেটনার, ড্রায়ারের মতো যন্ত্র ব্যবহার না করাই ভাল। এই ধরনের যন্ত্রের ব্যবহারে ত্বক বেশি তৈলাক্ত হয়ে পড়ে। খুশকির পরিমাণও বেড়ে যায়।
৬. হাতের কাছে সব সময় একটা সুতির কাপ়ড় কিংবা তোয়ালে রাখতে পারলে ভাল। তা হলে মাথা ঘেমে গেলেই মুছে নিতে পারবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy