ত্বকের যত্নে বছরভরই ব্যবহার করা চলে ক্রিম। বলিরেখা কমানো, রুক্ষ ভাব দূর করা— প্রয়োজন অনুযায়ী তার ব্যবহার। ক্রিমের কথা উঠলে প্রথমেই মুখে মাখার প্রসাধনীর কথাই মাথায় আসে সকলের। তবে চুলে মাখার জন্যও ক্রিমের ব্যবহার নতুন নয়। ইদানীং প্রসাধনীর দোকানে গেলে দেখা যায় রকমারি সংস্থার নানা রকম হেয়ার ক্রিম। অনেকেই মনে করেন, কেশসজ্জার জন্যই এর ব্যবহার। বিশেষত পুরুষ মহলে এই ধরনের ক্রিমের যথেষ্ট জনপ্রিয়তা রয়েছে। তবে চুলের ক্রিম নিয়ে নতুন ফর্মুলা, ব্যবহার বলছে অন্য কথা। শুধু পুরুষদের চুলের জন্য যেমন ক্রিম রয়েছে, তেমনই মহিলাদের জন্যও রয়েছে রকমারি ক্রিম। এবার এমন জিনিসও আছে যা নারী, পুরুষ উভয়েই মাখতে পারেন।
কেন মাখবেন চুলের ক্রিম?
রকমারি তেল, উপাদানের মিশ্রণে তৈরি ক্রিম রুক্ষ চুল বাগে আনতে পারে নিমেষেই। ত্বকের আর্দ্রতা, জৌলুস ধরে রাখতে যেমন মুখে ক্রিম মাখেন সকলে, ঠিক তেমনই হেয়ার ক্রিম চুলের আর্দ্রতা বজায় রাখার পাশাপাশি পুষ্টি জোগাতেও সহায়ক। রুক্ষ চুলে জট পড়ে দ্রুত। তা ছাড়া ডগা ফাটার সমস্যাও দেখা যায়। এই রকম চুল নরম এবং মসৃণ রাখতে সাহায্য করে ক্রিম। সূর্যের অতি ক্ষতিকারক অতিবেগনি রশ্মি থেকে চুল বাঁচাতেও অনেক সময় বর্ম হিসাবে কাজ করে কোনও কোনও ক্রিম।
কী থাকে এতে?
চুলের জন্য তৈরি এক এক ধরনের ক্রিমে এক এক রকম উপকরণ থাকে। মূলত চুলের ক্রিমে ভিটামিন, এসেনশিয়াল অয়েল, কেরিয়ার অয়েল, ফ্যাটি অ্যাসিড, প্রোটিন— এই ধরনের উপাদান থাকে।
কোন ক্রিম চুলের জন্য উপযোগী?
ত্বকের যেমন বিভিন্ন ধরন হয়, চুলেরও তাই। কারও চুলে শ্যাম্পু করার দু’দিনের মধ্যেই তেলতেলে ভাব ফিরে আসে। কারও আবার তেল মাখলেও রুক্ষ ভাব যায় না। তৈলাক্ত, শুষ্ক, স্পর্শকাতর—বিভিন্ন ধরনের চুলের সমস্যাও হয় ভিন্ন। কারও চুলে আর্দ্রতার অভাব হয়, কারও আবার কেরাটিন নামক প্রোটিন ঠিকমতো তৈরি না হওয়ায় চুল পাতলা হয়ে ঝরতে থাকে। কারও সমস্যা চুলের জট, ডগা ফাটা নিয়ে। চুলের ধরন এবং সমস্যা ভেদে ক্রিমও হয় আলাদা।
কোন ধরনের চুলের জন্য কোন ক্রিম?
শুষ্ক চুলের জন্য শিয়া বাটার, নারকেল, কাঠবাদামের তেল ভাল। ভিটামিন, তেল, মাখন— এই ধরনের উপাদান রয়েছে যে ক্রিমে, সেটি বেছে নিতে পারেন।
যন্ত্রের ব্যবহারে উচ্চ তাপমাত্রায় কেশসজ্জার ফলে চুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অতিরিক্ত রোদের তাপেও চুলের ক্ষতি হয়। এই ধরনের চুলের যত্নে কেরাটিন সমৃদ্ধ ক্রিম কার্যকর। আবার জট পড়া চুলের জন্য অ্যাভোকাডো ক্রিম, তৈলাক্ত চুলের জন্য অ্যালো ভেরা বেসড চুলের ক্রিম বেছে নিতে পারেন।
কী ভাবে মাখবেন?
ভিজে বা শুকনো— যে কোনও চুলেই ক্রিম মাখা যায়। তবে চুল অবশ্যই পরিষ্কার থাকা দরকার। শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে তোয়ালে দিয়ে মুছে নিন। তার পর ক্রিম মাখতে পারেন। কোনও কোনও ক্রিম মাথার ত্বক থেকে চুলে মালিশ করাও যায়। আবার বাইরে বেরোনোর সময় যদি মনে হয় চুলে জট পড়েছে বা রুক্ষ দেখাচ্ছে, তখন শুকনো চুলেও অল্প করে ক্রিম মেখে নিতে পারেন। বিষয়টি নির্ভর করবে ক্রিমের ধরনের উপর।