নিয়ম করে তেল মাখছেন। শ্যাম্পু, কন্ডিশনারও ব্যবহার করেন। তবু চুলের রুক্ষ ভাব যাচ্ছে না! চিকিৎসক থেকে রূপচর্চা জগতের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা এ জন্য দূষণকেও দায়ী করেন। পুষ্টিকর খাদ্যগ্রহণের অভাব, জল কম খাওয়া, ধোঁয়া, ধুলো, দূষণের প্রভাবে চুল রুক্ষ হয়ে যাওয়া, ঝরে পড়ার মতো একাধিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
সমাধানে প্রয়োজন চুলের বাড়তি যত্ন, যা শুধু তেল মাখা, শ্যাম্পু, কন্ডিশনার ব্যবহারেই হয় না। চুলে বাড়তি পুষ্টি জোগাতে, আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে মাস্ক। সপ্তাহে এক দিন বা মাসে দুই থেকে তিন দিন মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দেন চুল নিয়ে চর্চাকারীরা। কিন্তু মাখবেন কোনটি? বাজারচলতি মাস্কে রাসায়নিকের ব্যবহার হয়। বদলে প্রাকৃতিক উপাদানে ভরসা করতে চাইলে বেছে নিতে পারেন ফল।
কলা: পটাশিয়াম, ভিটামিন এ, বায়োটিনে সমৃদ্ধ কলা স্বাস্থ্যের পক্ষে যেমন উপকারী, চুলের জন্যও তেমনই। ভিটামিন এ এবং বায়োটিন আর্দ্রতা জুগিয়ে চুল নরম এবং সুন্দর করে তোলে। পটাশিয়াম চুলের গোড়া মজবুত করতে সাহায্য করে, ফলে চুল ঝরা বন্ধ হয়। রুক্ষ কেশে জেল্লা ফেরাতে এই ফল বেশ উপযোগী।
মাস্কের উপকরণ
৩ টেবিল চামচ টক দই
১টি পাকা কলা
১ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল
পদ্ধতি: পাকা কলা চটকে নিন। খেয়াল রাখবেন, যেন কোনও দলা না থাকে। এর সঙ্গে মিশিয়ে নিন ফেটানো টক দই এবং অলিভ অয়েল। সমস্ত উপকরণ মিশিয়ে শ্যাম্পু করা পরিষ্কার চুলে মিশ্রণটি মাখতে হবে। মাথার ত্বক থেকে চুলের ডগা পর্যন্ত তা ভাল ভাবে মেখে হালকা হাতে মালিশ করুন। মিনিট ২০ রেখে ঈষদুষ্ণ জলে চুল ভাল করে ধুয়ে নিন।
পেঁপে: খুশকি, চুলের ডগা ফাটার সমস্যায় জেরবার। কেশচর্চায় ব্যবহার করে দেখুন পাকা পেঁপে। ত্বকের যত্নে এই ফলের ব্যবহার নতুন নয়। তবে চুলের জন্যও এটি ভাল। পেঁপেয় থাকা প্যাপাইন নামক উৎসেচক মাথার ত্বক থেকে মৃত কোষ সরাতে সাহায্য করে। এতে থাকা ভিটামিন এ, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টও চুলের জন্য উপকারী। রুক্ষ চুল নরম করতেও পেঁপের মাস্ক কার্যকর।
আরও পড়ুন:
উপকরণ
২ টেবিল চামচ পাকা পেঁপের শাঁস
২ টেবিল চামচ নিমপাতা বাটা
২ টেবিল চামচ নারকেল তেল
পদ্ধতি: খুশকি, সারা ক্ষণ মাথা চুলকানোর মতো সমস্যা হলে এই ধরনের মাস্ক খুব উপকারী। নিমে রয়েছে অ্যান্টিসেপটিক উপাদান। পেঁপে, নিম এবং নারকেল তেল মিশিয়ে মাথার ত্বক থেকে চুলে ভাল ভাবে মাখতে হবে। মালিশ করতে হবে ১০-১৫ মিনিট। এর পর আরও ১৫ মিনিট সেটি মাথায় রেখে চুল ধুয়ে ফেলুন বা শ্যাম্পু করে নিন।
আমলকি
চুলের যত্নে আমলকির ব্যবহার বহু পুরনো। ভিটামিন সি, ই এবং রকমারি খনিজে ভরপুর ফলটি চুল ঝরা, অকালপক্বতা, খুশকি রোধে সহায়ক। ভিটামিনের গুণেও চুলও লম্বা হয় তাড়াতাড়ি।
উপকরণ
৪ টেবিল চামচ আমলকি পাউডার
১ টেবিল চামচ মধু
২ টেবিল চামচ টক দই
পদ্ধতি: সমস্ত উপকরণ ভাল করে মিশিয়ে নিন। তার পর শ্যাম্পু করা পরিষ্কার চুলে ভাল করে মেখে আধ ঘণ্টা রাখুন। মাস্ক শুকিয়ে এলে ধুয়ে ফেলুন। রুক্ষ, ডগা ফাটা চুলের জন্য এই ধরনের মাস্ক খুব উপকারী। মধুতে রয়েছে ভিটামিন বি, ম্যাগনেশিয়াম, জ়িঙ্ক। চুলকে ময়েশ্চারাইজ় করতে সাহায্য করে মধু। দই চুলকে নরম করতে সাহায্য করে।