বাড়ছে তাপ, দূষণের পাল্লাও ভারী। ফলস্বরূপ দেখা দিচ্ছে ত্বকের নানা সমস্যা। বলিরেখা থেকে ব্রণ, অকালে বুড়িয়ে যাওয়া, কুঁচকে যাওয়া ত্বক, দাগছোপ— নানা সমস্যায় জেরবার হচ্ছেন অনেকেই। নিষ্প্রাণ ত্বকে ফের তারুণ্যের জেল্লা এনে দিতে পারে গ্লুটাথিয়োন। না, কোনও প্রসাধনী নয়, এমন এক অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, যা তৈরি হয় দেহকোষেই। অস্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া, মদ্যপান, রাত জাগা ইত্যাদি নানা কারণে এর মাত্রা কমতে থাকে। তখনই ত্বকের নানা সমস্যা দেখা দেয়।
কী এই গ্লুটাথিয়োন?
প্রাকৃতিক অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, যা শরীরেই তৈরি হয়। গ্লুটাথিয়োনের কাজ হল ত্বকের ঔজ্জ্বল্য ধরে রাখা। এই অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টটির কারণেই ত্বকে তারুণ্যের দীপ্তি থাকে। গ্লুটাথিয়োন তিন রকম অ্যামাইনো অ্যাসিডের মিশ্রণ— গ্লাইসিন, গ্লুটামিক ও সিস্টাইন অ্যাসিড। এদের কাজ হল শরীর থেকে টক্সিন বা দূষিত পদার্থ বার করে দেওয়া। এই অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে তৈরি হয় শরীরে, তা হলে ত্বকে দাগছোপ, বলিরেখা পড়বে না সহজে। মেলানোসাইট কোষ থেকে তৈরি মেলানিন রঞ্জকের কারণেই ত্বকের রং এক এক জনের ক্ষেত্রে এক এক রকম হয়। মেলানিনের উৎপাদন খুব বেড়ে গেলে ত্বকের রং গাঢ় হতে থাকে। এর কারণে ত্বকে কালচে ছোপও পড়তে পারে। গ্লুটাথিয়োন মেলানিন রঞ্জকের ভারসাম্য বজায় রাখতে বড় ভূমিকা নেয়।
ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে অনেকেই নানা রকমের থেরাপি করাচ্ছেন এখন, যেমন, কেমিক্যাল পিলিং, হাইড্রাফেশিয়াল, স্কিন বুস্টিং ইত্যাদি। এই ধরনের থেরাপিতে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টের প্রয়োগও হয়। তাতে গ্লুটাথিয়োনের প্রয়োগ করা হয় অনেক সময়েই।
আরও পড়ুন:
কোন কোন খাবার থেকে গ্লুটাথিয়োন পাবেন?
সৌন্দর্যচর্চায় ত্বকে গ্লুটাথিয়োনের মাত্রা বাড়াতে নানা রকম সাপ্লিমেন্ট, ইঞ্জেকশন পাওয়া যায়। তবে রোজের খাওয়াদাওয়া থেকেও অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টটি পেতে পারেন। কী কী খাবেন?
পালংশাক
ভিটামিন সি, ই ও বিটা-ক্যারোটিন সমৃদ্ধ পালংশাকে ভরপুর মাত্রায় গ্লুটাথিয়োন আছে। পালংশাকের স্যালাড বা স্মুদি বানিয়ে খেলে বেশি উপকার পাবেন।
ব্রকোলি
ব্রকোলি ভিটামিন ও নানা রকম খনিজে সমৃদ্ধ। এই সব্জিটি খেলে শরীরে গ্লুটাথিয়োনের মাত্রা বাড়ে। তবে ব্রকোলি স্যালাডে বা সেদ্ধ করে খেলে লাভ বেশি। বেশি মশলা দিয়ে রান্না করে খেলে উপকার হবে না।
রসুন
রসুনে সরাসরি গ্লুটাথিয়োন না থাকলেও, এতে সালফার থাকে, যা শরীরে গ্লুটাথিয়োন তৈরিতে বড় ভূমিকা নেয়। তাই রসুন ত্বকের জন্যও ভাল।
গ্লুটাথিয়োন ড্রিঙ্ক
একটি বড় কাচের জারে কুচিয়ে নেওয়া বিট, গাজর পেঁপের টুকরো, বেদানা ও পালংশাক নিতে হবে। সমস্ত উপকরণ ব্লেন্ডারে পিষে নিয়ে রসটা ছেঁকে নিন। এ বার তাতে পাতিলেবুর রস মিশিয়ে খান। প্রতি দিন এই রস খেলে লিভার ভাল থাকবে, গ্লুটাথিয়োনও বেশি মাত্রায় তৈরি হবে। ত্বক ভাল থাকবে, পাশাপাশি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে।