কম খরচে ত্বক ও চুলের জেল্লা ফিরবে, কী কী তেল বাছবেন। ছবি: ফ্রিপিক।
ঘর এবং বাইরে— একই সঙ্গে দু’দিক সামলাতে গিয়ে ত্বকের হাল ক্রমশ খারাপ হতে থাকে। শুধু ত্বক নয় চুলেরও বেহাল দশা। অন্যতম কারণ হল, রূপচর্চার জন্য সময়ের অভাব। শরীরের যত্ন নেওয়ার ফুরসত মেলে না অনেক সময়েই। তবে রূপচর্চা মানেই যে সময়সাপেক্ষ, তা নয়। কিছুটা সময় দিলেই ত্বক ও চুলের জেল্লা ফিরবে। তার জন্য লাগবে তেল। ঘন কালো চুল থেকে লাবণ্যময় ত্বক— নিয়মিত তেলের আদর পেলে ত্বক আর চুলের দশা ফিরতে বাধ্য! উপকারী ফ্যাটি অ্যাসিড থেকে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, ভিটামিন এবং খনিজের উৎস হল তেল।
তবে এমনও অনেকে রয়েছেন, যাঁরা এই তেল জিনিসটি বিন্দুমাত্র পছন্দ করেন না। শীতকালে যদিও বা শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে তেলের দ্বারস্থ হন, বছরের বাকি সময় তো নৈব নৈব চ। আর ত্বক বা চুল তৈলাক্ত হলে তো কথাই নেই। সত্যি কথা বলতে, তেলের মতো উপকারী উপাদান, আর দু’টো নেই। তবে কী তেল ব্যবহার করবেন এবং কী ভাবে সেটা জেনে নেওয়া জরুরি।
ত্বক ও চুলের ধরন বুঝে তেল বাছুন
১) ত্বকে যদি বলিরেখা পড়তে শুরু করে, তা হলে প্রিমরোজ় অয়েল এবং অলিভ অয়েল খুব ভাল। যদি মনে হয় ত্বকে ক্লান্তির ছাপ পড়ছে, বুড়োটে দেখাচ্ছে, তা হলে খুব কার্যকরী হতে পারে এই দুই তেল। ত্বক যদি খুব তৈলাক্ত হয়, তা হলে গ্রেপসিড তেল বেছে নিতে পারেন।
২) শুষ্ক ত্বক, রুক্ষ চুলের জন্য বাছুন নারকেল তেল। ত্বক এবং চুলকে যাবতীয় পুষ্টি প্রদান করবে নারকেল তেল। ত্বকের জেল্লা ফেরাতে ও চুল কোমল রাখতে এর জুড়ি মেলা ভার।
৩) আপনার ত্বকে যদি ব্রণ, ফুসকুরির সমস্যা থাকে, তা হলে সবচেয়ে ভাল কাজ করতে পারে জোজোবা বা ক্যামেলিয়া অয়েল। ত্বকের রন্ধ্রে জমে থাকা ময়লা বার করে দেয় ক্যামেলিয়া তেল। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বক মসৃণ দেখায়।
৪) ত্বকে চুলকানি, র্যাশ, জ্বালাপোড়া ভাব থাকলে টি-ট্রি অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। ক্যামোমাইল তেলও ভাল। মন পরিশ্রান্ত থাকলে তার ছাপ পড়ে মুখে। এই তেল ব্যবহারে সেই ক্লান্তির ছায়া দূর হয়ে যায় সহজেই। পাশাপাশি ত্বকে কোনও রকম প্রদাহ হলে তা-ও দূর করতে পারে এই তেল।
৫) আপনাকে কি রোজ বাইরে বেরোতে হয়? তা হলে রোদে পুড়ে ত্বকে নিশ্চয়ই ট্যান পড়েছে? সেক্ষেত্রে ল্যাভেন্ডার তেল ব্যবহার করা যেতে পারে। ত্বকের যে কোনও দাগছোপ দূর করতে এই তেলের জুড়ি মেলা ভার।
৬) রুক্ষ চুল, খুশকির সমস্যা থাকলে ব্যবহার করা যেতে পারে রোজ়মেরি অয়েল। রোজের যে তেল মাথায় মাখেন, তার সঙ্গে কয়েক ফোঁটা মিশিয়ে নেবেন রোজ়মেরি তেল। নিয়মিত চুলে মাখলে খুব তাড়াতাড়ি খুশকি দূর হবে। চুল হবে নরম ও জেল্লাদার।
৭) ঠিকমতো যত্ন না দিলে তাড়াতাড়ি চুলের ডগা ফেটে যায়। সে ক্ষেত্রে অল্প পরিমাণ আর্গান অয়েল হাতের তালুতে নিয়ে ভালভাবে ম্যাসাজ করুন চুলে। শ্যাম্পু করার আগেও অল্প পরিমাণে এই তেল চুলে মালিশ করে নিতে পারেন। এতে শ্যাম্পুর পরও চুল নরম থাকবে।
৮) পাতলা চুল এবং চুল পড়ার সমস্যায় কাজে লাগাতে পারেন ক্যাস্টর অয়েল। তবে রাতারাতি ফলের আশা করা কিন্তু বৃথা। অন্তত মাস তিনেক সময় দিতে হবে। নিয়মিত অল্প পরিমাণ বিশুদ্ধ ক্যাস্টর অয়েল মাথার তালুতে লাগিয়ে হালকা হাতে ম্যাসাজ করুন। চুল খুব চটচটে মনে হলে পর দিন শ্যাম্পু করে নিতে পারেন।
৯) শুষ্ক ত্বকে ফাউন্ডেশন লাগাতে সমস্যা হলে ফাউন্ডেশনের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা অলিভ বা জোজোবা অয়েল মিশিয়ে নিতে পারেন। এতে ফাউন্ডেশন ত্বকে ভাল ভাবে বসবে।
১০) লিপবামে ঠোঁটের শুষ্কতার সমস্যা না কমলে, লিপস্টিক লাগানোর কিছু ক্ষণ আগে ঠোঁটে অল্প পরিমাণে ক্যাস্টর অয়েল লাগিয়ে রাখুন। মিনিট ৫-৭ রেখে টিস্যু পেপার ঠোঁটে চেপে ধরুন, যাতে অতিরিক্ত তেল টিস্যু পেপার শুষে নেয়। এর পর লিপস্টিক লাগান।
এই প্রতিবেদন সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। সকলের ত্বক ও চুলের ধরন এক নয়। অ্যালার্জি জনিত সমস্যাও থাকে অনেকের। সেক্ষেত্রে ত্বক ও চুলে কী ধরনের তেল ব্যবহার করতে পারবেন তা ত্বকের চিকিৎসকেদের থেকে জেনে নেওয়াই ভাল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy