নিজের আঁকা ছবির সামনে শিল্পী সুমন চন্দ্র। — নিজস্ব চিত্র।
শুধু শহরেরই কাহিনি কেন দেখবে শহর? সে কথা মনে রেখেই নানা প্রান্তের শিল্পীর কাজ দেখায় বিশেষ গুরুত্ব দেয় সিমা গ্যালারি। শুরু হয় ‘সিমা অ্যাওয়ার্ডস’। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে জমা পড়ে নতুন নতুন কাজ। ক্যানভাসে উঠে আসে চেনা-অচেনা কথা। শহর চিনে নেয় চোখের আড়ালে কাজ করা শিল্পীদের। শনিবার তেমনই এক শিল্পীর একক প্রদর্শনী শুরু হল সেই গ্যালারিতে। পেন্টিং-ভাস্কর্যে উঠে এল বাংলার বিভিন্ন কোলিয়ারির গল্প।
তমলুকের ছেলে সুমন চন্দ্র বিশ্বভারতীর কলাভবনের ছাত্র। সেখানে লেখাপড়া শেষ হওয়ার পর থেকেই মন দিয়েছেন বাংলার বিভিন্ন কোলিয়ারি অঞ্চলে। সেখান থেকেই উঠে আসে নানা ছবি। দিন-রাত কাটে কয়লার খনির আশপাশে। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘‘ঠাকুরদা কয়লার ব্যবসায় শুরু করেছিলেন। বাবাও সে কাজে যুক্ত। ছোটবেলা থেকেই কয়লা ঢালা দেখতে নানা চিত্র আমার চোখে ভাসে। পরে যখন ছবি আঁকা শুরু করি, তেমনই সব ছবি আমাকে টানে।’’ সুমন মূলত ‘ল্যান্ডস্কেপ’ নিয়ে কাজ করেন। কোলিয়ারি অঞ্চলের ভূদৃশ্য ফিরে ফিরে আসে তাঁর ক্যানভাসে। সিমা গ্যালারির প্রদর্শনী ‘সাইলেন্ট ভিশন’-এ সে সব ছবি দেখতে পাবে শহুরে চোখ।
শনিবার সন্ধ্যায় ছিল সুমনের সেই প্রদর্শনীর সূচনা অনুষ্ঠান। সে উপলক্ষে গ্যালারিতে জড়ো হন শিল্পী ও গুণীজনেরা। শিল্পী পরেশ মাইতি, জয়শ্রী বর্মণ, শ্রেয়সী চট্টোপাধ্যায়কে দেখা গেল তরুণ শিল্পীর কাজ মন দিয়ে উপভোগ করতে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নৃত্যশিল্পী তনুশ্রীশঙ্করও।
২০২২ সালে ‘সিমা অ্যাওয়ার্ডস’ পেয়েছিলেন সুমন। সূচনা অনুষ্ঠানে সে কথা উল্লেখ করেন সিমা গ্যালারির অধিকর্তা রাখী সরকার। সুমনের মতো বিভিন্ন প্রান্তিক শহরের শিল্পীদের কাজ দেখতে পেয়ে যে শহুরে দর্শকের ভাবনা প্রসারিত হওয়ার সুযোগ তৈরি হচ্ছে, সে বিষয়টি নানা ভাবে উঠে আসে তাঁর কথায়। তিনি বলেন, ‘‘সুমনের কাজে কোলিয়ারি অঞ্চলের বহু অসহায় জীবনের কাহিনি তুলে আনে। তাঁদের চলা-ফেরা, ভাগ্য, ভাবনা সূক্ষ্ম ভাবে ধরা পড়ে শিল্পীর ক্যানভাসে।’’
সে সব ক্যানভাসেই সেজেছে সিমা গ্যালারি। প্রদর্শনী চলবে আগামী ১৯ অগস্ট পর্যন্ত। প্রতি সপ্তাহে সোমবার থেকে শনিবার পর্যন্ত খোলা থাকে গ্যালারি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy