হতাশা নয়, বরং মৃত্যুর স্তব্ধতাকে অনুভব করা। নিজের সেইভাবনা ও জীবনবোধকে পাথেয় করেই পৃথিবীকে বিদায় জানাক একটি প্রাণ। সেই লক্ষ্যেই কোনও ব্যক্তির মৃত্যুর সময়টা কেমন ভাবে কাটবে, তা স্থির করতে আগাম অঙ্গীকারপত্র স্বাক্ষর চালু করল শহরের বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্টজনদের একটি সংগঠন।
সেই সংগঠনের অন্যতম সদস্য, চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, ‘‘মাসছয়েক আগে সলতে পাকানোরকাজটা শুরু হয়েছিল। এ বার সর্বসাধারণের কাছে পৌঁছনোর জন্য পথ চলা শুরু হল। তারই প্রথম ধাপে প্রতীকী ভাবে অঙ্গীকারপত্র স্বাক্ষর করলেন অনেকে।’’ সে জন্যমঙ্গলবার বাংলা অ্যাকাডেমি সভাগৃহে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল ‘দ্যুলোক-পাড়ি’। যাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, সম্মানের সঙ্গে মৃত্যু। তার জন্য অ্যাডভান্স মেডিক্যাল ডিরেক্টিভ বা অঙ্গীকারপত্র তৈরি করা হয়েছে। আগাম সেই পত্রে স্বাক্ষর করে রাখলে জীবনের একেবারে শেষ সময়ে গিয়ে যন্ত্র বা কড়া ওষুধনির্ভর সময় না কাটানোর অধিকার থাকবে এক জন মানুষের। আইসিইউ বা সিসিইউ-তে বিপ বিপ শব্দের মধ্যে সারা শরীরে, নাকে-মুখে নল গুঁজে রাখার কষ্টকে দূরে সরিয়ে রাখার জন্যই প্রস্তুত থাকবে এই আগাম অঙ্গীকারপত্র। যাকে বলা যায় নিজের জীবনের শেষ সময়ের জন্য নির্দেশপত্র।
এক জন মানুষের শেষ সময়ে তাঁর করা ওই অঙ্গীকার মতো সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য তিন জনকে রাখা যাবে। তাঁদের নাম উল্লেখ থাকবে ওই ফর্মে। ১০ পাতার সেই ফর্মে দু’জন সাক্ষীর সইও লাগবে। আর থাকতে হবে এক জন চিকিৎসক ও আইনজীবীর সই। পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে হবে ফার্স্ট ক্লাস ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে। অভিজিতেরা জানাচ্ছেন, কষ্ট, হতাশা নয়।জীবনের অনুরাগে মৃত্যুও হয়ে উঠুক সুন্দর।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)