দুপুরের খাবার হোক সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। ছবি- পিক্স্যাবে
পরিচারিকা রাখার মতো পরিস্থিতি এখন অনেকেরই নেই।সংক্রমণের ভয় যেমন একটা কারণ, অন্য কারণ আর্থিক সমস্যাও। ফলে যে ধরনের খাবার খেয়ে এসেছেন সব সময়, এখন হয়তো তা হয়ে উঠছে না।সকালে ব্রাউন ব্রেড খেতেন পি-নাট বাটার দিয়ে কি অ্যামন্ড মিল্ক দিয়ে। খেতেন মুসেলি বা নির্দিষ্ট এক ধরনের ওটস, এখন সবই সাধ্যের বাইরে।আটার রুটি খেলে হয়, কিন্তু রোজ বানাতে ভাল লাগে না।সকালের দিকটা কেটে যায় ঘন ঘন চা ও বিস্কুটের উপর দিয়ে।কখনও দু-একগাল মুড়ি, কখনও তা-ও নয়।ফলে দুপুরের গনগনে খিদের সঙ্গী হয় এক থালা ভাত।ঘরে উপকরণও সীমিত।ফলে কী যে বানাবেন আর কী খাবেন তাই এক বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।ভয়ও রয়েছে সঙ্গে।ভুলভাল খেলে পুষ্টির যেমন ঘাটতি হতে পারে, বাড়তে পারে ওজনও।দুই’ই কোভিডের জন্য বিপজ্জনক।
কী করবেন
একটু বুঝে চললে ঘরে যা আছে তা দিয়েই পুষ্টিকর ও মুখরোচক খাবার বানানো যায়, তাও কম খাটনিতে।কয়েকটা উদাহরণ দেওয়া হল।এর মধ্যে থেকে পছন্দসই কিছু বেছে নিন।
• সকালে রোজ রোজ রুটি-সব্জি-ডিম বানানোর ইচ্ছে না হলে, একটু চালে-ডালে বসিয়ে দিন।ঘরে যা সব্জি আছে, সব দিন দু-এক টুকরো করে।বিনস, গাজর তো দেবেনই।আলু-পটলও দিতে পারেন।খোসা না ছাড়ালে খাটনি যেমন কমবে, ফাইবারের কারণে উপকারও বেশি পাবেন।ওজন বেশি হলে বা ডায়াবিটিস হলে বা কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে সুফল পাবেন হাতে হাতে।এবার এতে সামান্য ঘি বা মাখন মিশিয়ে নিলে পেয়ে যাবেন পরিপূর্ণ সুষম খাবার।স্বাদও মন্দ লাগবে না।
আরও পড়ুন: কেন দাঁতের অতিরিক্ত যত্নের প্রয়োজন ডায়াবিটিসে?
আরেকটু মুখরোচক কিছু চাইলে বিনস, গাজর, বাদাম দিয়ে চিড়ের পোলাও বানাতে পারেন।সঙ্গে একটা ডিম সেদ্ধ খেয়ে নিন।
• সকালে আগে হয়তো কাজু-অ্যামন্ড-আখরোট মিলিয়ে-মিশিয়ে খেতেন বা মিক্সড সিড।এখন তার বদলে ফল খেতে পারেন বা ফ্রুট স্যালাড অথবা দই ও ফলের স্মুদিও বানাতে পারেন।চিনেবাদামও রাখা যেতে পারে।
রোজ কর্নফ্লেক্স খাওয়া এখন সম্ভব হচ্ছে না। সে ক্ষেত্রে চিড়ে খেতে পারেন দই কিংবা দুধ দিয়ে। ফাইল ছবি
• দুপুরে মনমতো মাছ-মাংস জোগাড় না হলেও প্রোটিনে যেন ঘাটতি না হয়, সে দিকে খেয়াল রাখুন।কিডনি বা হার্টের রোগ, হাই প্রেশার-কোলেস্টেরল না থাকলে ও খুব বেশি বয়স না হলে রোজ বা মাঝে-মধ্যে দুটো ডিম খেতে পারেন।ডিমের সাদা অংশ গোটা তিনেক খেলে ক্ষতি নেই।এর পাশাপাশি গাউট বা অন্য সমস্যা না থাকলে নানা রকম ডাল একেক দিন খান।সঙ্গে নিরামিষ প্রোটিন হিসেবে বিনস, ছোলা বা রাজমার তরকারি খেতে পারেন।এতে ফাইবারও বেশি পাবেন।
• সব্জি নানা রকম খেতে হবে।কেটে-বাছাই করে রান্না করতে অসুবিধা হলে বা পছন্দের সব্জি না পেলে সেদ্ধ খান।দু-ফোঁটা কাঁচা তেল, নুন ও কাঁচালঙ্কা মেখে গরম ভাতে।ডালের মধ্যেও দিয়ে দিতে পারেন।বানাতে পারেন সব্জি দিয়ে মাছের ঝোলও।
• আগে হয়তো বেশি দাম দিয়ে ব্রাউন রাইস খেতেন।এখন জোগাড় না হলে অল্প সাদা ভাতের সঙ্গে ডাল ও শাকসব্জি বেশি খান।ব্রাউন রাইসে আয়রনও বেশি থাকে।তার জন্যও চিন্তা নেই।ভাতের পাতে এক টুকরো লেবু খেলেই খাবারে যত টুকু আয়রন আছে, সবটাই শরীরে শোষিত হবে।
• বাড়িতে গোটা মুগ বা ছোলা থাকলে সারা রাত ভিজিয়ে কল বার করে পেঁয়াজ, টোম্যাটো, শসা, লেবুর রস, নুন, কাঁচালঙ্কা, ধনেপাতা মিশিয়ে স্যালাড বানিয়ে নিন।দু-চার টুকরো সেদ্ধ আলুও দিতে পারেন।বিকেলের টিফিন হিসেবে চমৎকার হবে।মুড়ি বা শুকনো খোলায় ভাজা চিড়েতে অল্প বাদাম বা ছোলা, একটু সেদ্ধ আলু, পেঁয়াজ, টোম্যাটো, শসা, লেবুর রস, নুন, কাঁচালঙ্কা, ধনেপাতা মিশিয়েও খেতে পারেন।
আরও পড়ুন: ‘হার্ড ইমিউনিটি’ গড়ে উঠতে আর কত দিন, ভ্যাকসিনই বা কবে?
• কম খাটনিতে রাতের খাবারে বদল আনতে চাইলে ছোট ছোট করে পেঁয়াজ, বিনস ও গাজর কেটে অল্প অলিভ অয়েল বা সর্ষের তেলে কম আঁচে সাঁতলে নিন।অল্প টোম্যাটো দিন।ডিম ফেটিয়ে ঝুরো করে নিন।এ বার তাতে মেশান দুপুরের থেকে যাওয়া ভাত।ভাল করে নেড়েচেড়ে স্বাদ মতো নুন, লঙ্কা, চিনি ও ধনেপাতা মেশান।ডিমের বদলে সেদ্ধ চিকেনও দিতে পারেন।
ঘরে মাখা মুড়ি খান বাইরের স্ন্যাক্সের বদলে। ফাইল ছবি।
• রাতে রুটি-তরকারি-ডাল-ভাত-সব্জি-মাছ খেতে ইচ্ছে না হলে মাঝে-মধ্যে রুটির রোল বানাতে পারেন।পরোটার রোলের চেয়ে বেশি স্বাস্থ্যকর হবে।একটা বা দুটো ডিম, পেঁয়াজ ও টোম্যাটো দিয়ে।
আরও পড়ুন: সব সময় শাসন নয়, ‘স্পেস’ দিন শিশুদেরও
কম উপকরণে ও কম খাটনিতে, কম খরচে এমন খাবার বানাতে হবে যাতে স্বাদ ও স্বাস্থ্য দুই বজায় থাকে।ভাল থাকুন। সুস্থ থাকুন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy