—প্রতীকী চিত্র।
প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা। আসছে মৃত্যুর খবর। এমন পরিস্থিতিতে চিকিৎসকদের বড় অংশ জানাচ্ছেন, ডেঙ্গি আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে দ্বিতীয় বার আক্রান্ত হলে। সে ক্ষেত্রে মৃত্যুর আশঙ্কাও বেড়ে যায়। তাই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া এবং কড়া নজরদারিতে থাকাই উপায় বলে জানাচ্ছেন তাঁরা।
মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার যেমন বলছেন, ‘‘সাধারণত একটা রোগ এক বার হলে দ্বিতীয় বার হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে। কিন্তু ডেঙ্গির ক্ষেত্রে বিপরীত। সমস্যা বাড়ে দ্বিতীয় বার অন্য স্ট্রেনের ডেঙ্গি হলে।’’ তিনি জানান, ডেঙ্গির মূলত চার ধরনের স্ট্রেন রয়েছে। চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত তিন নম্বর স্ট্রেন বেশি মিলছে। এটি অন্য স্ট্রেনগুলির তুলনায় কম ক্ষতিকর। ধরা যাক, কারও আগে প্রথম বা দ্বিতীয় স্ট্রেনের ডেঙ্গি হয়েছে। এ বার তৃতীয়টা হল। তখন কিন্তু সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ক্ষেত্রে ব্যাপারটা বিপজ্জনক হতে পারে। তিনি বলেন, ‘‘দ্বিতীয় বার অন্য স্ট্রেনে আক্রান্ত হলে অনেক ক্ষেত্রেই চিকিৎসার সময় পাওয়া যায় না।’’ তাঁর পরামর্শ, এখনও পর্যন্ত তৃতীয় স্ট্রেনের বাড়বাড়ন্ত দেখা গেলেও পরে অপেক্ষাকৃত বেশি ক্ষতিকর দ্বিতীয় স্ট্রেনের প্রভাব বাড়তে পারে। কারণ, গত বছরও প্রথমে কম ক্ষতিকর স্ট্রেনের প্রভাব থাকলেও, পরে বেশি ক্ষতিকর স্ট্রেনের প্রাদুর্ভাব হয়েছিল।’’
শিশুরোগ চিকিৎসক সুমিতা সাহা জানাচ্ছেন, ইতিমধ্যেই এমন রোগী তিনি পাচ্ছেন, যারা দ্বিতীয় বার ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘অ্যাডিনোভাইরাসের প্রভাব কমার পর থেকে জ্বরের রোগী কম ছিল। ফের বাড়ছে। ডেঙ্গিতে চতুর্থ দিনের পর থেকেই সমস্যা হয়। মাথা যন্ত্রণা, পিঠে ব্যথা, গাঁটে ও চোখে ব্যথা হয়। দেখা যায়, দ্বিতীয় দফায় ডেঙ্গি হলে জটিলতা বেশি হয়। শক সিন্ড্রোম, ডেঙ্গি হেমারেজিক ফিভারের ঘটনা বেশি হয়। দ্রুত প্লেটলেট কমে যায়।’’
সুমিতা জানান, অনেক সময়েই রোগী বুঝতে পারেন না যে, তাঁর ডেঙ্গি হয়েছে। হয়তো কয়েক দিন জ্বর ছিল, সেরেও গিয়েছিল। ফলে নতুন করে ডেঙ্গি হলে রোগী আগের সমস্যাগুলোর কথা চিকিৎসককে বলেন না। তাঁর পরামর্শ, ডেঙ্গি পরীক্ষার সঙ্গে আইজিজি পরীক্ষা করে নেওয়া যেতে পারে। আগে আক্রান্তের ডেঙ্গি হয়ে থাকলে আইজিজি বেশি আসবে। পিসিবি ও প্লেটলেট দেখাও গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত রক্তচাপ মাপতে হবে, শ্বাসকষ্ট হচ্ছে কি না, প্রস্রাব ঠিকঠাক হচ্ছে কি না, খেয়াল রাখতে হবে।
একই আশঙ্কার কথা বলছেন শিশুরোগ চিকিৎসক অপূর্ব ঘোষ। তাঁর মতে, ‘‘জেলা থেকেও ডেঙ্গি আক্রান্ত বাচ্চা আসছে। এটা ঠিক যে, দ্বিতীয় বার আক্রান্ত হলে শরীরে বেশি প্রভাব পড়ে। প্রদাহ হয়। ছোটদের বিষয়গুলো অভিভাবকদেরই বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে।’’ আবার ভাইরোলজিস্ট অমিতাভ নন্দীর দাবি, ‘‘দ্বিতীয় বার হলে জটিলতা অনেকটাই বেশি হয় ঠিকই। কিন্তু কত বার হচ্ছে, তার থেকেও জরুরি আমরা ডেঙ্গি নিয়ে সচেতন কি না। সময় মতো পরীক্ষা করিয়ে ব্যবস্থা নিলে ডেঙ্গি এখনও ততটা ভয়ের নয়। অথচ আমরা তথ্য চাপতে এবং নিজেরাই নিজেদের ডাক্তারি করতে ব্যস্ত থাকি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy