ডেঙ্গি রুখতে শহরের বাজারে বেড়েছে কিউয়ি ফলের চাহিদা। —নিজস্ব চিত্র।
আপাতত উৎসব নেই। তবুও কেন ঊর্ধ্বমুখী কিছু ফলের দাম? খুচরো ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘‘ফলের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দামের এই বৃদ্ধি।’’ এ দিকে, রাজ্যে দৈনিক ডেঙ্গি সংক্রমণও বাড়ছে। ফলের চাহিদা বৃদ্ধি কি সেই কারণে? কিছু নির্দিষ্ট ফল ডেঙ্গি রোগীর পক্ষে উপকারী, এমন ধারণা থেকেই কি দাম এত চড়া? যদিও চিকিৎসকদের একাংশের মতে, এই ধারণার বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।
সাম্প্রতিক কালে প্রচলিত ধারণা ছড়াচ্ছে কিউয়ি ফল ঘিরে। ওই ফল খেলে রক্তে প্লেটলেট বাড়ে খুব দ্রুত। এতে চাহিদা বেড়েছে কিউয়ি-র, জানাচ্ছেন বিক্রেতারা। বাগুইআটির এক ফল ব্যবসায়ী অসীম সাহা বলেন, “প্রতি বার ডেঙ্গির মরসুমে দেখেছি, কিউয়ি-র চাহিদা বাড়ে। অনেকেই বলেন, এই ফল খেলে নাকি দ্রুত প্লেটলেট বেড়ে যায়। এখন এক-একটি কিউয়ি-র দাম ৫০ টাকা।” কোথাও আবার প্রতিটি কিউয়ি ৬০ টাকাতেও বিক্রি হতে দেখা গেল। মানিকতলা বাজারের এক ফল বিক্রেতা বলছেন, ‘‘এই সময়ে দিনে পাঁচ পেটি কিউয়ি বিক্রি হয়ে যাচ্ছে!”
তবে চিকিৎসকদের একটি অংশের মতে, কিউয়ি বা পেঁপে পাতার রসের সঙ্গে রক্তের প্লেটলেট বৃদ্ধির বৈজ্ঞানিক ভিত্তি তাঁদের জানা নেই। জনস্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসক অনির্বাণ দলুই বলেন, ‘‘কিউয়ি ফল খেলে প্লেটলেট বাড়ে, এ রকম বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই। বেশির ভাগ ফলই উপকারী। ডেঙ্গি রোগীর ক্ষেত্রে তা আরও বেশি। কারণ, ওই রোগীদের বেশি পরিমাণে জল খেতে হয়। ফল সেই জলের অভাব পূরণ করে।”
একই কথা বলছেন মেডিসিনের চিকিৎসক শ্যামাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “কিউয়ি বা পেঁপে পাতার রসে ডেঙ্গি রোগীর ক্ষেত্রে আলাদা করে উপকারিতার বৈজ্ঞানিক যুক্তি নেই। বরং, পেঁপে পাতার রস খেলে পেট খারাপের আশঙ্কা থাকে। রসালো যে কোনও ফলই খাওয়া ভাল। তবে ডেঙ্গি রোগীকে ফল খেলেও বেশি করে জল খেতে হবেই।”
বাজার ঘুরে দেখা যাচ্ছে, প্রতি কেজি বেদানার দাম ২৫০-৩০০ টাকা, আপেল কেজি প্রতি ১৫০-২০০ টাকা, পাকা পেঁপের কেজি ৮০-১০০ টাকা, আনারস ১০০-১২০ টাকা, আতা ২৫০ টাকা কেজি, মুসাম্বি লেবু এক-একটি ১৫ থেকে ২০ টাকা। অনেকটাই বেড়েছে কিউয়ি-র দামও।
ফলের দাম বৃদ্ধির সঙ্গে ডেঙ্গির যোগ মানতে নারাজ মেছুয়ার ‘ক্যালকাটা ফ্রুট মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশন’-এর জয়েন্ট সেক্রেটারি শাহিদ আহমেদ খান। তাঁর যুক্তি, “কলকাতায় কিউয়ি আসে ইরান থেকে, ওখানকার কিউয়ি-র দাম কম। কিন্তু এখন এই ফল আসছে পোল্যান্ড, ইটালি ও নিউজ়িল্যান্ড থেকে। ওই সব দেশ থেকে আমদানির খরচ বেশি। পাইকারি বাজারেই একটি কিউয়ি-র দাম ৩০-৪০ টাকা।” শাহিদের দাবি, ভিন্ রাজ্য থেকে ফল আনতে প্যাকিংয়ের খরচ বেড়েছে। ফলে খুচরো বাজারে দাম বাড়ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy