Advertisement
E-Paper

কঠোর শরীরচর্চা থেকে ডায়েট, মেদ ঝরানোর সব চেষ্টাই বৃথা! এত কিছুর পরও কেন কমছে না ওজন? ৬ কারণ

কখনও কখনও হাজারো কসরতের পরেও কাঁটা আর নীচে নামতেই চায় না। যেন অদৃশ্য বাধা রয়েছে মাঝে। আর তখনই যাবতীয় হতাশা ঘিরে ধরে মনে। কিন্তু জানেন কি, খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাত্রার ধরন এবং ব্যায়ামে কিছু পরিবর্তন আনলেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে?

ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৫ ১১:৫৭
Share
Save

নিত্য দিনের কঠোর পরিশ্রম, সংযম। ওজন কমানোর যুদ্ধ সকলের জন্য সহজ নয়। নিষ্ঠা ভরপুর থাকলেও ফল মেলে না মনোমতো। কখনও কখনও হাজারো কসরতের পরেও কাঁটা আর নীচে নামতেই চায় না। যেন অদৃশ্য বাধা রয়েছে মাঝে। আর তখনই যাবতীয় হতাশা ঘিরে ধরে মনে। কিন্তু জানেন কি, খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাত্রার ধরন এবং ব্যায়ামে কিছু পরিবর্তন আনলেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে? অর্থাৎ লক্ষ্যে পৌঁছোতে হলে পথ পরিবর্তন করলেই লাভবান হতে পারেন।

নেটপ্রভাবী, ফিটনেস প্রশিক্ষক এবং পুষ্টিবিদ সারা পেল্ক গ্রাকার মতে, এর নেপথ্যে অনেক কারণ রয়েছে, যা চোখে পড়ছে না। গোড়ায় গলদ থাকলে অক্লান্ত পরিশ্রমও বৃথা হয়ে যাবে। তাই ওজন কমানোর রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে এই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হলে ৫টি জিনিস মাথায় রাখতে হবে।

মানসিক চাপ: কাজ, ব্যক্তিগত জীবন, অতিরিক্ত শরীরচর্চা, যে কোনও একটি অথবা তিনটিই একত্রে মানসিক চাপের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। এর ফলে সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উপর বড় প্রভাব পড়তে পারে। সেই কারণেই অতিরিক্ত চর্বি জমতে থাকে শরীরে। ফলে ওজন মাপার যন্ত্রের কাঁটা সরতে চায় না। শক্তিবৃদ্ধি এবং মেদ ঝরানোর জন্য পেশির পুনরুদ্ধার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর এই কাজটি সফল করতে সাহায্য করে ঘুম। কিন্তু যদি মানসিক চাপের কারণে ঘুম ভাল না হয়, তা হলে ওজন কমানোয় বাধা সৃষ্টি হতে পারে। ভাল ঘুম না হলে খিদেও বেড়ে যায়। তাতে চর্বি জমার কাজটি দ্রুত হয়। প্রতি রাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম দরকার। তার জন্য মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।

ছবি: সংগৃহীত।

অতিরিক্ত শরীরচর্চা: ওজন কমানোর লক্ষ্যে পৌঁছোনোর জন্য ব্যায়াম গুরুত্বপূর্ণ নিশ্চয়ই, কিন্তু শরীরচর্চার পাশাপাশি অন্য কোন ধরনের কাজকর্মে ব্যস্ত থাকেন, সেটি নিয়ে ভাবার দরকার রয়েছে। সারা দিন ধরে অল্পবিস্তর নড়াচড়া করা, হাঁটাহাঁটি করা, ঘরদোর পরিষ্কার করা, সবই দৈনিক ক্যালোরি পোড়াতে সাহায্য করে। কিন্তু যদি জিমে বা বাড়িতে শরীরচর্চা করার সময়ে সমস্ত শক্তি ক্ষয় করে ফেলেন, তা হলে সারা দিনে সাধারণ কাজগুলি করার মতো ক্ষমতা থাকবে না। ফলে শরীরচর্চার ওই সময়টুকু ছাড়া দিনের বাকি সময়ে আপনিও নিষ্ক্রিয় হয়ে থাকেন। নড়াচড়া নেই। তাতে লাভ হয় না। উল্টে ক্ষতি হয়। যত ক্যালোরি ঝরাতে পেরেছিলেন, ততখানিই আবার শরীরে যুক্ত হয়ে যেতে পারে। তাই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সক্রিয় থাকতে হলে শরীরচর্চার সময়ে সব শক্তি ক্ষয় করে দিলে চলবে না। অন্যান্য সময়ে ঘরের কাজ, বা হাঁটাচলা, সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করে সমতা বজায় রাখতে হবে।

ছবি: সংগৃহীত।

অতিরিক্ত খাবার খাওয়া: শরীরচর্চার রুটিনে নতুন নতুন ব্যায়াম যুক্ত হলে ক্লান্তির জেরে খিদে বেশি পেতে পারে। স্বাভাবিক ভাবেই আপনার শরীর বেশি ক্যালোরি পোড়াচ্ছে। তাই তাড়াতাড়ি পেট খালিও হয়ে যায়। তবে সেই সময়ে উচ্চ-ক্যালোরিযুক্ত খাবারের চেয়ে স্বাস্থ্যকর খাবারকে বেছে নিতে হবে। তাা ছাড়া অতিরিক্ত খেলে চলবে না। এ বার যদি দেখা যায়, আপনি সঠিক পরিমাণে ক্যালোরি গ্রহণ করেন, কিন্তু সব সময় ক্ষুধার্ত রয়েছেন, তা হলে নজর দিতে খাবারের দিকে। ফলমূল এবং শাকসব্জির মতো উচ্চ-প্রোটিন যুক্ত খাবার খেতে হবে। এই ধরনের খাবার খিদেও মেটাবে, ক্যালোরির ঘাটতি হতে দেবে না, এবং ওজনও বাড়াবে না। তবে, ধীরে ধীরে এবং পেটে অল্প জায়গা রেখে খেতে হবে।

ছবি: সংগৃহীত।

অত্যন্ত কম খাওয়া: ঠিক যেমন অতিরিক্ত খেলে ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে, তেমনই পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার পেটে না পড়লে শরীরের গঠন পরিবর্তন হতে পারে। কঠোর ডায়েট প্রায়শই শরীরের জন্য পর্যাপ্ত পুষ্টি সরবরাহ করে না। ফলে শক্তির মাত্রা কমে যায়। সঠিক পরিমাণ শরীরচর্চা করার মতো ক্ষমতাও থাকে না। কম ক্যালোরি পোড়ে সেই সময়। এতে হিতে বিপরীত হয়। খুব কম সময়ে প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি ঝরানো বিপাকক্রিয়ার গতিতে লাগাম টানতে পারে। শরীরকে সঠিক ভাবে জ্বালানির জোগান দিলে তবেই শক্তি সঞ্চয় হবে। ডায়েটেশিয়ানের সঙ্গে কথা বলে ডায়েটের পরিকল্পনা করা উচিত। নিজের ইচ্ছেমতো খাদ্যাভ্যাসে আমূল পরিবর্তন আনলে উল্টে ক্ষতি হয়।

অবাস্তব লক্ষ্য স্থির: ওজন ঝরানোর জন্য এমন লক্ষ্য স্থির করা উচিত, যা বাস্তবসম্মত। ছোট ছোট পদক্ষেপে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেই সবচেয়ে ভাল ফল পাওয়া যায়। অবাস্তব লক্ষ্য তৈরি করলে হতাশা তৈরি হয়। মানসিক ক্লান্তি বেড়ে যায়। তাতে যদি আত্মবিশ্বাস কমে যায়, তা হলে যে কোনও সময়ে হাল ছেড়ে দিতে পারেন। তা হলে সব কষ্টই বৃথা। দ্রুত ওজন কমানোর লক্ষ্য রাখার পরিবর্তে, প্রতি সপ্তাহে তিন ধরনের ব্যায়ামে সফল হওয়ার চেষ্টা করুন, অথবা প্রতি দিন দুপুর এবং রাতে একটি ফল বা সব্জি রাখুন খাবার পাতে। দীর্ঘমেয়েদি সাফল্য পেতে হলে ধীরে চলতে হবে।

ছবি: সংগৃহীত।

ওজন হ্রাস নয়, পেশি বৃদ্ধির দিকে নজর: রোজের শরীরচর্চায় কার্ডিয়ো এবং শক্তি বাড়ানোর ব্যায়াম যুক্ত করেছেন? তা হলে অনুমান করা যেতে পারে, আপনার শরীরের গঠনে ভাল পরিবর্তন আসছে। এমন পরিস্থিতিতে যদি দেখেন, পুরনো ছোট হয়ে যাওয়া পোশাক গায়ে এঁটে যাচ্ছে, শরীরে শক্তি পাচ্ছেন, কিন্তু ওজনের যন্ত্রে সংখ্যা নীচের দিকে নামছে না, তা হলে সেটি নেতিবাচক নয়। সেটিই জয়। জেনে রাখবেন, আপনি লক্ষ্য পূরণের দিকেই এগোচ্ছেন। যদি মেদ ঝরানোর সময় পেশির ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়, তা হলে প্রথম দিকে ওজন নামে না। উল্টে বাড়তেও পারে। মনে রাখবেন, পেশির ভর বৃদ্ধি বিপাকক্রিয়ার হারকেও বাড়িয়ে দেয়। যার অর্থ, আপনি বিশ্রামে থাকাকালীনও আপনার ক্যালোরি পুড়ছে।

Weight Loss Tips weight loss journey tips for weight loss diet and workout exercise to lose weight

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}