Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪

হুমকি দিয়ে টাকা নিচ্ছেন আয়ারা, ঘেরাও-বিক্ষোভ হাসপাতালে

চিকিত্‌সাধীন প্রসূতিদের পরিবারের লোকজনকে হুমকি দিয়ে টাকা আদায় করার অভিযোগ উঠেছে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের আয়াদের একাংশের বিরুদ্ধে। শনিবার দুপুরে এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে হাসপাতাল চত্বরে সুপারকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন রোগীর পরিবারের লোকজন। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে টাকা আদায় বন্ধ করতে হবে। অভিযুক্ত আয়াদের চিহ্নিত করে তাদের বরখাস্ত করতে হবে। এ দিন দুপুর ২টো থেকে প্রায় দু’ঘন্টা বিক্ষোভ চলে। নেতৃত্ব দেন তৃণমূলের হাসপাতাল পরিষেবা সহায়তা কেন্দ্রের সদস্যেরা।

রায়গঞ্জ হাসপাতালের সহকারি সুপারের ঘরে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।

রায়গঞ্জ হাসপাতালের সহকারি সুপারের ঘরে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০১৫ ০১:০২
Share: Save:

চিকিত্‌সাধীন প্রসূতিদের পরিবারের লোকজনকে হুমকি দিয়ে টাকা আদায় করার অভিযোগ উঠেছে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের আয়াদের একাংশের বিরুদ্ধে। শনিবার দুপুরে এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে হাসপাতাল চত্বরে সুপারকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন রোগীর পরিবারের লোকজন। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে টাকা আদায় বন্ধ করতে হবে। অভিযুক্ত আয়াদের চিহ্নিত করে তাদের বরখাস্ত করতে হবে। এ দিন দুপুর ২টো থেকে প্রায় দু’ঘন্টা বিক্ষোভ চলে। নেতৃত্ব দেন তৃণমূলের হাসপাতাল পরিষেবা সহায়তা কেন্দ্রের সদস্যেরা। বিকেল ৪টে নাগাদ সহকারি সুপার অভিযুক্ত আয়াদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ৪০ জন প্রসূতির পরিবারের লোকজন সহকারি সুপারের কাছে লিখিতভাবে আয়াদের একাংশের বিরুদ্ধে হুমকি দিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগ জানিয়েছেন।

সহকারি সুপার গৌতম দাসের দাবি, “অভিযোগের ভিত্তিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। কোনও আয়ার বিরুদ্ধে প্রসূতিদের পরিবারের লোকজনকে হুমকি দিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের বহিষ্কার করা হবে। পাশাপাশি, পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হবে।”

তিনি বলেন, সরকারি হাসপাতালে চিকিত্‌সা পরিষেবা দেওয়ার বিনিময়ে আমরা কোনওমতেই বেআইনিভাবে টাকা আদায় মেনে নেব না।

তৃণমূলের হাসপাতাল পরিষেবা সহায়তা কেন্দ্রের দুই কার্যকরী সদস্য রুমা চৌধুরী সরকার ও সুমিতকুমার দাসের দাবি, গত দু’সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে চিকিত্‌সাধীন প্রসূতিদের পরিবারের লোকজন তাঁদের কাছে আয়াদের একাংশের বিরুদ্ধে হুমকি দিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগ জানাচ্ছিলেন। অভিযোগ পাওয়ার পর সহায়তা কেন্দ্রের সদস্যেরা প্রসূতি বিভাগে গিয়ে একাধিকবার আয়াদের সতর্ক করলেও টাকা আদায়ের প্রবণতা বন্ধ হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে প্রসূতি ও রোগীদের পরিবারের লোকজনকে নিয়ে এ দিন তাঁরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হন।

তাঁদের কথায়, “অবিলম্বে টাকা আদায় বন্ধ ও সোমবারের মধ্যে অভিযুক্ত আয়াদের চিহ্নিত করে তাদের বরখাস্ত করা করতে হবে।” না হলে বড় আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবেন বলে জানান তাঁরা।

মালদহের চাঁচল থানার দোগাছ এলাকার বাসিন্দা হবিবুর রহমান জানান, শুক্রবার তাঁর স্ত্রী আশারানি খাতুন হাসপাতালে সন্তান প্রসব করেন। অভিযোগ, কর্তব্যরত আয়া তাঁর কাছ থেকে ১২৫০ টাকা দাবি করেন। না হলে তাঁর স্ত্রীকে লেবার রুম থেকে প্রসূতি বিভাগের বেডে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দেন তিনি। ভয়ে ওই টাকা আয়াকে দিতে বাধ্য হন তিনি।

হেমতাবাদের বাসিন্দা জইতুন নিশার পুত্রবধূ বিজলি খাতুন গত বৃহস্পতিবার হাসপাতালে সন্তান প্রসব করেন। তাঁর বক্তব্য, টাকা না দিলে কর্তব্যরত আয়ারা প্রসূতি ও সদ্যোজাতকে পরিষ্কার করবেন না বলে হুমকি দিয়েছিলেন। তাঁদের কাছ থেকে ৭০০ টাকা করে আদায় করেন।

একই অভিজ্ঞতা রায়গঞ্জের পেশায় রিকশাচালক প্রেমা রায়েরও। তিনি বলেন, “টাকা না দিলে কর্তব্যরত আয়া স্ত্রী ও শিশুকে দেখাশোনা করতে পারবেন না বলে হুমকি দিয়ে আমার কাছ থেকে ৮০০ টাকা আদায় করেছেন।”

আন্দোলনকারীদের অনেকেরই প্রশ্ন, প্রসূতিদের দেখাশোনা করার বিনিময়ে আয়ারা প্রসূতিদের পরিবারের লোকজনের কাছ থেকে পারিশ্রমিক পান! তাহলে কেনও আয়ারা তাঁদেরকে হুমকি দিয়ে টাকা আদায় করছেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy