মশার উপদ্রব বেড়েছে গত কয়েক বছর ধরেই। অভিযোগ, নিয়মিত জঞ্জাল পরিষ্কার না হওয়ার জেরেই এই সমস্যা শহরে। এর ফলে ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে। দুর্গাপুরের বেসরকারি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি এক যুবকের দেহে মিলেছে ডেঙ্গির জীবাণু। শহরে অবিলম্বে মশার উপদ্রব রুখতে ব্যবস্থার দাবি তুলেছেন বাসিন্দারা।
সৌদীপ্ত মালাকার নামে ওই যুবক কর্মসূত্রে দুর্গাপুরে থাকেন। শুক্রবার বিকেল থেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন। শরীরে ব্যথা শুরু হয়। সঙ্গে জ্বর। জ্বর বাড়ায় গভীর রাতে তাঁকে দ্য মিশন হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, তাঁর রক্তে প্লেটলেটের সংখ্যা কিছুটা কম রয়েছে। চিকিৎসা চলছে। দ্রুত প্লেটলেট বাড়ানোর বিশেষ যন্ত্র রয়েছে ওই হাসপাতালে। আক্রান্তের প্লেটলেটের সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে কমে গেলে তখন এই যন্ত্র ব্যবহার করা হবে। হাসপাতালের চেয়ারম্যান সত্যজিৎ বসু বলেন, “ওই যুবক ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁর চিকিৎসা চলছে। দুশ্চিন্তার কিছু নেই।”
সত্যজিৎবাবু জানান, হাসপাতালের পরিসংখ্যান ঘেঁটে দেখা গিয়েছে, এপ্রিল থেকে এখনও পর্যন্ত মোট ৫০ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। দুর্গাপুরের সহকারী মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শকুন্তলা সরকার জানান, জ্বরে আক্রান্ত অনেকেই সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। তার মধ্যে দু’এক জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলছে। শহরবাসীর অভিযোগ, দুর্গাপুরে গত কয়েক বছরে মশার উপদ্রব বেশ বেড়েছে। ২০১২ সালে ১০ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হন। মারা যায় এক কিশোরী ও এক বালিকা। ২০১১ সালেও নঈমনগর এলাকায় বেশ কয়েক জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তবে কেউ মারা যাননি। ২০১৩ সালেও মৃত্যুর কোনও ঘটনা ঘটেনি। তবে বাসিন্দাদের অভিযোগ, এ বারের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। কারণ, পুর এলাকায় যত্রতত্র জঞ্জাল জমে রয়েছে। বৃষ্টিতে তা ধুয়ে নামছে নর্দমায়। ফলে, জল জমছে। বাড়ছে মশার উপদ্রব। অবিলম্বে জঞ্জাল সরানো এবং নর্দমা সাফ করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সব জঞ্জাল সাফ করার মতো পরিকাঠামো বর্তমানে পুরসভার হাতে নেই। শহরের একমাত্র বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রটি বন্ধ থাকায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। তবে নর্দমা সাফ করার কাজ নিয়মিত চলছে বলে পুর কর্তৃপক্ষের দাবি। মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায় জানান, ইতিমধ্যে আগাছা পরিষ্কার, মশার লার্ভা মারার তেল ছড়ানো এবং মশা-নাশক রাসায়নিক স্প্রে করার কাজ চলছে। পাশাপাশি নাগরিকদের সচেতন করতে বাড়ি বাড়ি বিশেষ লিফলেটও বিলি করা হয়েছে।
নাগরিকদের সচেতন করায় উদ্যোগী হয়েছেন দ্য মিশন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও। হাসপাতালের চেয়ারম্যান সত্যজিৎবাবু জানান, রাখিবন্ধনের দিন অম্বেডকর কলোনিতে হাসপাতালের পক্ষ থেকে মশা দূর করার বিশেষ রাখি বিতরণ করা হয়। পাশাপাশি, সচেতনতা গড়ার উদ্যোগও হয়েছিল। তিনি জানান, আশপাশের পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। জল জমতে দিলে চলবে না। এ ছাড়া দরকার হলে গায়ে মশা নিবারণী তেল মাখতে হবে। তিনি বলেন, “মশাবাহিত রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার প্রধান উপায় সচেতনতা। মশা থেকে কী ভাবে দূরে থাকা যায়, সে ব্যাপারে সবাই উদ্যোগী হলে মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy