নির্বাচনের দিন। তুমুল গোলমাল দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে। উড়ে যাচ্ছে ইঁট কিংবা বোতল ভাঙা। আর তাদের মোকাবিলায় পুলিশ লাঠি হাতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। ছোড়া হচ্ছে কাঁদানে গ্যাস। যে কোনও ধরনের গোলমালে জনতা-পুলিশ সংঘর্ষের এটাই চেনা ছবি। কিন্তু নির্বাচনে কিংবা আইন-শৃঙ্খলা ভঙ্গের কোনও ঘটনায় গোলমালকারীদের ঠেকাতে এ বার ঝাড়খণ্ডে দেখা যাবে অন্য চিত্র। এই ধরনের ঘটনার মোকাবিলায় দেখা যাবে হাওয়ায় উড়ছে লঙ্কার গুঁড়ো। আর সেই লঙ্কার গুঁড়ো ছুড়ছে পুলিশই। চোখ বাঁচাতে সংঘর্ষকারীরা বাধ্য হচ্ছে পালাতে।
আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত যে কোনও ধরনের গোলমাল, দাঙ্গায় উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে নতুন এই অস্ত্রের ব্যবহার করবে ঝাড়খণ্ড পুলিশ। লোকসভা নির্বাচনের আগেই এই ‘চিলি বম্ব’ রাজ্য পুলিশের হাতে এসে পৌঁছেছে। ‘চিলি বম্ব’ বা লঙ্কা বোমা---পুলিশ কর্তাদের দাবি, কাঁদানে গ্যাসের থেকেও কয়েক গুণ কার্যকরী এই লঙ্কা বোমা। বোমা ফাটলে হাওয়ায় উড়বে লঙ্কার গুঁড়ো। যা গণ্ডগোল সৃষ্টিকারীদের চোখে একবার গেলে বেশ খানিক্ষণ চোখে ‘সর্ষেফুল’ দেখা ছাড়া আর কিছুই দেখতে পাবে না সংঘর্ষকারীরা। লাভ হবে না চোখে জল দিলেও।
ডিফেন্স রিসার্চ ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও) ২০১০ সালে এই লঙ্কা বোমা তৈরি করে। জঙ্গিদের সঙ্গে লড়াইয়ের সময় ব্যবহারের জন্যই এই লঙ্কা বোমা ব্যবহারের কথা ভেবেছিল ডিআরডিও। এশিয়ার সবচেয়ে ঝাল লঙ্কা ‘ভোট জলকিয়া’-র গুঁড়ো বারুদের সঙ্গে মিশিয়ে লঙ্কা বোমা তৈরি করা হয়। অসম-নাগাল্যন্ডের ভোট জলকিয়া ভারতবর্ষ তো বটেই, বিশ্বের অন্যতম ঝাল লঙ্কা বলে পরিচিত। মূলত অসমে হাতি তাড়ানোর ক্ষেত্রে ভোট জলকিয়া লঙ্কা দিয়ে তৈরি গ্রেনেডের ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
রাজ্য পুলিশের মুখপাত্র তথা আইজি অনুরাগ গুপ্ত জানিয়েছেন, লঙ্কা বোমার ব্যবহার ইতিমধ্যেই কোথাও কোথাও পরীক্ষামূলক ভাবে করা হয়েছে। সাফল্যও মিলেছে। এই বোমা আমদানির জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছ থেকে অনেক দিন আগেই অনুমতি পেয়েছিল রাজ্য পুলিশ। তিনি বলেন, “কাঁদানে গ্যাসের চেয়েও লঙ্কা বোমা অনেক বেশি কার্যকর হবে। বড় ধরনের গোলমালের সময় কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করেও অনেক সময় কাজ হয় না। কারণ কাঁদানে গ্যাস চোখে যাওয়ার পরে চোখে জল দিলে জ্বলুনি কমে যায়। ফলে গোলমালকারীদের ঠেকাতে সমস্যা হয়। কিন্তু এই ধরনের লঙ্কা বোমা যেখানে ব্যবহার হবে সেখানে কমপক্ষে আধ ঘন্টা থেকে পৌনে এক ঘন্টা তার প্রভাব থাকবে। ফলে গোলমালকারীরা এলাকা ছেড়ে পালাতে বাধ্য হবেই।”
ঝাড়খণ্ড পুলিশের কর্তারা জানিয়েছেন, মাওবাদীদের সঙ্গে জঙ্গলের মধ্যে লড়াই করার সময় এই ধরনের লঙ্কা বোমা বিশেষ কার্যকর হবে। সে জন্য রাজ্য পুলিশের জওয়ানদের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের মধ্যেও এই লঙ্কা বোমা পৌঁছে দেওয়া হবে। মার্চেই পুণে আর জব্বলপুর থেকে লঙ্কা বোমা কিনেছে এ রাজ্যের সরকার। রাঁচি, ধানবাদ, বোকারো, পলামুর মতো জেলাগুলিতে সশস্ত্র বাহিনীর কাছে তা ইতিমধ্যেই পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। রাঁচির মহিলা পুলিশ বাহিনী আর র্যাপিড অ্যাকশন ফোসের্র কাছেও পৌঁছে দেওয়া হয়েছে লঙ্কা বোমা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy