পুলিশের হাতে ধৃত সেই যুবক।
ভারতের মানচিত্র, পেনড্রাইভ না দিলে তাঁকে খুন করা হবে। পরিবারের কেউ বাঁচবে না। ঘুম থেকে উঠে সকালে দরজার সামনে এমন হুমকি দেওয়া তিনটি চিঠি পেয়েছিলেন কুলদীপ সিংহ নামে এক কৃষক। হিন্দি, উর্দু এবং ইংরেজি এই তিন ভাষায় সেই চিঠি লেখা ছিল। একটা পার্সেলের মধ্যে রাখা ছিল সেই চিঠি। পার্সেলে নাম দেওয়া ছিল আইএস জঙ্গি সংগঠনের।
গত ২১ জুলাই এ রকম হুমকি চিঠি পেয়ে পুলিশকে জানান কুলদীপ। পুলিশ এবং গোয়েন্দারা সেই চিঠি পাওয়া মাত্রই তদন্তে নামে। তা হলে কি জঙ্গি সংগঠনের কোনও স্লিপার সেলের কাজ? কেনই বা চাষিকে এ রকম হুমকি চিঠি পাঠাতে যাবে জঙ্গিরা? এ রকম বেশ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তরের খোঁজ করছিল পুলিশ। ১৫ দিন ধরে তদন্ত চালানোর পর অবশেষে চিঠি প্রেরককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনাটি উত্তরপ্রদেশের রামপুরের শাহবাদ থানা এলাকার।
পুলিশ জানিয়েছে, হুমকি চিঠির প্রেরক এক জন ইউপিএসসি প্রত্যাশী। শাহবাদ থানা এলাকার আনোয়া গ্রামে থাকেন। তিনি আমলা হতে চান। কিন্তু ইউপিএসসি পরীক্ষা দিয়ে নয়। অন্য উপায়ে কী ভাবে আমলা হওয়া যায়, তার পথ খুঁজছিলেন। চটজলদি সমাধানের পথ খুঁজে দিতে সাহায্য করেন তাঁর ভাইপো।
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত যুবক জেরায় তাদের জানিয়েছে যে, ভাইপোর কাছ থেকে তিনি জানতে পারেন যে, পরীক্ষা না দিয়েও ইউপিএসসিতে সুযোগ পাওয়া যায়। এবং সেটা ‘ল্যাটেরাল এন্ট্রি’র মাধ্যমে। কিন্তু সেই সুযোগ পেতে গেলে এমন কাজ করতে হবে যাতে সরকার খুশি হয়ে তাঁকে আমলার পদে চাকরি দেয়।
এমন কী কাজ করতে হবে যাতে দেশ জুড়ে জয়জয়কার হয়, আর সরকার খুশি হয়ে তাঁকে আমলার চাকরি দেয়? যুবক জানিয়েছেন, ভাইপো তাঁকে পরামর্শ দেন, কোনও জঙ্গি সংগঠনের নামে কারও বাড়িতে হুমকি চিঠি পাঠাতে হবে। আর সেই চিঠি নিয়ে যখন চারদিকে শোরগোল পড়ে যাবে, বিষয়টি সেই জঙ্গি সংগঠনের কাছেও নিশ্চয়ই পৌঁছবে। আর জঙ্গিরা বিষয়টি নিয়ে তৎপর হবে। গ্রামে আনাগোনা শুরু করবে। সেই সুযোগে ওই জঙ্গিদের ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিলেই কেল্লা ফতে।
কিন্তু এটা যে কত বড় নির্বুদ্ধিতার কাজ, চাকরি পাওয়ার নেশায় তা বুঝে উঠতে পারেননি তিনি। জঙ্গি ধরে দেশের মানুষ এবং সরকারের চোখে ‘হিরো’ হতে গিয়ে জেলের হাওয়া খেতে হবে এটা কল্পনাও করতে পারেননি বলে দাবি যুবকের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy