Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
National News

নির্লজ্জ! যোগীর সরকারকে ভর্ৎসনা আদালতের

গত বৃহস্পতিবার লখনউয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ৫৩ জন প্রতিবাদীর ছবি, নাম, ঠিকানা দিয়ে হোর্ডিং টাঙিয়েছিল যোগীর প্রশাসন।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
ইলাহাবাদ শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০২০ ০৪:২০
Share: Save:

মুখ পুড়ল যোগী আদিত্যনাথ সরকারের। লখনউয়ে রাস্তার মোড়ে মোড়ে সিএএ-প্রতিবাদীদের বিরুদ্ধে ছবি-সহ যাবতীয় হোর্ডিং অবিলম্বে সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিল ইলাহাবাদ হাইকোর্ট। শুধু তা-ই নয়, প্রধান বিচারপতি গোবিন্দ মাথুর এবং বিচারপতি রমেশ সিংহের বেঞ্চ আজ বলেছে, এই ঘটনা প্রশাসনের ‘নির্লজ্জ কর্মকাণ্ড এবং সাধারণ মানুষের গোপনীয়তায় অনভিপ্রেত হস্তক্ষেপ’। বেঞ্চের নির্দেশ, সব হোর্ডিং সরিয়ে আগামী ১৬ মার্চের মধ্যে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে রিপোর্ট পেশ করতে হবে যোগী প্রশাসনকে।

গত বৃহস্পতিবার লখনউয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ৫৩ জন প্রতিবাদীর ছবি, নাম, ঠিকানা দিয়ে হোর্ডিং টাঙিয়েছিল যোগীর প্রশাসন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস অফিসার এস আর দারাপুরি, সমাজকর্মী মহম্মদ শোয়েব, কবি দীপক কবীর, কংগ্রেসের নেত্রী তথা সমাজকর্মী সদফ জাফর প্রমুখ। সদফ আজ বলেন, ‘‘আদালত দৃষ্টান্ত স্থাপন করল। সংবিধানে আস্থা আরও বেড়ে গেল।’’ কবীরের কথায়, ‘‘এই ডিজিটাল যুগে আমাদের যা ক্ষতি হওয়ার হয়েছে। এই রায় আমাদের নৈতিক জয়।’’ রায়কে স্বাগত জানিয়েছে এসপি এবং বিএসপি।

প্রধান বিচারপতি মাথুর আজ সরকার পক্ষের আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, ‘‘গোপনীয়তার অধিকার রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং সুপ্রিম কোর্ট স্বীকৃত মৌলিক অধিকার। এই সব ছবি টাঙিয়ে নাগরিকদের গোপনীয়তার অধিকার, স্বাধীনতা নষ্ট করেছেন। হোর্ডিংয়ে যাঁদের ছবি দেওয়া হয়েছে, তাঁদের ব্যক্তিগত ক্ষতি ছাড়াও সাংবিধানিক মূল্যবোধে আঘাত এবং এ বিষয়ে প্রশাসনের নির্লজ্জ কার্যকলাপ এ ক্ষেত্রে বেশি উদ্বেগের। সরকারের দায়িত্ব, জনগণকে সম্মান এবং সৌজন্য দেখানো, সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষা করা। এই অগন্ত্রতান্ত্রিক কাজ সাংবিধানিক মূল্যবোধে আঘাত করেছে।’’

আরও পড়ুন: মোদীকে তিক্ত-সফর থেকে বাঁচাল করোনা

সরকারের তরফে যুক্তি দেওয়ার চেষ্টা হয়, যখন এক জন সহায়সম্বলহীন মানুষ আদালতে যেতে পারেন না, তখন আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা করতে পারে। এ ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তিরা নিজেরাই কোর্টে যেতে পারেন। তাই আদালতের স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা করার যুক্তি কী? যা শুনে ক্ষুব্ধ বিচারপতিদের প্রতিক্রিয়া, ‘‘ন্যায় বিচারের জন্যই আদালত। চোখের সামনে কারও সঙ্গে অন্যায় বা অবিচার হলে কোনও আদালতই চোখ বন্ধ করে বসে থাকতে পারে না। যেখানে সংবিধান লঙ্ঘিত হচ্ছে, আইন ভঙ্গ করা হচ্ছে, সেখানে কবে আদালতে মামলা হবে, তার জন্য অপেক্ষা করা যায় না।’’

এই হোর্ডিং ঘিরে হাইকোর্ট যে ক্ষুব্ধ, তা বোঝা গিয়েছিল গত কালই। ছুটির দিনেও স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করে শুনানি হয় আদালতে। প্রধান বিচারপতি গোবিন্দ মাথুর তখনই বলেছিলেন, ওই ঘটনায় ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হয়েছে।

সূত্রে খবর, যোগী আদিত্যনাথের নির্দেশেই ওই সব হোর্ডিং পুলিশ-প্রশাসনের পক্ষ থেকে টাঙানো হয়েছিল। সিএএ আন্দোলনের সময়ে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুরের জেরে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট হয়েছিল। হোর্ডিংয়ে উল্লিখিতদের কাছ থেকে সেই ক্ষতিপূরণ আদায় করা হবে বলে স্থির করেছিল প্রশাসন। আদালত অবশ্য আজ স্পষ্ট বলেছে, ক্ষতিপূরণ কত তাড়াতাড়ি আদায় করা যাবে, তা নিয়ে তারা চিন্তিত নয়, তারা উদ্বিগ্ন নাগরিকদের পরিচয় যে ভাবে ফাঁস করা হয়েছে, তা দেখে।

অন্য বিষয়গুলি:

Allahabad High Court Yogi Adityanath Uttar Pradesh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy