Advertisement
২৭ নভেম্বর ২০২৪

সাদাকালো ছবিরই মূর্তি গড়ছে বরদা ভবন

১৯৭৬ সালে বরদা ভবনে এক বার দুর্গাপূজা হয়েছিল। ৪১ বছর পর এ বার আবার। ফলে বাড়ির মানুষের আনন্দ আর ধরে না। বেঙ্গালুরু, পুনে, চেন্নাই থেকে পরিবারের সদস্যরা আসতে শুরু করেছেন। ‘ফ্যামিলি রি-ইউনিয়নে’ আনন্দিত প্রবীণতম গৌরাঙ্গচন্দ্র পাল থেকে শুরু করে সদ্য মাধ্যমিক পাশ স্বরাজ পাল— সবাই।

উত্তম সাহা
শিলচর শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:১১
Share: Save:

১৯৭৬ সালে বরদা ভবনে এক বার দুর্গাপূজা হয়েছিল। ৪১ বছর পর এ বার আবার। ফলে বাড়ির মানুষের আনন্দ আর ধরে না। বেঙ্গালুরু, পুনে, চেন্নাই থেকে পরিবারের সদস্যরা আসতে শুরু করেছেন। ‘ফ্যামিলি রি-ইউনিয়নে’ আনন্দিত প্রবীণতম গৌরাঙ্গচন্দ্র পাল থেকে শুরু করে সদ্য মাধ্যমিক পাশ স্বরাজ পাল— সবাই।

কম খুশি নন তাঁদের পুজোর প্রতিমাশিল্পী গোপাল পাল, গোপী পালও। তাঁদের খুশির সঙ্গেও জড়িয়ে রয়েছে ৪১ বছর আগের সেই পুজো। তখন মূর্তি গড়েছিলেন গোপাল-গোপীর বাবা গৌরাঙ্গ পাল। এ অবশ্য নতুন ব্যাপার নয়। অন্যান্য পেশার মতো প্রতিমা নির্মাণেও বাবার অবর্তমানে ছেলেরা বাড়ি বা ক্লাবের মূর্তি গড়েন। গোপাল-গোপী এ বছর ২৩টি দুর্গা প্রতিমা তৈরি করছেন। তার মধ্যে কয়েকটি পুজোর প্রতিমাশিল্পী ছিলেন গোবিন্দবাবু। তাঁর মৃত্যুর পর এখন সেই কাজ দুই ভাই সামলান।

তা হলে আর বরদা ভবনে মূর্তি তৈরির দায়িত্ব পাওয়ায় এত খুশি কেন? গোপী পাল জানান, এ বারের পুজোয় ১৯৭৬ সালের আদলেই মূর্তি তৈরি করছেন তাঁরা। বরদা ভবনে পুজোর কথা উঠতেই ৭২ বছর বয়সী গৌরাঙ্গচন্দ্র পাল জানিয়ে দিয়েছিলেন, পুরনো মূর্তির ছবি খুঁজে বের করতে হবে। তা-ই হল। চার দশক পরও সাদা-কালো ছবিতে প্রতিমার সৌন্দর্য ঠিক ধরা পড়ে। সেই ছবি দেখিয়ে তিনিই গোপাল-গোপীকে দায়িত্ব দেন, বাবার তৈরি ঠিক এই মূর্তিটিই তাঁদের তৈরি করতে হবে।

একেবারে একই মূর্তিটিই কেন? গৌরাঙ্গবাবু জানান, গোপাল-গোপীর বাবা (তিনিও গৌরাঙ্গ পাল) এমন সুন্দর শাস্ত্রীয় মূর্তি বানিয়েছিলেন সে-বার, সবাই তাঁর সৃষ্টির প্রশংসায় উচ্ছসিত ছিলেন। তখন দশমীর বিকেলে সমস্ত মূর্তি নিয়ে আদালত প্রাঙ্গণে রাখা হতো। ঘণ্টা দু’য়েক চলত আরতি। সাধারণ মানুষ ঘুরে ঘুরে মূর্তি দেখতেন, আরতি উপভোগ করতেন। পরে হতো বিসর্জন। সেই বছর আদালত প্রাঙ্গণে তাঁদের মূর্তিই ছিল সেরা। গোপাল-গোপীর কথায়, ‘‘৪১ বছর পরও বাবার হাতের তৈরি এক মূর্তি নিয়ে এত চর্চা হচ্ছে, এ আমাদের কাছে বড় গর্বের। সেইসঙ্গে বাবার ওই মূর্তিটির অনুকরণে আরেকটি মূর্তি তৈরির দায়িত্ব পাওয়াও কম কথা নয়।’’ এ বার অবশ্য গৃহকর্তা বা প্রতিমা শিল্পী সেরার লড়াইয়ে নেই। তবু তাঁরা আশাবাদী, এই বছরও বরদা ভবনের প্রতিমা নজর কাড়বে।

বাড়ির পুজোর কথায় গৌরাঙ্গবাবু আরও শোনান, ৪১ বছর আগেই তাঁদের বংশে প্রথম দুর্গাপূজা হয়েছিল। সেটা ছিল মানতের জন্য। এ বার হচ্ছে আনন্দ প্রকাশে। গৌরাঙ্গবাবুর নাতি স্বরাজ কথায় কথায় প্রস্তাবটা দিয়েছিল। সেই শুরু। দুয়েক প্রস্ত সভা করে সব চূড়ান্ত হয়। পুজোর তিন দিন সাংস্কৃতিক কর্মসূচিরও পরিকল্পনা হয়েছে। দাদুর পাশে দাঁড়িয়ে স্বরাজ জানায়, সপ্তমীতে হবে ধুনুচি নৃত্য, অষ্টমীতে সব ধরনের নাচগান, আর নবমীতে হবে ডান্ডিয়া নৃত্য।

অন্য বিষয়গুলি:

Durga puja
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy