ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে বসার পর থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে দেশ থেকে অবৈধবাসী বিতাড়ন। গত ৫ ফেব্রুয়ারি অবৈধবাসীদের নিয়ে আমেরিকার প্রথম বিমানটি ভারতে এসেছিল। বিমানে থাকা সকলেরই হাতে ছিল হাতকড়া, পায়ে শিকলের বেড়! সে নিয়ে চর্চাও হয়েছিল বিস্তর। সম্প্রতি আমেরিকা সফরে গিয়ে সে দেশের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই আবহেই এ বার জানা গেল, অবৈধবাসী বিতাড়নের দ্বিতীয় দফা থেকে ভিন্ন পদ্ধতি নিয়েছে আমেরিকা। দ্বিতীয় বিমানটিতে দেশে ফেরা অবৈধবাসী ভারতীয়দের মধ্যে মহিলা ও শিশুদের হাতকড়া পরানো হয়নি।
অবৈধবাসীদের নিয়ে আমেরিকা থেকে আসা প্রথম বিমানটি অমৃতসরে নেমেছিল ৫ ফেব্রুয়ারি। অভিযোগ, বিমানের মধ্যে হাতকড়া পরিয়ে রাখা হয়েছিল অবৈধবাসী ১০৪ জনকে। তাঁদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হয় বলেও অভিযোগ তুলেছিলেন আমেরিকা-ফেরত অনেকে। এর পর শনিবার রাতে ১১৯ জন অবৈধবাসী ভারতীয়কে নিয়ে অমৃতসরে অবতরণ করে আমেরিকার দ্বিতীয় বিমান। তবে দ্বিতীয় দফায় ১১৯ জনকে সে ভাবে ফেরানো হয়নি বলে দাবি। সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, দ্বিতীয় বারের অবৈধবাসীদের মধ্যে রেহাই দেওয়া হয়েছে মহিলা ও শিশুদের। যদিও অভিযোগ, পুরুষদের জন্য কড়াকড়িতে একচুলও শিথিলতা ছিল না।
আরও পড়ুন:
সরকারি হিসাব বলছে, দ্বিতীয় দফার ১১৯ অবৈধবাসীর মধ্যে ৬৫ জনই পঞ্জাবের বাসিন্দা। হরিয়ানা থেকে রয়েছেন ৩৩ জন। এ ছাড়া, গুজরাতের আট জন, উত্তরপ্রদেশের দু’জন, গোয়ার দু’জন, মহারাষ্ট্রের দু’জন, রাজস্থানের দু’জন, হিমাচল প্রদেশের এক জন এবং জম্মু ও কাশ্মীরের এক জন রয়েছেন। এর পরদিনই, অর্থাৎ রবিবার রাতে আমেরিকা থেকে বিতাড়িত অবৈধ অভিবাসীদের নিয়ে তৃতীয় বিমানটিও এসে পৌঁছয় ভারতে। তাতে ছিলেন ১১২ জন। রবিবার রাত ১০টা নাগাদ অবৈধবাসীদের নিয়ে পঞ্জাবের অমৃতসরে অবতরণ করে মার্কিন বায়ুসেনার সি-১৭ গ্লোবমাস্টার বিমান। আগের দুই দফায় ফেরত পাঠানো অবৈধবাসীদের মধ্যে বেশির ভাগই পঞ্জাবের বাসিন্দা। কিন্তু সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, এ বারের ১১২ জনের মধ্যে হরিয়ানার বাসিন্দা সবচেয়ে বেশি রয়েছেন। হরিয়ানার ৪৪ জন, গুজরাতের ৩৩ জন এবং পঞ্জাবের ৩১ জন রয়েছেন ওই তালিকায়।
উল্লেখ্য, হাতকড়া পরিয়ে, শিকলে বেঁধে ১০৪ জন অবৈধবাসী ভারতীয়কে ফেরানোর পরেই সংসদের বাজেট অধিবেশনে বিরোধীদের প্রশ্নের মুখে পড়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। জবাবি ভাষণে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছিলেন, “বিতাড়িত অবৈধবাসীদের সঙ্গে যাতে কোনও দুর্ব্যবহার না করা হয়, তা নিশ্চিত করতে ভারত সরকার আমেরিকার সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিল।’’ যদিও ওই বিমানে দেশে ফেরা কয়েক জনকে উদ্ধৃত করে পিটিআই জানায়, পুরো বিমানযাত্রাতেই তাঁদের হাত-পা বাঁধা ছিল। সেই আবহেই এ বার প্রকাশ্যে এল নতুন তথ্য।