প্রতীকী ছবি।
বেড নেই বলে সরকারি হাসপাতাল ‘মুখ ফিরিয়ে’ নিয়েছিল। আর তার জেরেই এক মহিলাকে প্রসব যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে এক প্রকার বাধ্য হয়েই গাছের নীচে জন্ম দিতে হল এক প্রসূতিকে। শুধু তাই নয়, সারা রাতে ধরে সদ্যোজাতকে নিয়ে গাছতলায় পড়ে ছিলেন তিনি। হাসপাতালের এমন ‘অমানবিক’ ভূমিকায় ছত্তীসগঢ় তোলপাড়।
আরও খবর: বিজেপির সঙ্গে জোট বাঁধতে পারে এডিএমকের বিদ্রোহী গোষ্ঠী, জল্পনা তুঙ্গে
মুসকান খান। বিলাসপুরের সিরিগিট্টির বাসিন্দা। মাস দুয়েক আগেই স্বামীকে হারিয়েছেন। তখন তিনি অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। গত বুধবার শারীরিক পরীক্ষা করাতে এক প্রতিবেশীকে নিয়ে এলাকারই এক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়েছিলেন তিনি। মুসকানের সোনোগ্রাফির কোনও রিপোর্ট না থাকায় ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে তাঁকে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলা হয়। কথামতো, সময় নষ্ট না করেই ওই প্রতিবেশীকে সঙ্গে নিয়ে সেখান থেকে জেলা হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা দেন মুসকান। হাসপাতালে পৌঁছে এক ভয়ানক অভিজ্ঞতার মুখে পড়তে হয় তাঁকে। অভিযোগ, ভর্তি করে নেওয়া তো দূরের কথা, হাসপাতালে বেড নেই বলে সেখান থেকে মুসকানকে চলে যেতে বলা হয়। উপায়ন্তর না দেখে, ফের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন মুসকান। তখন অন্ধকার নেমে এসেছে। কিন্তু বেশি দূর পৌঁছতে পারেননি তিনি। হাসপাতাল থেকে কয়েকশো মিটার দূরেই প্রসব বেদনা ওঠে। যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে একটি গাছের নীচে আশ্রয় নেন। সেই গাছের নীচেই সন্তান প্রসব করেন। শুধু তাই নয়, সারা রাত ওই অবস্থায় সেখানে পড়ে ছিলেন। পর দিন সকালে তাঁকে ওই অবস্থায় দেখে শিউরে ওঠেন পথচলতি মানুষ। সঙ্গে সঙ্গে গাড়ির ব্যবস্থা করে মুসকানকে জেলা হাসপাতালেই পাঠানো হয়।
প্রশ্ন উঠেছে, এতটা অমানবিক কী করে হতে পারলেন কর্তব্যরত চিকিত্সক ও নার্সেরা? কেনই বা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে নজরদারি চালাননি? মুসকানের এই অবস্থার জন্য ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁর পড়শিরা। ঘটনাটি নিয়ে যখন শোরগোল পড়ে যায়, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সীমা সিংহ নামে এক নার্সকে সাসপেন্ড করেন। সেই সঙ্গে প্রসূতি বিভাগের প্রধান রমা ঘোষকে সরিয়ে দেওয়া হয়। বিলাসপুরের ডিভিশনাল কমিশনার নীহারিকা বারিক জানান, বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনাটি চদন্চের জন্য অতিরিক্ত জেলাশাসকের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, মুসকান ও তাঁর সন্তান সুস্থ আছেন। হাসাপাতালের ‘অমানবিক মুখ’ আগেও দেখা গিয়েছে। টাকা না থাকায় অ্যান্বুল্যান্স দিতে চায়নি সরকারি হাসপাতাল। শেষ পর্যন্ত ওড়িশার হতদরিদ্র দানা মাঝিকে স্ত্রীর দেহ কাঁধে করে ১২ কিলোমিটার পথ হেঁটে আসতে হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy