টিকাকরণের লক্ষ্যপূরণ হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা। —ফাইল চিত্র।
বিশ্ব জুড়ে বেড়েই চলেছে করোনার ডেল্টা প্রজাতির দৌরাত্ম্য। ভারতেও করোনার তৃতীয় ঢেউ এবং ডেল্টা প্রজাতি নিয়ে লাগাতার সচেতন করে চলেছেন চিকিৎসকরা। সংক্রমণ ঠেকাতে সার্বিক টিকাকরণে জোর দেওয়ার কথা উঠে আসছে বার বার। কোভিশিল্ড, কোভ্যাক্সিন, স্পুটনিক-ভি, মডার্না এবং জ্যানসেন— এই পাঁচটি টিকা নিয়ে সেই কাজে তৎপর হয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা থেকে ভারত এখনও অনেকটাই পিছিয়ে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
রবিবার পর্যন্ত গোটা দেশে মোট টিকাকরণ হয়েছে ৫০ কোটি ৭৭ লক্ষ ৭১ হাজার ১৭২। কেন্দ্রীয় সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ৮ অগস্ট পর্যন্ত দেশে ৩৯ কোটি ৫৯ লক্ষ ৯৭ হাজার ১৯০ প্রথম টিকা দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় টিকা দেওয়া হয়েছে ১১ কোটি ১৭ লক্ষ ৭৩ হাজার ৯৮২। এর মধ্যে ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সিদের টিকাকরণে ২২ কোটি ৭ লক্ষ ৪৩ হাজার ৭৫ টিকা ব্যবহৃত হয়েছে। ৪৫ বছরের বেশি বয়সিদেরদের টিকাকরণে ব্যবহৃত হয়েছে ১৬ কোটি ৫৪ লক্ষ ৩০ হাজার ৯১০ টিকা। ৬০ ঊর্ধ্বদের টিকা দেওয়া হয়েছে ১১ কোটি ৭৯ লক্ষ ৯৯ হাজার ২৩৩।
দেশের সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে এখনও পর্যন্ত ৫২ কোটি ৩৭ লক্ষের বেশি টিকা সরবরাহ করেছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। খুব শীঘ্র আরও ৮ লক্ষ ৯৯ হাজার ২৬০ টিকা পাঠানো হবে বলে রবিবারই জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। কেন্দ্রের দাবি, এ ছাড়াও রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে এখনও ২ কোটি ৪২ টিকা অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
টিকাকরণের গতি বাড়াতে সম্প্রতিই জনসন অ্যান্ড জনসনের তৈরি জ্যানসেন টিকাকে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের জন্য ছাড়পত্র দিয়েছে কেন্দ্র। তাদের একটি টিকাই কোভিড প্রতিরোধে সক্ষম বলে দাবি আমেরিকার সংস্থাটির। সেপ্টেম্বর থেকে মাসে ৩ থেকে ৫ কোটি জ্যানসেন টিকা হাতে পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী কেন্দ্র। এ ছাড়াও, আমেরিকার আর একটি টিকা মডার্নাও কেন্দ্রের ছাড়পত্র পেয়েছে।
এখনও পর্যন্ত দেশে টিকাকরণে মূলত কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাক্সিনই সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়েছে। খানিকটা দেরি করেই শুরু হয় স্পুটনিক-ভি টিকার ব্যবহার। কেন্দ্রের হিসেব অনুযায়ী, টিকাকরণে এখনও পর্যন্ত ৪৪ কোটি ২০ লক্ষ ৬৮ হাজার কোভিশিল্ড ব্যবহার করা হয়েছে। কোভ্যাক্সিন ব্যবহার করা হয়েছে ৬ কোটি ১৫ লক্ষ ২৮ হাজার ৬৪৭। ৫ লক্ষ ৭৬ হাজার ৬৪৮ স্পুটনিক-ভি ব্যবহার করা হয়েছে।
এর আগে, সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্র জানিয়েছিল, অগস্টেই কোভিশিল্ড, কোভ্যাক্সিন এবং স্পুটনিক-ভি মিলিয়ে ২০ কোটি টিকা হাতে পাবে তারা। সেপ্টেম্বরে আরও ২৫ কোটি টিকা মিলবে। অক্টোবরের মধ্যে বায়োলজিক্যাল-ই, জাইডাস ক্যাডিলা, নোভাভ্যাক্স এবং জেনোভা টিকাও হাতে এসে পৌঁছবে বলে আশাবাদী কেন্দ্র। ১৮-র ঊর্ধ্বে সার্বিক টিকাকরণ সেরে ফেলতে এ বছর ডিসেম্বর পর্যন্ত সব মিলিয়ে ১০০ কোটি ৬০ লক্ষ টিকার বরাত দেওয়া হয়ে গিয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছিল কেন্দ্রে তরফে।
কিন্তু যে গতিতে টিকাকরণ এগোচ্ছে, তাতে আগামী পাঁচ মাসে লক্ষ্যপূরণ আদৌ সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান অনেকেই। আবেদন জমা দেওয়ার এক দিনের মধ্যে জনসন ছাড়পত্র পেয়ে যাওয়ায়, অনেকে এমন আশঙ্কাও করছেন যে, টিকাকরণের গতি বাড়াতে গিয়ে টিকার কার্যকারিতা পরীক্ষায় ঢিলেমি দেওয়া হতে পারে। সে ক্ষেত্রে মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। যদিও সেন্ট্রাল ড্রাগস কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন (সিডিএসসিও) জানিয়েছে, কম সময়ে টিকার কার্যকারিতা পরীক্ষা করে দেখতে বিশেষ প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy